নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ভুলতার কর্ণগোপ এলাকায় হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ কারখানায় লাগা আগুন ১৬ ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট কাজ করছে। টানা ১৬ ঘণ্টা ধরে আগুন জ্বলতে থাকায় ছয়তলা ভবনটিতে ফাটল দেখা দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) বিকালে সাড়ে ৫টায় ওই কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। অগ্নিকাণ্ডের এ পর্যন্ত ৩ শ্রমিকের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। নিখোঁজ রয়েছেন ১৮ জন।
শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ভবনটির পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলায় আগুন জ্বলছে। কারখানাটির পঞ্চম তলার একপাশে সেমাই, সেমাই ভাজার তেল, পলিথিন; অপর পাশে কারখানার গুদাম বলে শ্রমিকেরা জানিয়েছেন। কারখানার ষষ্ঠ তলায় কার্টনের গুদাম বলে জানা গেছে।
কারখানার চতুর্থ তলায় ললিপপ, তরল চকলেট, তৃতীয় তলায় অরগানিক পানীয় (জুস, লাচ্ছি), দোতলায় টোস্ট বিস্কুট, বিভিন্ন ধরনের পানীয় এবং নিচতলায় বাক্স ও পলিথিন তৈরির কারখানা।
জানা গেছে, কারখানার নিচতলায় আগুনের সূত্রপাত ঘটে। এ সময় কারখানার ৬ তলা ভবনে আগুনের লেলিহান শিখা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। কালো ধোঁয়ায় ছেয়ে যায় চারপাশ। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৬টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালায়। অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের সংখ্যা অর্ধশতাধিকের বেশি বলে জানা গেছে। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও রূপগঞ্জের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে আগুন থেকে প্রাণ বাঁচাতে ভবনটি থেকে লাফিয়ে পড়েন শ্রমিক স্বপ্না রানী (৪৪) ও মিনা আক্তার (৩৪)। ঘটনাস্থলেই তাঁরা দুজন মারা যান। এরপর মোরসালিন (২৮) নামের একজন শ্রমিক প্রাণ বাঁচাতে ওই ভবনের তৃতীয় তলা থেকে লাফ দেন। মোরসালিনকে রাত ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক মো. আব্দুল আল আরেফিন বলেন, পানির দুষ্প্রাপ্যতাু এবং কারখানায় দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সময় লাগছে। তবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ১৮টি ইউনিট।