সিলেটের ওসমানীনগর থেকে অপহরণের ৩ মাস পর অপহৃতা কিশোরীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মাওলানা আব্দুল মতিন (৪৫) নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আব্দুল মতিন সিলেটের মহানগর পুলিশের জালালাবাদ থানার ইসলামপুর (মানসীনগর) এলাকার মৃত মাসুক মিয়ার ছেলে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ৫ সন্তানের জনক মাওলানা আব্দুল মতিন (৪৫) ওসমানীনগর উপজেলার উছমানপুর ইউনিয়নের পূর্ব মোমিনপুর গ্রামের মসজিদে ইমামতি করতেন। একই এলাকার এক অভিভাবক তার ১৩ বছরের মেয়েকে বাড়িতে গিয়ে আরবি পড়ানোর জন্য আব্দুল মতিনকে দায়িত্ব দেন। পড়ানোর সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আব্দুল মতিন ওই কিশোরীকে বিভিন্ন ধরনের কুপ্রস্তাব দিতে থাকেন। ঘটনাটি জানাজানি হলে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে তাকে (আব্দুল মতিনকে) মসজিদের ইমামের দায়িত্ব থেকে অপসারণ করা হয়।
পরে গত ৩ মে রাত পৌনে ৯টার দিকে ওই কিশোরী প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বসতঘরের বাইরে গেলে মাওলানা আব্দুল মতিনসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজন তাকে অপহরণ করে অটোরিকশায় তুলে নিয়ে যান। কিশোরীর মা ঘটনাটি দেখতে পেয়ে চিৎকার করলেও বাড়ির পুরুষরা মসজিদে তারাবির নামাজে থাকায় তাকে তাৎক্ষণিক উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে মেয়েটির বাবা পরদিন ওসমানীনগর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগের সত্যতা পেয়ে পুলিশ সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালায়। কিন্তু মাওলানা আব্দুল মতিন মোবাইল ব্যবহার না করায় তার অবস্থান নিশ্চিত হতে পারছিল না পুলিশ। পরে সোর্সের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রোববার (১৫ আগস্ট) বিকেলে পুলিশ সুনামগঞ্জ জেলার ছাতকের হাওর এলাকায় সাদা পোশাকে অভিযান পরিচালনা করে।
পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আব্দুল মতিন ওই কিশোরীসহ নৌকাযোগে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় পুলিশ ধাওয়া করে তাকে গ্রেপ্তার করে ও অপহৃতাকে উদ্ধার করে।
ওসমানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শ্যামল বণিক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অপহৃতা কিশোরীকে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়েছে। গ্রেপ্তার আব্দুল মতিনকে দুপুরে সিলেটের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।