শিক্ষা কর্মকর্তাকে থাপ্পড় মারার ঘটনায় জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো. শাহনেওয়াজ শাহানশাহকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে তাকে বরখাস্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
সোমবার (২০ ডিসেম্বর) স্থানীয় সরকার বিভাগের পৌরসভা-২ শাখার উপ-সচিব ফারজানা মান্নান স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো. শাহনেওয়াজ শাহানশাহ গত ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানস্থলে সরকারি দায়িত্ব পালনকালে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. মেহের উল্লাহকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন এবং অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। এঘটনায় শাহনেওয়াজ শাহানশাহের বিরুদ্ধে দেওয়ানগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করা হয়। এরই মধ্যে মেয়রের বিরুদ্ধে আসা অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, শাহনেওয়াজ শাহানশাহের আচরণ শিষ্টাচার বহির্ভূত ও অসদাচরণ এবং ক্ষমতার অপব্যবহার ও অপশাসনের শামিল যা প্রশাসনিক দৃষ্টিকোন থেকে সমীচীন নয় এবং জনস্বার্থের পরিপন্থী বলে সরকার মনে করে। এ কারণে তাকে স্থানীয় সরকার আইন, ২০০৯-এর ধারা ৩১-এর উপ-ধারা (১) প্রদত্ত ক্ষমতাবলে নির্দেশক্রমে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো। এ আদেশ যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে জনস্বার্থে জারি করা হলো এবং অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে বলা হয়।
চড় মারার ঘটনায় দলীয় পদ হারান মেয়র। অসাংগঠনিক কার্যকলাপে লিপ্ত থেকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে রোববার (১৯ ডিসেম্বর) রাতে তাকে দলীয় সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করে জেলা আওয়ামী লীগ। শাহানশাহ উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ছিলেন।
দেওয়ানগঞ্জ সরকারি হাইস্কুল মাঠে উপজেলা প্রশাসন বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ওই অনুষ্ঠানের উপস্থাপকের দায়িত্ব পান ওই মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মেহের উল্লাহ।
উপস্থাপক শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্যে মাইকে প্রশাসন ও বিভিন্ন সংগঠনের নাম ঘোষণা করছিল। পৌরসভার নাম ৫ নম্বরে ঘোষণা করার কারণে মেয়র প্রকাশ্যে ওই মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং তাকে প্রকাশ্যে থাপ্পড় মারেন। প্রকাশ্যে এই ধরণের ঘটনা ঘটলেও প্রতিবাদ করার মতো সাহস কেউ পাননি।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মেহের উল্লাহ বলেন, জেলা প্রশাসক মোর্শেদা জামান মহোদয়ের পরামর্শে অনুযায়ী আমি থানায় মামলা দিয়েছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামির গ্রেপ্তার ও তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।