কক্সবাজারে স্বামী-সন্তানকে জিম্মি রেখে এক নারীকে গণধর্ষণের ঘটনায় প্রধান আসামি আশিকুল ইসলাম আশিককে মাদারীপুর থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
রোববার (২৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
এ নিয়ে ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তারের সংখ্যা দাঁড়াল পাঁচে। এর আগে দুপুরে বাকি তিনজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানান ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের পুলিশ সুপার জিল্লুর রহমান।
জিল্লুর রহমান জানান, গ্রেপ্তার ওই তিনজন হলেন আবুল কাশেমের ছেলে রেজাউল করিম (২৫), মৃত মুক্তার আহমদের ছেলে মামুনুর রশীদ (২৮) এবং মৃত সালেহ আহমেদের ছেলে মেহেদী হাসান (২১)। এছাড়া ২৩ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) দুপুরে জিয়া গেস্ট ইন হোটেলের ব্যবস্থাপক রিয়াজ উদ্দিন ছোটনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ছোটনের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার (২২ ডিসেম্বর) স্বামী-সন্তানকে জিম্মি ও হত্যার ভয় দেখিয়ে এক নারী পর্যটককে দল বেঁধে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ পেয়ে রাত দেড়টার দিকে কক্সবাজারের কলাতলীর ‘জিয়া গেস্ট ইন’ নামে একটি হোটেল থেকে ওই নারীকে উদ্ধার করে র্যাব-১৫। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে হোটেলের ব্যবস্থাপক রিয়াজ উদ্দিন ছোটনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত তিনজনের মধ্যে দুইজনকে শনাক্তও করা হয়েছে।
ওই নারীর বরাত দিয়ে র্যাব জানায়, ২২ ডিসেম্বর সকালে ঢাকা থেকে স্বামী-সন্তানসহ কক্সবাজার বেড়াতে আসেন ওই নারী। এরপর কক্সবাজার শহরের হলিডে মোড়ের একটি হোটেলে ওঠেন। সেখান থেকে বিকেলে সৈকতের লাবণী পয়েন্টে ঘুরতে যান। লাবণী পয়েন্টে অপরিচিত এক যুবকের সঙ্গে ওই নারীর স্বামীর ধাক্কা লাগে। পরে কথা-কাটাকাটি হয়।
এরই জেরে সন্ধ্যায় স্টেডিয়ামসংলগ্ন পর্যটন গলফ মাঠের সামনে থেকে কয়েকজন যুবক তার স্বামী ও আট মাসের সন্তানকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় তুলে নিয়ে যায়। অপর একটি অটোরিকশায় তিন যুবক গৃহবধূকে তুলে নেয়। পরে তারা পর্যটন গলফ মাঠের পেছনে একটি ঝুপড়ি চায়ের দোকানের পেছনে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে।
সেখান থেকে তাকে জিয়া গেস্ট ইন নামে একটি হোটেলে নেওয়া হয়। সেখানেও তাকে আরেক দফা ধর্ষণ করে ওই যুবকরা। ঘটনা কাউকে জানালে সন্তান ও স্বামীকে হত্যা করা হবে জানিয়ে হোটেলকক্ষটি বাইরে থেকে বন্ধ করে পালিয়ে যায় তারা।
ওই নারীর দাবি, তিনি জিয়া গেস্ট ইনের তৃতীয় তলার জানালা দিয়ে এক যুবকের সহায়তায় কক্ষের দরজা খুলে ৯৯৯-এ ফোন দেন। পুলিশ তাকে থানায় এসে সাধারণ ডায়েরি করার পরামর্শ দেয়। তারপর অপর এক ব্যক্তির সহযোগিতায় কল দেন র্যাবকে। পরে র্যাব এসে তাকে উদ্ধার করে। পর্যটন গলফ মাঠের এলাকা থেকে তার স্বামী ও সন্তানকেও উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় ২৩ ডিসেম্বর রাতে ওই নারীর স্বামী বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলা করেন। কক্সবাজার শহরের বাহারছড়া এলাকার আশিকুল ইসলাম আশিকসহ এজাহারে চারজনের নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়া তিনজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। এজাহারভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন আশিকের দুই সহযোগী ইস্রাফিল খুদা জয়, মেহেদী হাসান বাবু এবং হোটেলের ব্যবস্থাপক রিয়াজ উদ্দিন ছোটন।