বগুড়ার নন্দীগ্রামে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়ার সময় খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবির স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১৩ জন আহত হয়েছেন। ভাঙচুর করা হয়েছে ১০টির বেশি মোটরসাইকেল।
বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল ৮টায় নন্দীগ্রাম বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় বিএনপি ও আওয়ামী লীগ উভয় দলই স্থানীয় প্রশাসনকে দায়ী করে বিজয় দিবসে উপজেলা প্রশাসনের কর্মসূচি বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে।
জানা গেছে, সকাল ৭টার দিকে নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রফিকুল ইসলাম ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রানার নেতৃত্বে দলীয় নেতাকর্মীরা উপজেলা পরিষদ চত্বরে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে যান। এর আগে বগুড়া-৪ আসনের বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য মোশারফ হোসেনের নেতৃত্বে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা শহীদ মিনারে যান। শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা বেগম ‘খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তারেক রহমানের দেশে ফিরে আনার দাবিতে’ শ্লোগান দিলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।
এক পর্যায়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন শেষে বাসস্ট্যান্ডে ফিরে একটি রেস্টুরেন্টে নাস্তা করছিলেন। এ সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বাসস্ট্যান্ড চত্বরে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পুষ্পমাল্য অর্পণ করতে আসেন এবং দলীয় শ্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় কর্মীরাও দলীয় স্লোগান দিতে শুরু করলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় ১০টির বেশি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৩ জন আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বগুড়া-৪ (নন্দীগ্রাম-কাহালু) আসনের সংসদ সদস্য মোশাররফ হোসেন বলেন, “আওয়ামী লীগের লোকজন আমাদের ওপর হামলা করেছে। এতে ৬ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে একজনকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। আমি এমপি হিসেবে পুলিশের কাছে নিরাপত্তা চেয়েও পাইনি। এ কারণে নন্দীগ্রাম ও কাহালু উপজেলা প্রশাসনের বিজয় দিবসের কর্মসূচি বর্জন করেছি।”
অপরদিকে নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, “বিএনপির লোকজন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের দেশে ফিরে আনার দাবিতে স্লোগান দিয়ে হোটেল থেকে আওয়ামী লীগ অফিসে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে ৭ জন নেতাকর্মী আহত হন।”
রফিকুল ইসলাম আরো বলেন, “বিএনপি বহিরাগত লোকজন এনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে বিজয় দিবসের পরিবেশ নষ্ট করেছে। এ কারণে আমরা উপজেলা প্রশাসনের বিজয় দিবসের কর্মসূচি বর্জনের ঘোষণা দিয়েছি।”
এ বিষয়ে নন্দীগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, “শহীদ মিনারে ফুল দেয়ার পর বাসস্ট্যান্ড চত্বরে বিএনপি-আওয়ামী লীগের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।”