ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’-এর প্রভাবে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে টানা দুই দিনের বৃষ্টিতে সাতক্ষীরার বিভিন্ন উপজেলার আমন ধান, বোরো ধানের বীজতলা ও শীতকালীন সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অবিলম্বে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা না গেলে আরও বেশি ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এবার জেলায় ৮৯ হাজার ৯১০ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের চাষ করা হয়। ডিসেম্বরের ৪ তারিখ পর্যন্ত ৭২ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়। একই সময় পর্যন্ত জেলায় ৪৭০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের বীজতলা তৈরি করা হয়। ১১ হেক্টর ৩৫৫ বিঘা জমিতে সরিষা, ৪৮০ হেক্টর জমিতে গম ৬ হাজার ৫৩৫ হেক্টর জমিতে পালংশাক, টক পালন, আলু, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ওল কপি, পেঁয়াজ, রসুন, আলু, মরিচ, মসুর ডাল ও ভুট্টার চাষ করা হয়েছে।
চিংড়ির পরেই কৃষিপণ্য উৎপাদনে সাতক্ষীরার পরিচিতি দেশজুড়ে। তবে নিম্নচাপে গত ৫ ও ৬ ডিসেম্বর টানা বৃষ্টির সঙ্গে ঝোড়ো বাতাসে আমন ধান মাটিতে পড়ে ও কাটা ধান পানিতে ডুবে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বোরো ধানের বীজতলা পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিতে তলিয়ে গেছে সরিষা, মসুর ডাল, আলু, পেঁয়াজ, বাঁধাকপি, ফুলকপি, ওলকপি, বেগুন, মরিচ, ঢেঁড়সসহ বিভিন্ন ধরনের শীতকালীন সবজি। ফলে কৃষকরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। বৃষ্টির পানি দ্রুত সরানোর ব্যবস্থা করা না গেলে এ ক্ষতির পরিমাণ আরও কয়েক গুণ বাড়বে বলে আশঙ্কা কৃষকদের। কৃষকদের অভিযোগ, দুই দিনের বৃষ্টিতে সাতক্ষীরা সদর, কালিগঞ্জ, শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলায় কৃষির ব্যাপক ক্ষতি হলেও কৃষি কর্মকর্তারা কোনো খোঁজ নিতে আসেননি।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা কাশেমপুর গ্রামের কৃষক শহীদুল ইসলাম বলেন, “এ বছর আমি ৮ বিঘা জমিতে আমন ধান লাগিয়েছিলাম। কিন্তু দুই দিনের বৃষ্টিতে না কাটতে পারা ও কেটে মাটিতে রাখা আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।” তিনি আরো জানান, অধিকাংশ কৃষকের ধান, বীজতলা পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে।
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. নুরুল ইসলাম জানান, ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’-এর প্রভাবে ৫ ও ৬ ডিসেম্বর টানা বৃষ্টিতে শ্যামনগর, কালিগঞ্জ ও আশাশুনিতে ৮৭০ হেক্টর জমির আমন ধান ও ১০ হেক্টর জমির বোরো বীজতলার ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। মোট আবাদের ১০ শতাংশ সরিষা নষ্ট হয়েছে। ১৩০ হেক্টর জমির শীতকালীন সবজি নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।