দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৪৫ টাকা নির্ধারণের চার ঘণ্টা পর বেঁকে বসেছেন চা শ্রমিকরা। সমঝোতার মাধ্যমে আন্দোলন প্রত্যাহারের যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল তা না মানার ঘোষণা দিয়েছে চা শ্রমিকদের একাংশ। কমপক্ষে ৩০০ টাকা দৈনিক মজুরি না দিলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
ধর্মঘট শুরুর অষ্টম দিন শনিবার (২০ আগস্ট) বিকেলে শ্রম অধিদপ্তরের শ্রীমঙ্গল কার্যালয়ে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে বৈঠকে বসেন চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা। এ সময় বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে ‘দর কষাকষি’র পর একপর্যায়ে সরকারের পক্ষ থেকে ১৪৫ টাকা মজুরির প্রস্তাব দেওয়া হলেও তা মেনে নেন চা শ্রমিক নেতারা। এরপর রোববার (২১ আগস্ট) থেকে পুরোদমে কাজে ফিরবেন বলেও ঘোষণা দেন তারা।
বৈঠক শেষে সরকারের প্রতিনিধি মৌলভীবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চা শ্রমিকদের আশ্বস্ত করেছেন যে, আসন্ন ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে তিনি শ্রমিক নেতাদের নিয়ে বসবেন, তাদের কথা শুনবেন।
প্রধানমন্ত্রীর এমন আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে শ্রমিকরা কাজে যোগ দেয়ার ঘোষণা দেন। চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেণ পাল জানান, প্রধানমন্ত্রীর প্রতি সম্মান রেখে তারা চলমান আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
এদিকে এ ঘোষণার কিছুক্ষণ পর সমঝোতা না মানার ঘোষণা দেন চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেণ পাল। তিনি জানান, অন্য চা শ্রমিকরা এ সিদ্ধান্ত মানতে রাজি নন। তারা ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে অনড়।
অন্যদিকে বৈঠকের পরপরই শ্রীমঙ্গলে শ্রম দপ্তরের সামনেই বিক্ষোভ করেন স্থানীয় চা শ্রমিকরা। বৈঠকের পর সিলেট মহানগরীর মালনিছড়া, হিলুয়াছড়া ও তারাপুর চা-বাগানের শ্রমিকরাও এ সিদ্ধান্তকে বয়কট করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
কয়েকশ চা শ্রমিক বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মালনিছড়া বাগানের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। পরে তারা মিছিল করে আম্বরখানা হয়ে চৌহাট্টা পয়েন্টে গিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। সেখানে কিছু সময় অবস্থান করে তারা ফিরে যান। তবে তারা ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
এর আগে শনিবার দুপুরে শ্রীমঙ্গলে বিভাগীয় শ্রম দপ্তরে চা শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে সরকারের বৈঠক হয়।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ, শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী ও মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া।
অপরদিকে শ্রমিক নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেণ পাল ও সিলেটের বিভিন্ন ভ্যালির শীর্ষ নেতারা।