ঝিনাইদহ সদর উপজেলার রাউতাইল গ্রামে দেশের প্রথম বার্ড ফ্লুর টিকা উৎপাদিত হচ্ছে। দেশি আইসুলেট বা স্থানীয়ভাবে সংগ্রহ করা ভাইরাস থেকে তৈরি করা বলে এই টিকার কার্যকারিতা বেশি।
এফএনএফ ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মখলেছুল ইসলাম জানান, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ময়মনসিংহের মাইক্রোবায়োলজি ও হাইজিন বিভাগের অধ্যাপক মো. আলিমুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে এফএনএফ ফার্মাসিউটিক্যালসের গবেষক কোহিনুর পারভীন, মোস্তফা কামাল ও আয়নুল হক গবেষণা করে টিকাটি উদ্ভাবন করেন।
২০১৭ সালে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বার্ড ফ্লুর নমুনা সংগ্রহ করে গবেষণা করা হয় ঝিনাইদহের এফএনএফ ফার্মাসিউটিক্যালসে। সেখান থেকে টিকা আবিষ্কার করে প্রয়োগ করা হয় নিজস্ব খামারে। সফলতা পাওয়ার পর টিকাটির নামকরণ করা হয় ‘বাংলা বার্ড ফ্লু এইচ ৯ ভ্যাক’ নামে।
মখলেছুল ইসলাম বলেন, “গত ৫ মে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর থেকে অনুমোদন পেয়ে টিকা উৎপাদন শুরু করা হয়। এক কোটি টিকার বাজারজাতকরণের লক্ষ্যে উৎপাদন চালিয়ে যাচ্ছে। দেশের পোল্টি শিল্পকে রক্ষা করতে আমদানিনির্ভর না থেকে কম মূল্যে পাওয়া যাবে এই টিকাটি। আর দেশীয় আইসুলেট বা স্থানীয়ভাবে সংগ্রহ করা ভাইরাস থেকে তৈরি বলে কার্যকারিতা বেশি। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে ১৫ কোটি ভ্যাকসিন তৈরির সক্ষমতা রয়েছে।”
প্রয়োজন পড়লে আরও বাড়ানো হবে বলেও তিনি জানান।
প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদিত টিকার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে সাড়ে পাঁচ টাকা। একটি মুরগির জীবদ্দশায় ৭ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে প্রথম ডোজ, ২৮ দিনে দ্বিতীয় ডোজ ও শেষ ডোজ দিতে হবে ৬ মাস বয়সে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আনন্দ কুমার অধিকারী বলেন, দেশে টিকার আবিষ্কার একটি গর্বের বিষয়। বার্ডফ্লু টিকা আগে বিদেশ থেকে আমদানি করা লাগত। এখন আর আমদানি করা লাগবে না। কারণ দেশেই উৎপাদন হচ্ছে ফলে দামে সাশ্রয়ীর পাশাপাশি পোল্ট্রি খামারিরা বেশি সুবিধা পাবে।
পোল্ট্রি খামারি হাসান আলী জানান, তিনি দীর্ঘ এক যুগ ধরে পোল্ট্রির খামারের ব্যবসা করে আসছেন। বিভিন্ন সময় পোল্ট্রি মুরগির রোগ দেখা দেয় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য বার্ডফ্লু। এই রোগের কারণে তাদের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। এমনকি এ রোগের টিকা দামও আগে অনেক বেশি ছিল। কিন্তু ‘বাংলা বার্ড ফ্লু এইচ ৯ ভ্যাক’ নামের যে টিকা তৈরি হয়েছে তা বাজারে কম দামে পাওয়া যাচ্ছে। এমনকি এর কার্যকারিতাও অনেক বেশি।
হাসান আলী বলেন, “এতে করে আমার মতো অনেক খামারি স্বল্পমূল্যে দেশীয় ভ্যাকসিন পেয়ে খুশি।”