• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬
কুয়েট শিক্ষকের মৃত্যু

৪৪ ছাত্র দোষী সাব্যস্ত, আজীবন বহিষ্কার ৪


খুলনা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জানুয়ারি ৫, ২০২২, ০৮:৫৭ পিএম
৪৪ ছাত্র দোষী সাব্যস্ত, আজীবন বহিষ্কার ৪

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজানসহ চারজন শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। বহিষ্কৃত অন্যরা হলেন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারি বিভাগের আবু হাসান আব্দুল কাইয়ুম, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারি বিভাগের মো. কামরুজ্জামান রাজ্জাক ও কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারি বিভাগের রিয়াজ খান নিলয়।

ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির মুলতবি সভার বুধবার (৫ জানুয়ারি) কুয়েট সভা কক্ষে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। 

সিদ্ধান্ত অনুসারে আরও ৪০ জনকে বিভিন্ন শাস্তি দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন মো. তাহমিদুল হক ইসরাক, মাহমুদুল হাসান, মো. সাদমান সাকিব, মাহিন মুনতাসির, এএসএম রাগিব আহসান মুন্না, মীর জমিউর রহমান, রুদ্রনীল সিংহ শুভ, আনিকুর রহমান, ফয়সাল আহমেদ রিফাত, ইমরান হোসেন আওয়াল, মো. খালিদ সাইফুল্লাহ শুভ্র, মো. ফাইয়াজ রহমান, নুর মোহাম্মদ, মো. নাইমুর রহমান অন্তু, মো. সাবির জোয়ারদার, মো. মাহবুবুর রহমান (রাফি), মো. আতিকুর রহমান, মো. সাদিকুল ইসলাম, নাজমুস সাকিব সিফাত, মো. গোলাম কিবরিয়া, ওসমান ফারুক, সাগর তরফদার, প্রাপ্ত কর্মকার, সাফাত হাসান, মানিক কুমার সরকার, মো. আমিনুল ইসলাম, মো. মুহিব্বীন হোসেন সরদার, মো. ইমতিয়াজ আহমেদ, সাফায়েত মাহবুব, মো. আনোয়ার হোসেন সাকিব, আহসানুল আবেদীন, কবির হোসেন, মো. শুভ মন্ডল, শাহরিয়ার আহমেদ মুশফিক, ফয়সাল কবির ফাহিম, শাফিন আহমেদ অনন্ত, মো. আদনান ইসলাম, সাকিব সরদার, সানজিদুল ইসলাম ও মো. সাদাফ হেলাল।

কুয়েট শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজানসহ ৪৪ জন শিক্ষার্থী শোকজের জবাব এবং ৪৪ পৃষ্ঠার তদন্ত কমিটির রিপোর্ট সভায় প্রদান করা হয়। কমিটির সভাপতি ও কুয়েট ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. সাজ্জাদ হোসেনের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

গত বছরের ৩০ নভেম্বর বিকেলে কুয়েটের ইইই বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেন মারা যান। তার মৃত্যুর পর সাধারণ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের পক্ষ থেকে অভিযোগ ওঠে এই মৃত্যুর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজানসহ তার অনুগত ছাত্ররা দায়ী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের লালনশাহ হলের ডিসেম্বর মাসের খাদ্য ব্যবস্থাপক (ডাইনিং ম্যানেজার) নির্বাচন নিয়ে ড. সেলিমকে চাপ দিয়ে আসছিলেন ফজলুল হক হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও কুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজান। এরই ধারাবাহিকতায় ঘটনার দিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাদমান নাহিয়ান সেজানের নেতৃত্বাধীন কয়েকজন শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসের রাস্তায় ড. সেলিমকে জেরা শুরু করেন। পরে তারা শিক্ষককে অনুসরণ করে তার ব্যক্তিগত কক্ষে (তড়িৎ প্রকৌশল ভবন) প্রবেশ করেন।

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, তারা আনুমানিক আধা ঘণ্টা শিক্ষকের রুমে অবস্থান করেন। পরে কক্ষ থেকে বেরিয়ে ড. সেলিম দুপুরের খাবার খেতে ক্যাম্পাস থেকে নিজ বাসায় যান। দুপুর আড়াইটার দিকে তার স্ত্রী লক্ষ্য করেন তিনি বাথরুম থেকে বের হচ্ছেন না। দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

অভিযোগ ওঠে, দাফতরিক কক্ষে কুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজানের নেতৃত্বে কতিপয় ছাত্রের জেরা, অপমান, অবরুদ্ধ করে রাখা ও মানসিক নির্যাতনে ড. সেলিমের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনা তদন্তে দুই দফায় কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

অপরদিকে, ড. সেলিমের মৃত্যুর ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের দাবিসহ পাঁচ দফা দাবিতে গত ২ ডিসেম্বর দুপুরে একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করে শিক্ষক সমিতি। প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে কুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধসহ দায়ী ছাত্রদের শাস্তির দাবি জানান শিক্ষকরা।

Link copied!