কক্সবাজারের টেকনাফে বন বিভাগের ২২০ একর এলাকাজুড়ে স্থাপিত চাকমারকুল এবং উনচিপ্রাং নামের দুটি ক্যাম্প। সেখানে প্রায় ৪০ হাজার রোহিঙ্গা নাগরিক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাস করছেন।
সম্প্রতি পরিবেশ অধিদপ্তরের এক প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠেছে। অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আশরাফউদ্দিন প্রতিবেদনটি সম্প্রতি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন।
জানা যায়, সর্বশেষ একাদশতম দফায় ১ হাজার ৬৫৪ জন রোহিঙ্গা নোয়াখালীর ভাসানচরে যায়। আরও রোহিঙ্গা কক্সবাজারে রয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাস করছেন। জেলার টেকনাফের ২১ ও ২২ নম্বর ক্যাম্প দুটি যথাক্রমে চাকমারকুল এবং উনচিপ্রাং নামে পরিচিত। ওই এলাকার পাহাড় ৭৫ থেকে ৯০ ডিগ্রি কৌণিক অবস্থানে ইতিপূর্বে কাটা হয়েছে। আসন্ন বর্ষা মৌসুমে সেখানে ভূমিধসের মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। আর এমনটি ঘটলে সেখানে বসবাসরতরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ক্যাম্প দুটি একদিকে যেমন পরিবেশগত দিক থেকে পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত হওয়ায় অত্যন্ত ঝুঁকিতে আছে, তেমনি বিচ্ছিন্ন এলাকায় অবস্থিত হওয়ায় নিরাপত্তার দিক থেকেও অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। কিছুদিন আগে ভূমিধসে ক্যাম্পগুলোতে অনেক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। পাশাপাশি বিচ্ছিন্ন এলাকায় অবস্থিত হওয়ায় ক্যাম্প দুটি বিভিন্ন সন্ত্রাসী দল এবং ডাকাত দলের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে।
এ ছাড়া দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন, রোহিঙ্গাদের অপরাধ দমনসহ সব রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তারের দাবিতে ‘আমরা কক্সবাজারবাসী’সহ অন্যান্য অঙ্গ সংগঠন এবং স্থানীয় নেতারা কক্সবাজারের উখিয়ায় বিশাল মানববন্ধন ও জনসমাবেশ করেছে। তাদের অভিযোগ, সারা দেশে অস্ত্র ও মাদক পাচারসহ নানা ধরনের জঘন্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা। এছাড়া স্থানীয়দের হত্যা, ঘরবাড়িতে হামলাসহ নানা অপরাধমূলক কাজ করে আসছে রোহিঙ্গারা।
পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রতিবেদনটি তৈরি করেন কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক হারুন-অর-রশিদ পাঠান। ওই প্রতিবেদনের সূত্র ধরে মহাপরিচালকের চিঠিতে বলা হয়, ক্যাম্প দুটি বন বিভাগের ২২০ একর এলাকাজুড়ে স্থাপিত। গভীর নলকূপ, পাম্প ও টিউবওয়েলের মাধ্যমে তারা দৈনিক প্রায় ৭ লাখ ৭৪ হাজার লিটার পানি উত্তোলন করছে। পয়োবর্জ্য পরিশোধনের জন্য এলাকায় কোনো রকম স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়নি। সার্বিক বিবেচনায় ওই এলাকার পরিবেশ ও প্রতিবেশ বিনষ্ট হয়েছে, যা চলমান আছে।