পাবনার বেড়া পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নৌকা প্রতীক-বিদ্রোহী প্রার্থীর (নারিকেল গাছ) সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ১০ জন আহত হয়েছেন।
বুধবার (১৭ নভেম্বর) রাতে পৌরসভার হাতিগাড়া চৌরাস্তা মোড়ে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন নৌকার সমর্থক মুন্নাফ (১৮), আল মাহমুদ (১৯) আরিফুল, শাহাদত প্রামাণিক, মিলন ফকির, ফারুক খান, শাহিন খাঁ, দুলাল প্রামাণিক। অন্যদের পরিচয় পাওয়া যায়নি। আহতদের উদ্ধার করে বেড়ার বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, মেয়র পদে ৬ জন মনোনয়নপত্র জমা দিলেও একজন প্রত্যাহার করে নেওয়ায় বর্তমান ৫ জন প্রতীক বরাদ্দ পেয়েছেন। তাদের মধ্যে তিনজনই স্থানীয় সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকু পরিবারের সদস্য। ভোটের মাঠে তাদের লড়াই শুরু হয়ে গেছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, “একই পরিবারের তিনজন প্রার্থী হওয়ায় আমরা দ্বিধাদ্বন্দ্বে দিন কাটাচ্ছি। তারা যদি নিজেরা মারামারি কাটাকাটি করে, তাহলে আমরা সাধারণ জনতা কার পক্ষে ভোট করব।”
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যার পরে নৌকার ও বিদ্রোহী প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণা মিছিল বের হলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় অনেকে আহত হলে তারা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। কয়েকটি নির্বাচনী অফিসও ভাঙচুর করা হয়।
নৌকা প্রতীকের প্রার্থী অ্যাডভোকেট আসিফ শামস রঞ্জন জানান, বুধবার রাতে বেড়া পৌরসভার নির্বাচনী প্রচারণার লক্ষে তার সমর্থকেরা একটি মিছিল বের করে হাতিগাড়া চৌরাস্তা মোড়ে পৌঁছায়। এ সময় বিপরীত দিক থেকে নারিকেল গাছ মার্কার প্রার্থী আব্দুল বাতেন ও তার সমর্থকরা আরেকটি মিছিল নিয়ে আসে এবং অতর্কিত নৌকার মিছিলে হামলা চালায় ও মারধর করে।
মিছিলকারীরা ছত্রভঙ্গ হলে নারিকেল গাছ মার্কার প্রার্থী আব্দুল বাতেনের সমর্থকরা নৌকার নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর করে। এ ঘটনার খবর পেয়ে বেড়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে বাতেন ও তার সমর্থকেরা পালিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে আব্দুল বাতেনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, “নৌকা প্রার্থী জনবিচ্ছিন্ন হয়ে একের পর এক মিথ্যা অপবাদ ছড়াচ্ছে। আমাদের প্রচারণা মিছিলে নৌকার লোকজন হামলা করে অনেক নেতাকর্মীকে মারধর করে। নির্বাচনে নিশ্চিত পরাজয় জেনে এমন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে নৌকার প্রার্থী ও তার সমর্থকরা।”
বেড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার বলেন, দুটি মিছিল মুখোমুখি হলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এ সময় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। যদি কেউ লিখিত অভিযোগ দেয় তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা নির্বাচন অফিসের সিনিয়র কর্মকর্তা ও বেড়া পৌর নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহাবুবুর রহমান বলেন, “সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমরা সব সময় সবাইকে বলে আসছি। কোনো প্রকার সহিংসতা না করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তারপরও যদি উভয়পক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হয় তাহলে লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”