মাঠ জুড়ে যেন সবুজের হাতছানি। সারি সারি লিচু গাছ রাস্তার দু’পাশের। গাছের পাতার ফাঁকে দোয়েল-শালিক-চড়ুইসহ বিচিত্র সব পাখ-পাখালির কলতান। ফাল্গুনের শুরুতে সবুজ পাতার মাঝে সবুজ ডগায় নাক ফুলের মতো লিচুর মুকুল আসতে শুরু করেছে। এতে প্রকৃতি সেজেছে অপরূপ সাজে।
মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে মুগ্ধ হয়ে উঠছে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের বিভিন্ন এলাকা। বাগান চাষিরা গাছের পরিচর্যা করতে মেতে উঠেছেন। ভালো ফলনের আশায় বাগানসহ বসতবাড়িতে থাকা লিচু বাগানের গাছের পরিচর্যা শুরু হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে যেসব জায়গায় লিচু বাগান আছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো পানাম, গোয়ালদী, বৈদ্যেরবাজার, ভট্টপুর, গাবতলী, হাড়িয়া, অর্জুন্দী, দুলালপুর, গোবিন্দপুর, কৃষ্ণপুরা, বাগমুছা, হাতকোপা, দত্তপাড়া, আদমপুর, খাগুটিয়া, খাসনগর দীঘিরপাড়, চিলারবাগ, দৈলরবাগ, দরপত, টিপরদী, হরিষপুর, তাজপুর, সাদীপুর, ইছাপাড়া, বারদী, সেনপাড়া, বালুয়াদিঘীর পাড়। পাতি, কদমী আর বোম্বাই এই তিন প্রজাতির লিচুর ফলনই সোনারগাঁয়ের বাগানগুলোতে বেশি হয়ে থাকে। তবে এর মধ্যে পাতি লিচুর চাষই সবচেয়ে বেশি হয়। তা ছাড়া এ প্রজাতির লিচু সবচেয়ে আগে বাজারে আসে। এ ছাড়া কদমী চাষ করছে অনেকেই।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বাগানগুলোতে লিচুর মুকুল আসার আগে থেকে লিচু চাষিরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। মুকুল আসার পরে অনেকটাই ব্যস্ত পরিচর্যা করতে। বৈরী আবহাওয়া সৃষ্টি না হলে লিচুর ফলন ভালো হবে। মুকুল এসে যেন ঝরে না পড়ে। যে কারণে বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষকেরা।
সোনারগাঁ পৌরসভার দিঘীরপাড় এলাকার লিচু চাষি পিয়ার হোসেন জানান, বাগান কয়েক ধাপে বিক্রি হয়। গাছে মুকুল আসার আগেই এবং লিচু গুটি হওয়ার পরে বাগান বিক্রি হয়। লিচু পাকার আগেই বেশ কয়েকবার পরিবর্তন হয় বাগানের মালিকানা। তবে অনেক বাগান মালিক লাভের আশায় নিজেই শ্রম দেন। অনেক সময় খরার কারণে লিচুর আকার ছোট হয়ে যায়। আবার অনেক সময় ঝড়ে সব লণ্ডভণ্ড হয় লিচু বাগান। তখন ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হন লিচু চাষি ও ব্যবসায়ীরা।
সোনারগাঁ উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মনিরা আক্তার বলেন, “চলতি মৌসুমে উপজেলায় বসতবাড়িসহ বিভিন্ন স্থানে ১০ হেক্টর জমিতে লিচুর গাছ রয়েছে। আমরা লিচু চাষিসহ বসতবাড়িতে থাকা লিচুর উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে গাছ মালিকদের সেবা দিয়ে আসছি।”