করোনা সংক্রান্ত ফের বাড়তে শুরু করেছে বিভাগীয় নগরী রংপুরেও। এরই মধ্যে সরকার কঠোর বিধিনিষেধ জারি করেছে। সেই বিধি নিষেধ মানার প্রবণতা খুবই কম এখানে। অনেকে জানেনই না নতুন করে করোনা সংক্রমণের ভয়াবহতা। পরিবহন, শপিং মল থেকে শুরু করে হাট বাজার সর্বত্র চলাফেরায় যেন সংক্রমণ থেকে বাঁচার উপায় স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব থাকছে উপেক্ষিত। নেই প্রশাসনের এ বিষয়ে কোনো তৎপরতা।
সোমবার (১৭ জানুয়ারি) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নগরীর কামারপাড়া ঢাকা কোচ স্ট্যান্ডসহ শাপলা, টার্মিনাল, জাহাজ কোম্পানি মোড় ঘুরে দেখা গেছে, স্বাস্থ্যবিধি না মেনে মাস্ক ছাড়াই জটলা করে চলাফেরা করতে দেখা গেছে। এছাড়াও দূরপাল্লাসহ আন্তঃজেলা পরিবহনগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই চলাফেরা করছে অনেকে। পরিবহনগুলোতে স্বাস্থ্য সুরক্ষার সরঞ্জামাদি চোখে পরেনি। পরিবহন কর্তৃপক্ষেরও ছিলো না যাত্রীদের ওঠা নামায় বিধিনিষেধের কোনো সচেতনতা।
রংপুর থেকে ঢাকাগামী একটি পরিবহনে মাস্ক ছাড়া বাবু নামের এক যাত্রী বলেন, “হামরা কাজের লোক সবসময় কাজ করি। তাই করোনা হামাক ধরবে না।” মাস্ক না পরার বিষয়ে জানতে চাইলে বাবু বলেন, “গাড়িতে উঠে একটা পান খাচ্ছি, তাই মাস্ক পরি নাই। একটু পরে পরবো।”
কামারপাড়া স্ট্যান্ড থেকে ছেড়ে যাওয়া পরিবহনগুলোতে বাবুর মতো অনেক যাত্রীই মাস্ক ছাড়াই যাত্রা করতে দেখা গেছে। আবার অনেকেই জানেন না পুনরায় করোনা সংক্রমণ রোধে সরকারের কঠোর বিধিনিষেধের কথা। বিধি নিষেধে পরিবহনের চালক হেলপারের টিকা দেওয়া এবং সেই সনদ সঙ্গে রাখার কথা রয়েছে। যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি মানাতে কর্তৃপক্ষকে স্বাস্থ্য সুরক্ষার সরঞ্জামাদি সরবরাহসহ যাত্রীদের সচেতন করার বিষয়ে উল্লেখ থাকলেও অনেকে তা করছে না। যদিও কাউন্টারের অনেকে বলছেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিবহন পরিচালনা করা হচ্ছে। কিন্তু বাস্তব চিত্র অনেকটা উল্টো।
এসআর পরিবহন কাউন্টারে থাকা টিকেট বিক্রেতা জুয়েল রানা বলেন, “সরকারের দেওয়া স্বাস্থ্যবিধি মানার যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, তা মানতে আমরা সকলকে উদ্বুদ্ধ করছি। অনেক যাত্রী আছে অবহেলা করে মাস্ক পরতে চায় না। তাদেরও আমরা বাধ্য করি মাস্ক পরতে।”
এদিকে রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় রংপুরে নতুন করে ৪৯ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। সংক্রমণের হার রংপুরে ক্রমে বাড়তে শুরু করেছে।
রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. আবু মো. জাকিরুল ইসলাম বলেন, “বর্তমানে নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন এবং করোনার ঊর্ধ্বমুখী পরিস্থিতিতে যেভাবে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হচ্ছে তা উদ্বেগজনক। একইসঙ্গে শীতকালে করোনার সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।” করোনা প্রতিরোধে জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। বাইরে বের হলে মাস্ক ব্যবহারের ব্যাপারে জোড় তাগিদ দেন তিনি।