হাতে মেহেদী রং নিয়ে পঞ্চম শ্রেণীতে ক্লাস করছে বাল্য বিবাহের শিকার স্কুলছাত্রী শারমিন খাতুন। বিয়ের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে সে অপকটে স্বীকার করে জানিয়েছে, এক সপ্তাহে আগে ম্যাডামের ছেলের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে।
অভিযুক্ত শিক্ষিকা শামসুন্নাহারকে সাংবাদিক পরিচয়ে স্কুলছাত্রীর সঙ্গে নিজের ছেলের বাল্য বিবাহ দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমার বাড়ির অবস্থা খুব ভালো না। বিশেষ করে আমার মায়ের শরীর খারাপ। মায়ের ইচ্ছা নাতি ছেলের বউ দেখার। মূলত মায়ের ইচ্ছা পূরণ করা জন্যই ছেলের সঙ্গে আমারই স্কুলের ৫ম শ্রেণীর ছাত্রীকে বিয়ে দিয়েছি। তবে বিয়ে রেজিস্ট্র করা হয়নি।”
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নের ছোটশলুয়া গ্রামের বিলপাড়ার দিনমুজুর অসোক আলীর মেয়ে শারমীন খাতুন (১১) পাশ্ববর্তী বেগমপুর ইউনিয়নের বেগমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর একজন নিয়মিত ছাত্রী। তার রোল নং-৩৮। গত ২০/০৩/২০২২ ইং তারিখে একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা শামসুনাহার তারই ছেলে স্থানীয় বেগমপুর যদুপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ শ্রেণী পড়ুয়া আব্দুর রহমানের সঙ্গে বিয়ে দেন।
এ বিষয়ে বেগমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদের কাছে জানতে চাইলে তিনি ছুটিতে আছেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়ে বলেন, বিয়ের বিষয়টি তিনি জানে না। তবে একজন স্কুল শিক্ষিকার এধরনের অপরাধ কাম্য নয়।
বেগমপুর দাখিল মাদরাসার শিক্ষক ও বেগমপুর ইউনিয়নের কাজি মফিজুল ইসলাম ধর্মীয় রীতি মেনে বিয়ে পড়িয়েছেন। বিয়ে পড়নো কাজী মফিজুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বিয়ের বিষয়টি অস্বীকার করেন।
বেগমপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলী হোসেন জোয়ার্দ্দার বলেন, “বেগমপুর ইউনিয়নকে বাল্য বিবাহ মুক্ত করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদ বদ্ধপরিকর। একজন স্কুল শিক্ষিকা কিভাবে এই ধরনের কাজ করতে পারে আমার বুঝে আসে না।”
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শিক্ষিকার এই বিষয়টি আমাদের দেখার দায়িত্ব না। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হলে পারিবারিক আদালতে মামলা করতে হবে।”
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীম ভুইয়া বলেন, “বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”