• ঢাকা
  • বুধবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ভালো নেই শেরপুরের মৃৎশিল্পীরা


বগুড়া প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মার্চ ১৮, ২০২২, ০৮:৩৩ এএম
ভালো নেই শেরপুরের মৃৎশিল্পীরা

‘পাতিল নিবে....ন পাতি...ল। মাটির পাতিল, ঝাজড়, কড়াইসহ সব ধরনের রান্নাসামগ্রী আছে নিবেন নাকি...”— একসময় এমন হাঁক ছেড়ে মাটির পাতিলসহ বিভিন্ন ধরনের রান্নাসামগ্রী বিক্রি করতেন মৃৎশিল্পীরা। গ্রামগঞ্জে প্রায় সব বাড়িতেই রান্নার জন্য মাটির জিনিসপত্র ব্যবহার হতো। আত্মীয় বাড়ি মিষ্টি নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রেও মাটির পাতিল ব্যবহার করা হতো। বর্তমান যুগে আধুনিকতার ছোঁয়ায় এসব রান্নার জিনিসপত্র এখন বিলীন হয়ে গেছে। এখন চলে গ্যাসের চুলা, প্রেসার কুকার, রাইস কুকার। এই জন্য মাটির পাতিলের কদর কমে গেছে। তাই বাপ-দাদার পেশা বাদ দিতে না পারায় জীবিকা নির্বাহে হিমশিম খাচ্ছেন বগুড়ার শেরপুরের মৃৎশিল্পীরা। 

বর্তমানে দইয়ের সড়া, খুটি ও কাপই তাদের একমাত্র ভরসা। বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশে বগুড়ার দইয়ের চাহিদা থাকায় মৃৎশিল্পীরা এখনো বেঁচে আছেন।

উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের কল্যাণী গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, মৃৎশিল্পীরা দইয়ের সড়া বানিয়ে রোদে শুকাচ্ছেন। রোদে শুকানোর পর আগুনে পুড়িয়ে তা প্রস্তুত করা হবে বিক্রির জন্য। উত্তরবঙ্গসহ দেশের প্রায় সব জেলাতেই দইয়ের সড়া, খুটি ও কাপ বিক্রি করেন তারা। চাহিদামতো অর্ডার নিয়ে তারা এই সড়া বানিয়ে থাকেন। প্রত্যেক সড়া তারা ৬ থেকে ৭ টাকায় বিক্রি করেন।

কল্যাণী গ্রামের মৃৎশিল্পী গনেশ, দীপক, গৌর হরি, সুশান্ত বলেন, বাপ-দাদার শেখানো পেশা বাদ দিয়ে অন্য পেশার কাজ করতে পারছি না। তাই এখনো ভাগ্য বদলাতে পারিনি। বগুড়ার এই বিখ্যাত দই আছে বলেই এখনো বেঁচে আছি। আমরা যদি এই পেশা ছেড়ে দেই তাহলে বগুড়ার শেরপুরের দইয়ে যে ঐতিহ্য আছে তা বিলীন হয়ে যেতে পারে। সরকার যদি আমাদের একটু আর্থিকভাবে সহযোগিতা করে তাহলে আমরাও সমাজে ভালোভাবে বাঁচতে পারব।

গাড়িদহ ইউনিয়নের চন্ডিজান গ্রামের কয়েকজন মৃৎশিল্পী বলেন, অনেক বছর হলো আমরা দইয়ের সড়া বানিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছি। বগুড়াসহ প্রায় ৩৫টি জেলায় আমরা দইয়ের সড়া পাঠিয়ে থাকি। এই পেশায় এতো বেশি সময় দিতে হয় যে অন্য কোন পেশায় আর সময় দিতে পারি না। দইয়ের সড়ার দাম যদি বাড়ানো যেত তাহলে আমাদের একটু পোষাত। নইলে লাভবান হতে পারছি না।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ময়নুল ইসলাম বলেন, মৃৎশিল্পীদের উন্নয়নে বর্তমান সরকার বদ্ধ পরিকর। শেরপুর উপজেলার মৃৎশিল্পীদের তালিকা করে প্রয়োজনমতো তাদের সব সমস্যা সমাধান করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

Link copied!