শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ ও পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতাসহ ৮ দফা দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি দিয়েছে স্বাধীনতা শিক্ষক কর্মচারী ফেডারেশন। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
সাতক্ষীরা
জেলা প্রেসক্লাবের সামনে মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় স্বাধীনতা শিক্ষক কর্মচারী ফেডারেশন জেলা শাখার আয়োজনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সংগঠনের জেলা শাখার আহ্বায়ক প্রভাষক এম সুশান্তের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমানের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন সংগঠনটির সাংগঠনিক সম্পাদক সহকারী অধ্যাপক আকবর হোসেন সরদার।
এ সময় আরও বক্তব্য দেন অধ্যাপক হাফিজুর রহমান, সহকারী অধ্যাপক মো. সাইফুল্লাহ, অধ্যাপক হারুনুর রশিদ, আব্দুর রউফ, তাহমিনা বিলকিচ, সহকারী অধ্যাপক আব্দুলাহ আল মামুন, প্রভাষক জাফরুল্লাহ, দেবব্রত কুমার মিস্ত্রী।
বক্তারা সরকারি সব শর্ত পূরণ করে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সব স্কুল কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানকে অতিদ্রুত এমপিওভুক্তির দাবি জানান।
পরে বেসরকারি শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের দাবিতে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন তারা।
মাগুরা
মাগুরা প্রেস ক্লাবের সামনে সকালে মানববন্ধন শেষে স্বারকলিপি দিয়েছে স্বাধীনতা শিক্ষক কর্মচারী ফেডারেশন।
এ মানববন্ধনে শিক্ষক কর্মচারীরা ৮ দফা দাবি তুলে ধরে বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণের ঘোষণার মাধ্যমে বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করতে হবে। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি করা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধীদের অবিলম্বে প্রত্যাহার করে মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে সৎ এবং যোগ্য ব্যক্তিদের পদায়ন করা। সকল শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে ডিভাইস, খাতা-কলমসহ অন্যন্যা শিক্ষা সামগ্রী প্রদান এবং মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের খাবার সরবরাহ করা।
শূন্য পদের বিপরীতে ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের বদলির ব্যবস্থা করা। শিক্ষক কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্ট ও অবসর বোর্ডের জন্য পর্যায় ক্রমে অর্থ বরাদ্দ করা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটিতে রাজনৈতিক মুক্তির দাবি তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন অধ্যক্ষ আনিছুর রহমান খোকন, শাহজাহান আলসাম সাজু, প্রফেসর সাজিদুল ইসলাম, মেহেরুননেছা, অধ্যক্ষ মকছেদুর রহমান, অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম, অধ্যক্ষ দিলারা খানম।
পটুয়াখালী
স্বাধীনতা শিক্ষক কর্মচারী ফেডারেশনের আয়োজনে বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠনের অংশগ্রহণে শতভাগ উৎসব ভাতা, সম্মানজনক বাড়ি ভাড়াসহ চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে আজ সকালে জেলা প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এতে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের জেলা শাখার সভাপতি অধ্যক্ষ মো. নুরেজ্জামান খান, সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার খাসকেল, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো. জাকির হোসেন, জেলা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জাকির হোসেন লিটু, বাংলাদেশ মাদ্রাসা জেনারেল টিচার্স এসোসিয়েশন পটুয়াখালী শাখার সভাপতি মো. সোহরাব হোসেন, মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির পক্ষে লতিফ মিউনিসিপ্যাল সেমিনারির সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. মজিবুর রহমান প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, সুষ্ঠু সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে শিক্ষা খাতে পুঁজি বিনিয়োগের চেয়ে উৎকৃষ্ট বিনিয়োগ আর কিছু হতে পারে না। