গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে হাসনা খাতুন হেমা নামের এক শিশুর বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধারের রহস্য উৎঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় অভিযুক্ত মোরসালিন নামে মসজিদের এক মুয়াজ্জিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) সন্ধ্যায় পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম।
মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম জানান, শিশু হাসনা খাতুন হেমা গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার রাখালবুরুজ ইউনিয়নের সাতাইল বাতাইল গ্রামের একটি মসজিদে আরবি পড়তো। সেই মসজিদের আরবি শিক্ষক ও মুয়াজ্জিনের দায়িত্বে ছিলেন মোরসালিন। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি শিশু হেমাসহ কয়েকজন ছাত্রীকে সকাল আটটা পর্যন্ত আরবি পড়ান তিনি। আরবি পড়া শেষে শিশু হেমাসহ আরও দুইজন ছাত্রীকে বিস্কুট আনার জন্য ১০ টাকা দেন। বিস্কুট এনে খাওয়ার পর মোরসালিন মক্তব ছুটি দেন। ছুটির পর বাইসাইকেল নিয়ে জাফিরুল নামে আরেকজনের বাড়িতে আবারও আরবি পড়াতে যান মোরসালিন। সেখান থেকে ফিরে মসজিদ সামনে সাইকেল রাখার সময় শিশু হেমাকে দেখতে পেয়ে তাকে রুমে ডেকে নিয়ে যান। এরপর তিনি শিশুটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এ সময় শিশু হেমা বলে, ‘সব কিছু আমি নানিকে বলে দেব’। এরপর মোরসালিন হেমার গলা চেপে ধরে। শিশুটি নিস্তেজ হয়ে গেলে তাকে ধর্ষণ করে তার গায়ের ওড়না দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
পুলিশ সুপার আরও জানান, হত্যার পর তার রুমের বাইরে থাকা একটি সিমেন্টের খালি বস্তা এনে লাশটিকে বস্তা বন্দি করেন। পরে বস্তাটি দুই কিলোমিটার দূরে গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার বর্ধনকুঠি এলাকার বাঁশঝাড়ের ভিতর হেমার লাশ রেখে আসেন। পরদিন পুলিশ হেমার বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করে।
পুলিশ সুপার জানান, আসামি মোরসালিনের স্বীকারোক্তি ও তথ্য মোতাবেক হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বস্তা, লাশ বহনের জন্য ব্যবহৃত বাইসাইকেল এবং লাশ বহনের সময় আসামির বস্ত্রসহ গুরুত্বপূর্ণ বেশকিছু আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে আদালতে পুলিশি প্রতিবেদন দাখিল করার কথা জানান পুলিশ সুপার।
এর আগে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি আরবি পড়া শেষে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয় শিশু হাসনা খাতুন হেমা। এ ঘটনায় তার পরিবার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিসহ স্থানীয়ভাবে মাইকিং করে। পরদিন গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার বর্ধনকুঠি এলাকার বাঁশঝাড়ের ভেতর থেকে তার বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।