কানাডায় প্রবেশে ব্যর্থ হয়ে দেশে ফেরার দীর্ঘদিন পর প্রকাশ্যে দেখা গেল সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানকে।
শনিবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে চাচা সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুর রহমান তালুকদারের জানাজায় অংশ নিতে জামালপুরের নিজ গ্রাম সরিষাবাড়ির দৌলতপুরে আসেন তিনি।
এ সময় গ্রামের বাড়িতে পৌঁছে নেতাকর্মী ও পরিবারের সদস্যেদের সঙ্গে কথা বলেন মুরাদ হাসান। পরে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে চাচা বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুর রহমান তালুকদারের জানাজায় অংশ নেন।
উপজেলার দৌলতপুর অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান তালুকদার কলেজ মাঠে চাচার জানাজায় অংশ নেন ডা. মুরাদ হাসান। জানাজা শেষে বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুর রহমান তালুকদারকে পারিবারিক গোরস্তানে দাফন করা হয়।
এর আগে তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অব অর্নার প্রদান করা হয়।
এছাড়া মন্ত্রিত্ব হারানোর পর এই প্রথম মুরাদ হাসান তার নিজ নির্বাচনি এলাকায় এলেন।
এর আগে ২০২১ সালের ১ ডিসেম্বর এক ফেসবুক লাইভে মুরাদ হাসান খালেদা জিয়ার নাতনি জাইমা রহমানকে নিয়ে অসৌজন্যমূলক বক্তব্য দেন। বিষয়টি নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। এরপর চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে তার অশোভন কথোপকথনের অডিও ভাইরাল হলে শুরু হয় নতুন বিতর্ক।
এমন পরিস্থিতিতে মুরাদকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এদিকে মুরাদের পদত্যাগের পর তার এলাকায় মিষ্টি বিতরণ করে উল্লাস করেন আওয়ামী লীগের কিছু নেতা-কর্মী ও স্থানীয়রা। তাদের অভিযোগ, মুরাদ তার অনুসারীদের মাধ্যমে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন।
এ ছাড়া তার বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে খোদ আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা বিব্রত ছিলেন। তাকে নির্বাচনি এলাকায় ঢুকতে না দেয়ার ঘোষণাও দেয় দলের কিছু নেতাকর্মী।
প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের পর তিনি কানাডার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন। তবে কোভিড প্রটোকল না মানায় তাকে দেশটিতে ঢুকতে দেয়া হয়নি। পরে বাধ্য হয়ে ১২ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ঢাকায় ফেরেন তিনি। ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে থেকে সেদিন সংবাদকর্মীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে বেরিয়ে যান মুরাদ। এরপর তার আর সন্ধান মেলেনি।
গুঞ্জন রটে রাজধানীর উত্তরার একটি ভবনে ওঠেন তিনি। তবে তার অবস্থান শনাক্ত করা যায়নি। এর ৪০ দিন পর শনিবার তাকে নিজ সংসদীয় এলাকায় দেখা গেছে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডা. মুরাদ হাসানের বড় ভাই বিচারপতি মাহমুদুল হাসান তালুকদার, সরিষাবাড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন পাঠান প্রমুখ।