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের এমন ঘোষণার প্রতি যথাযথ সম্মান জানিয়ে বিগত তের বছরে সরকার দেশের শিক্ষার উন্নয়নে শিক্ষানীতি প্রনয়ণ, প্রতিটি উপজেলায় একটি করে স্কুল ও কলেজ সরকারিকরণ, বিনামূল্যে কোটি কোটি টাকার বই বিতরণ, ২৬ হাজার প্রাথমিক স্কুল জাতীয়করণসহ যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছেন। কিন্তু বেসরকারি শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিচালিত দেশের ৯৮ শতাংশ শিক্ষক কর্মচারিরা এখনও অনেক বৈসম্যের শিকার। মাত্র ১০০০ টাকা বাড়ি ভাড়া, ৫০০ টাকা চিকিৎসাভাতা, ২৫ শতাংশ উৎসব বোনাস দেওয়া হচ্ছে যা খুবই অপ্রতুল এবং অসম্মানজনক। এমতাবস্থায় ঈদের আগেই পূর্নাঙ্গ বোনাসসহ বেসরকারি শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণে সরকারের হস্তক্ষেপ কমনা করা হয়। পরে জেলা প্রশাসকের কাছে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটিতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধসহ ৮ দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছেন স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের (স্বাশিপ) সদস্যরা। সকালে নবাবগঞ্জ
সরকারি কলেজের বিপরীতে বঙ্গবন্ধু মুক্তমঞ্চের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় স্বাশিপ জেলা শাখার আয়োজনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন শিক্ষক নেতারা। মানববন্ধনে স্বাশিপ নেতারা মুজিববর্ষে শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণের ঘোষণার
মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের একটি সার্বজনীন বিজ্ঞান ভিক্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, শিক্ষা একটি মহৎ পেশা হলেও কোনো সময়ই তারা সঠিক মূল্যায়ন পাননি। পদে পদে নানা রকম বাধা বিপত্তির সম্মুখীন হতে হয়েছে। আর তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে বোর্ডের যথাযথ নিয়মে এফিলিয়েশনপ্রাপ্ত স্কুল-কলেজ-মাদরাসা ও কারিগরি-এবতেদায়ি অনার্স-মাস্টার্সসহ প্রতিষ্ঠানগুলো এমপিওভুক্তির ব্যবস্থা গ্রহণ, আসন্ন ঈদের আগেই পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা প্রদান, সরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতনের
সমপরিমাণ বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা প্রদান, শিক্ষা প্রশাসনসহ শিক্ষা বোর্ড থেকে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধীদের অবিলম্বে প্রত্যাহার, করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের জন্য আর্থিক প্রনোদনা প্রদান, সকল শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে ডিভাইস-খাতা-কলমসহ শিক্ষা সামগ্রী প্রদান ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের সরকারি উদ্যোগে দুপুরের টিফিনের ব্যবস্থা করা সহ ৮ দফা দাবি পেশ করেন তারা।
এছাড়াও শূন্য পদের বিপরীতে ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের বদলির ব্যবস্থা কার্যকর করার দাবি করে শিক্ষকরা মানববন্ধনে বলেন, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের দুর্দশা লাঘবে শিক্ষক-কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্ট ও অবসর বোর্ডের জন্য পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ করতে হবে। আর স্কুল-কলেজ-মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটিতে শিক্ষাবান্ধব ব্যক্তিদের অন্তর্ভূক্ত করে স্কুল পর্যায়ে নূন্যতম ডিগ্রি ও কলেজ পর্যায়ে নূন্যতম মাস্টার্স পাশ স্বচ্ছ ইমেজ সম্পন্ন ব্যক্তিদের মনোনয়ন করার দাবি জানান মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষকরা। মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন স্বাশিপের জেলা শাখার সভাপতি মোহা. তারিক-ই-নূর জামাল, সাধারণ সম্পাদক মোহা. শফিকুল ইসলাম, প্রধান শিক্ষক পরিষদের সহ-সভাপতি আনোয়ার জাহান, বালিয়াডাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজনাইন শাহনাজ, পলশা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোসলেম উদ্দিন, আলীনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. কামরুজ্জামান, গোবরাতলা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহা. মজিবুর রহমানসহ জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষক-কর্মচারীরা।