পাবনায় যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। উজানের ঢল আর টানা বৃষ্টিতে একদিনের ব্যবধানে যমুনা নদীতে দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করায় উঠতি নানা ফসল ও সবজির ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় কোটি কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে দাবি কৃষি বিভাগের।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উত্তরাঞ্চলীয় নির্বাহী প্রকৌশলী জাহিদ হাসান জানান, বুধবার দুপুর আড়াই টায় যমুনা নদীর পানি বেড়ে নগরবাড়ি পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর পদ্মা নদীর পানি পাকশী হার্ডিঞ্জ সেতু পয়েন্টে বিপৎসীমার ৮৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে এবং বড়াল নদীর পানি কিছুটা বেড়ে বড়াল সেতু পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত মঙ্গলবার দুপুরে নগরবাড়ি পয়েন্ট বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। একদিনের ব্যবধানে পানি দ্বিগুণ বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলা জুড়ে বন্যা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে কৃষি দপ্তরের ভাষ্যমতে, পাবনা সদর, ঈশ্বরদী, বেড়া, সুজানগরসহ কয়েকটি উপজেলার নদীর তীরবর্তী নিম্নাাঞ্চলে পানি ঢুকে সবজি ও ফসলের ক্ষেত তলিয়ে গেছে। কোটি কোটি টাকার ফসল ও সবজির ক্ষতির সন্মুখিন চাষিরা। অন্যদিকে কিছু কিছু স্থানে পানি প্রবেশ করায় জনসাধারণের বাড়তি ভোগান্তি যোগ হয়েছে প্রাত্যহিক জীবনে। কিছু স্থানে নদীতে ভাঙন ও পানি বৃদ্ধির ফলে নদী তীরবর্তী মানুষ তাদের ঘরবাড়িয়ে সড়িয়ে অন্যত্র নিচ্ছেন।
পাবনা সদরের বলরামপুরে পদ্মার তীরে বসবাস করা শামুসল আলম, আকন মিয়া, সোলেমান সেখসহ বেশ কয়েকজন বলেন, ‘প্রতিবার বর্ষার সময়ে পদ্মা ও যমুনা নদী ভয়াল রূপ ধারণ করে আমাদের ভয় দেখায়। রাতের আঁধারে আমাদের জায়গা-জমি, বাড়ি-ঘর নদীতে হারিয়ে যায়। এই সময় আসলে আমরা আতংকের মধ্যে দিনযাপন করি।
ইতোমধ্যে বেড়া উপজেলার হাটুরিয়া, নাকালিয়া, সুজানগরের নাজিরগঞ্জ, সাতবাড়িয়া, মালিফা, ঈশ্বরদী উপজেলার লক্ষ্মীকুন্ডা, সাড়া ও পাকশী ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম ভাঙনের শিকার হয়েছে। পাশাপাশি নিম্নাঞ্চল ডুবে গেছে। ক্ষতি হয়েছে উঠতি ফসল ও সবজি ক্ষেতের। এ ছাড়া পাবনা সদরের আশুতোষপুর, বলরামপুর ও রানীনগর ভাঙনকবলিত এলাকা। পানিবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ওই সব এলাকায় পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। শঙ্কার মধ্যে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
পাবনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আব্দুল কাদের বলেন, আমাদের জেলাতে শুধু চরাঞ্চলের জমিগুলোতে পানিতে তলিয়ে গেছে। উঁচু জমির ফসল সবজির তেমন ক্ষতি হয়নি। প্রায় ৮ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।