নড়াইলে অপহৃত স্কুলছাত্রীকে ফরিদপুর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এদিকে জামালপুর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে এক অপহৃত নারীকে। বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) রাতে পৃথক অভিযানে তাদের উদ্ধার করা হয়।
নড়াইল
নড়াগাতি উপজেলা থেকে অপহৃত স্কুলছাত্রী সুমাইয়া আক্তারকে (১৪) ফরিদপুর থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এসময় অপহরণ মামলার তিনজন আসামিকে গ্রেপ্তার করে হয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হলেন সাজ্জাদ হোসেন (২০),তার বাবা আক্কাস মোল্যা (৪৫) ও তার মা মিলি আক্তার (৩৫)।
সুমাইয়া বড়দিয়া ফজিলাতুননেছা বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী ও পানিপাড়া গ্রামের বাবুল শেখের মেয়ে।
পুলিশ জানায়, ফরিদপুর সদর উপজেলার রঘুনন্দপুর গ্রামের আক্কাস মোল্যার ছেলে সাজ্জাদ হোসেনের নেতৃত্বে একদল আপহরণকারী পানিপাড়া গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে সুমাইয়াকে অপহরণ করে। এই অভিযোগে গত ২৪ আগস্ট সুমাইয়ার মা আঞ্জুয়ারা বেগম বাদী হয়ে সাজ্জাদ হোসেনসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ করে অপহরণ মামলা দায়ের করেন।
বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) রাত আড়াইটার দিকে সাজ্জাদ হোসেনের বাড়ি রঘুনন্দপুর গ্রাম থেকে স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করে পুলিশ।
আসামিদের গ্রেপ্তারের সত্যতা নিশ্চিত করে নড়াগাতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রোকসানা খাতুন বলেন, পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অপহৃত স্কুলছাত্রীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
জামালপুর
ইসলামপুর উপজেলার ডিগ্রিরচর এলাকা থেকে অপহৃত এক নারীকে ৫ মাস পর উদ্ধার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) রাতে নারায়ণগঞ্জ থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।
বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) বেলা একটার দিকে জামালপুর পুলিশ সুপার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, অপহৃত ওই নারীর বাবার সঙ্গে প্রতিবেশী এক ব্যক্তির জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। বিরোধকে কেন্দ্র করে চলতি বছরের ১০ এপ্রিল ওই নারীর বাবার বাড়িতে হামলা হয়।
একপর্যায়ে হামলাকারীরা ওই নারীর মুখ ওড়না দিয়ে বেঁধে তুলে নিয়ে যায়। এরপর ওই নারীকে একটি চক্রের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়। চক্রটি নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে তাকে আটকে রাখে। ওই নারীকে কয়েকটি চক্রের কাছে বিক্রি করা হয়েছিল। তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতনও করা হয়।
সালাহ উদ্দীন আরও বলেন, মেয়ের সন্ধান না পেয়ে ওই নারীর বাবা ২৮ জুন আদালতে একটি মামলা করেন। আদালত প্রথমে মামলা তদন্তের নির্দেশ দেন জামালপুরের গোয়েন্দা পুলিশ শাখাকে (ডিবি)। তারা ওই নারীকে উদ্ধার করতে পারেনি। ফলে আদালত মামলাটি পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করেন। পিবিআইয়ের পরিদর্শক মো. জয়নাল আবেদীনকে মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। একপর্যায়ে ওই নারীর অবস্থান চিহ্নিত করা হয়। কিন্তু চক্রটি ঘন ঘন স্থান পরিবর্তন করছিল। ফলে ওই নারীকে উদ্ধার করা কঠিন হয়ে যাচ্ছিল।
বুধবার রাতে পুলিশ পরিদর্শক মো. জয়নাল আবেদীনের নেতৃত্বে একটি দল অভিযান চালিয়ে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে ওই নারীকে উদ্ধার করে। কিন্তু পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে চক্রের সদস্যরা নারীকে রেখে পালিয়ে যায়।
সালাহ উদ্দীন বলেন, দীর্ঘদিন ওই নারীকে আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়। ফলে ওই নারী এক রকম অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসাও দেওয়া হয়েছে। চক্রের সব সদস্যের পরিচয় পাওয়া গেছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সবাইকে দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে। ওই নারীকে ডাক্তারি পরীক্ষার পর জবানবন্দির জন্য আদালতে হাজির করা হবে।