ঝালকাঠিতে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪০ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন প্রায় শতাধিক। হতাহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ড থেকে অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হোসাইন মোহাম্মদ আল মুজাহিদ।
হোসাইন মোহাম্মদ আল মুজাহিদ লঞ্চের ভিআইপি কেবিনের নীলগিরির যাত্রী ছিলেন। লঞ্চে আগুন লাগলে তিনি লাফিয়ে নদীতে পড়েন। অবশ্য এ সময় তার স্ত্রী উম্মুল ওয়ারার ডান পা ভেঙে যায়। বর্তমানে তারা ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরগুনার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান।
মেহেদী হাসান জানান, রাত ৩টার দিকে লঞ্চে অন্য যাত্রীদের চিৎকারে আল মুজাহিদের ঘুম ভাঙে। এ সময় আগুন থেকে বাঁচতে তিনি ও হার স্ত্রী নদীতে ঝাঁপ দেন। কিন্তু তারা তৃতীয় তলা থেকে দোতলায় পড়ে যান। এ সময় তার স্ত্রীর পা ভেঙে যায়। পরে তারা নদী লাফ দিয়ে প্রাণে রক্ষা পান।
জানা গেছে, ঢাকা থেকে বরগুনার উদ্দেশে রওনা হওয়া লঞ্চটিতে ৮০০ যাত্রী ছিলেন। পথে ঝালকাঠিতে সুগন্ধা নদীতে দুর্ঘটনার শিকার হয় লঞ্চটি। লঞ্চ থেকে বেঁচে ফেরা যাত্রীরা জানা, লঞ্চের ইঞ্জিন রুমে আগুনের সূত্রপাত। আগুন লাগার সময় বেশিরভাগ যাত্রী ঘুমিয়ে ছিলেন। যাত্রীদের অভিযোগ, লঞ্চতে ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি যাত্রী ছিল।
এদিকে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অন্তত ৪০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস। এ ঘটনায় দগ্ধ ৭০ জনকে বরিশালের শের-ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও ১৫ জনকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তদারক করছেন। উদ্ধার অভিযানে ফায়ার সার্ভিসের প্রায় পাঁচটি ইউনিট কাজ করছে।
এদিকে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে আগুন লাগার ঘটনায় ৬ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।
অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে ঝালকাঠির উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন তিনি।