• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বোমা মেশিনে বালু উত্তোলন, হুমকিতে জমি ও বসতভিটা


লালমনিরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৫, ২০২২, ১০:২১ এএম
বোমা মেশিনে বালু উত্তোলন, হুমকিতে জমি ও বসতভিটা

পানি উত্তোলনযন্ত্রকে (পাওয়ার পাম্প) রূপান্তর করে নাম দেওয়া হয়েছে বোমা মেশিন। এই মেশিন দিয়ে জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার ঘুণ্টিঘর এলাকায় তিস্তা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। অনবরত বালু উত্তোলনের ফলে হুমকির মুখে পড়েছে ফসলি জমি, বাড়িঘর ও গাছপালা।

জানা গেছে, ঘুণ্টিঘর এলাকায় লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কের পাশে দুই মাস ধরে তিস্তা নদী থেকে অবৈধভাবে বোমা মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের উৎসব চলছে। প্রশাসনকে ম্যানেজ করে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট প্রতিদিন বালু উত্তোলন করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে তিস্তাতীরবর্তী এলাকায় বসতবাড়িসহ আবাদি জমি দেবে ভূমিধস ও নদীভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

এলাকাবাসী জানিয়েছেন, প্রতিদিন ভোর থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত চলে বালু উত্তোলনের কাজ।

আকবার আলী ও শফিকুল ইসলামের নামের দুই গ্রামবাসী বলেন, “নরিশ পোল্ট্রি ফার্ম লিমিটেড কোম্পানি অবৈধভাবে বোমা মেশিন দিয়ে নদী থেকে বালু উত্তোলন করায় আমাদের ঘরবাড়ি, জমির ফসল নিয়ে বিপাকে আছি। বালু তোলা বন্ধের প্রতিবাদ করলে একটি গ্রুপ আমাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছে।”

স্থানীয়দের অভিযোগ, বিষয়টি প্রশাসন দেখেও না দেখার ভান করে চলছে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে অনেকেই কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। অন্যদিকে গভীর গর্ত করে বালু উত্তোলন করায় বর্ষা মৌসুমে নদীভাঙন ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। নদীগর্ভে বিলীন হতে পারে বসতবাড়িসহ ফসলি জমি।

অথচ ২০১০ সালের বালুমহাল আইনে বলা আছে, বিপণনের জন্য কোনো উন্মুক্ত স্থান বা নদ-নদীর তলদেশ থেকে বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা অথবা আবাসিক এলাকা থেকে বালু ও মাটি উত্তোলন নিষিদ্ধ। এ আইন অমান্য করলে সেই ব্যক্তি বা তাদের সহায়তাকারী কোনো ব্যক্তির অনূর্ধ্ব দুই বছর কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এ ছাড়া এই আইনের অধীন অপরাধ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালত বা বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচার করা যাবে।

ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াম্যান প্রার্থী মফিজুল ইসলাম বলেন, “আমার জমি থেকে বোমা মেশিন দিয়ে নারিশ পোল্ট্রি ফার্ম কোম্পানির লোকজন বালু তুলছে। এখানে আমার কিছু নেই। আমার জমিতে একটি পুকুর হচ্ছে এটাই আমার লাভ।”

হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এরশাদুল আলম বলেন, “নদী থেকে বালু উত্তোলনের বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেননি। তবে আমাদের লোকজন সেখানে গিয়ে খোঁজখবর নেবেন।”

উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সামিউল আমিনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

জেলা প্রশাসক আবু জাফর জানান, নদীর তলদেশ থেকে অবৈধভাবে বালু বা মাটি উত্তোলন করা অবৈধ। যারা বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Link copied!