কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের দুই কর্মচারীর অবৈধ সম্পর্কের (পরকীয়া) ঘটনা হাতেনাতে ধরলেন ভুক্তভোগী স্ত্রী শামছি বেগম।
শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে শহরের কমলাপুর এলাকার একটি আবাসিক বিল্ডিংয়ে চারতলায় ফ্ল্যাট বাসায় অবৈধ মেলামেশারত অবস্থায় স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাদের হাতেনাতে আটক করা হয়।
আটককৃত পুরুষ ভৈরব উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের অফিস সহায়ক মোকসেদ আলী ও একই অফিসে মাস্টার রোলে কর্মরত আয়া কল্পনা বেগম।
এছাড়া অভিযোগ রয়েছে, আয়া কল্পনা বেগম শিক্ষা অফিসে মাস্টার রোলে নয় বরং অন্য একজন এমএলএসএর বদলি চাকুরি করেন। ওই এমএলএস নিজের অন্য একটি ব্যবসায় সময় দেন। বদলি চাকুরির বিনিময়ে ওই নারীকে ৪ হাজার টাকা দেয়া হয় এমএলএসএস এর পক্ষ থেকে।
জানা যায়, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের কয়েকজন কর্মচারী মিলে ওই ফ্ল্যাট বাসাটি ব্যাচেলর হিসেবে ভাড়া নেন। ঘটনার সময় অভিযুক্ত দুই নারী-পুরুষ ছাড়া কেউই বাসায় ছিলেন না। একই অফিসের লোক হওয়ায় বাসার চাবি নিয়ে ওই রুমে যান পরকীয়ায় আসক্ত অভিযুক্ত নারী ও পুরুষ দুই কর্মচারী। এ ঘটনার খবর পেয়ে ভুক্তভোগীর স্ত্রী শামছি বেগম এসে রুমের বাইরে তালা দেয়। বিষয়টি এলাকার স্থানীয় মানুষজনের মাঝে জানাজানি হলে বাসার মালিকের সহযোগিতায় তালা খুলে তাদেরকে নিয়ে আসা হয় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে। এ খবর পেয়ে বিকেলে নিজ অফিসে ছুটে আসেন মাধ্যমিক একাডেমিক সুপার স্বপ্না বেগম।
এ সময় শিক্ষা অফিসের কর্মচারী মোকসেদ আলীর স্ত্রীর অভিযোগ শুনেন এবং তাকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন একাডেমিক সুপার।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত মোকসেদ আলী বলেন, “তার স্ত্রীর যন্ত্রণায় বাধ্য হয়ে ওই নারী সঙ্গে প্রেমে জড়িয়ে পড়ে। তারা বিয়ে করেছেন, তবে কাবিন রেজিষ্ট্রেশন হয়নি বলে স্বীকার করেন।”
এদিকে অভিযুক্ত কল্পনা বেগম বলেন, “আগে তার প্রেম ছিল না। শামছি বেগম আগে থেকে সন্দেহ করলে তারা পরবর্তীতে প্রেমে জড়িয়ে পড়েন।”
এছাড়া তিন মাস আগে তাদের বিয়ে হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ভুক্তভোগী স্ত্রী শামছি বেগম বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে একই অফিসে তারা পরকীয়া করে যাচ্ছে। এ নিয়ে আগেও শালিস-বৈঠক হয়েছে উপজেলার তৎকালীন ইউএনও ও শিক্ষা অফিসারদের সামনে। কেউ তখন তাকে পাত্তা দেয়নি। আজ স্বামী ও কল্পনা বেগমকে হাতে নাতে একটি ফ্ল্যাট বাসা থেকে আটক করেন স্থানীয়দের সহযোগীতায়। উপযুক্ত ৩ মেয়ে ও নাবালক ২ ছেলেকে নিয়ে তিনি আর্থিক ও মানসিক কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। তাকে একবছর ধরে কোন ভরণপোষণ দিচ্ছে না তার স্বামী মুকসুদ আলী। তার সন্তানরাও বাবার বিরুদ্ধে একই অভিযোগ করেন।”
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী স্ত্রী শামছি বেগম, তার সংসার ভাঙায় জড়িত নারী ও স্বামীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান চান।”
এ বিষয়ে একাডেমি সুপার ভাইজার স্বপ্না বেগম বলেন, “শিক্ষা অফিসার স্যার অসুস্থ ছুটিতে রয়েছে। উনি আসলে কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ভুক্তভোগী যদি আইনি পদক্ষেপ নিতে চায় তাহলে তাকে সব সহযোগিতা করা হবে বলেও জানান তিনি।