বৃহত্তর কুমিল্লার প্রথম শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয় ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজে। ১৯৫৩ সালে উচ্চমাধ্যমিক শাখায় এ শহীদ মিনার স্থাপন করা হয়। রাতের আঁধারে নির্মাণ করা হয় এ শহীদ মিনার।
কলেজ সূত্র মতে, ১৯৫৩ থেকে ১৯৬২সাল পর্যন্ত অস্থায়ী শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানো হতো। ১৯৬৩ সালে পাকিস্তানি শাসকদের বৈরিতা উপেক্ষা করে একটি স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়। শহীদ মিনারের কালো স্তম্ভটি ১৯৬৩ সালে নির্মাণ করা হয়েছে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী তা ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয়। তৎকালীন অধ্যক্ষ মো. সিরাজুল ইসলাম শহীদ মিনারটি বর্তমান বিজ্ঞান ভবনসংলগ্ন পুকুরে তা সংরক্ষণ করেন। দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তা পুকুর থেকে উত্তোলন করে কলেজ উচ্চমাধ্যমিক শাখা ফটকের সামনে বর্তমান স্থানে স্থাপন করা হয়েছে।
কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও শিক্ষক পরিষদ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহজাহান জানান, ১৯৮৮ সালে কুমিল্লা টাউন হল মাঠসংলগ্ন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার তৈরি করা হয়। এর আগে ভিক্টোরিয়া কলেজ শহীদ মিনারটিকে কুমিল্লার সর্বস্তরের মানুষ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার হিসেবে সংস্কৃতিচর্চার কেন্দ্রবিন্দু ছিল। ২০১০ সালে ডিগ্রি শাখার কলা ভবনের সামনে প্রশস্ত জায়গা নিয়ে আরেকটি শহীদ মিনার তৈরি করা হয়েছে। ২০১৬ সালে উচ্চমাধ্যমিক শাখার শহীদ মিনারটিকে মূল স্তম্ভ অবিকৃত রেখে সংস্কার করা হয়।
এ বিষয়ে কলেজ অধ্যক্ষ ড. আবু জাফর খান বলেন, মহান স্বাধীনতাযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলনসহ প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে ঐতিহ্যবাহী ভিক্টোরিয়া কলেজের ভূমিকা রয়েছে। বিভিন্ন বইপুস্তক থেকে আমরা জেনেছি এ কলেজের প্রায় ত্রিশজন ছাত্র-শিক্ষক ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। তাদের মধ্যে রয়েছে এ কলেজের প্রাক্তন ছাত্র ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত, রফিকুল ইসলাম, অতীন্দ্র মোহন রায়, আহমেদ আলী, আব্দুল গণি মুন্সী, সিরাজুল ইসলাম, আবুল খায়ের, আমিরুল ইসলামসহ অনেকে।