স্থানীয় সরকার নির্বাচন (ইউনিয়ন পরিষদ) ঘিরে প্রথম ধাপ থেকে শুরু হয়ে চতুর্থ ধাপ না পেরুতেই প্রচারণা-প্রচারণা, অন্তঃকোন্দল, অভ্যন্তরীণ বিরোধ আর আধিপত্য বিস্তারের জেরে চারজন খুন হয়েছেন। দ্বিতীয় ধাপে জেলার সুজানগরে এক মেম্বার প্রার্থীর ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। চতুর্থ ধাপের নির্বাচনী প্রস্তুতিকালেই খুন হন ৩ জন। এদের মধ্যে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী, একজন কর্মী ও আরেকজন সাধারণ মানুষ। প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে নির্বাচনী সহিংসতার শিকার হন বেশকিছু মানুষ। আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয় নির্বাচনী ক্লাব, বসত বাড়ি, যানবাহন। ছিঁড়ে ও ভেঙে ফেলা হয় জাতির জনক ও তার কন্যার ছবি। নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন।
নির্বাচনী সহিংসতার ঘটনার পর থেকে পাবনা সদরের ভাড়ারা ও চরতারাপুর ইউনিয়নে চাপা ক্ষোভ, শঙ্কা, গ্রেপ্তার আতঙ্ক বিরাজ করছে। খুনের ঘটনায় মামলা দায়েরের পর পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে গোটা এলাকা। এই দুই ইউনিয়নে হত্যাকাণ্ডের রেশ কাটতে না কাটতেই জেলার আটঘরিয়া উপজেলার দেবোত্তর ইউনিয়নে আরেকটি খুনের ঘটনায় শঙ্কা বেড়ে গেছে। নির্বাচনী মাঠ ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। সেই সঙ্গে শঙ্কায় রয়েছেন সাধারণ ভোটারসহ প্রার্থী, কর্মী ও সমর্থকেরা।
স্থানীয় বাসিন্দা, প্রত্যক্ষদর্শী, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতাসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সংঘাতের প্রভাব পড়ার কথা নয়। সরকারের নীতি নির্ধারক মহলের কিছু ভুল সিদ্ধান্তই পরিস্থিতি পাল্টে দিয়েছে। প্রথমত, দলীয় প্রতীকে নির্বাচন। তৃণমূল রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট দূরে রেখে দলীয় মনোনয়ন বাণিজ্যের কারণে প্রকৃত, যোগ্য, মেধাবী ও ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে প্রার্থী নির্ধারণ করা হয়। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে হতাশ ও যোগ্য প্রার্থী না থাকায় বিদ্রোহী প্রার্থীর বিচরণের কারণে পরিস্থিতি সাংঘর্ষিক রূপ নেয়। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, দলীয় প্রভাব, অভ্যন্তরীণ কোন্দল প্রকাশ্যে আসা, বিরোধপূর্ণ প্রচার প্রচারণায় বাধাসহ বিভিন্ন কারণে পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়েছে। দেখা দিয়েছে সংঘাত, সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টাধাওয়া। একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ। উত্তপ্ত এই পরিস্থিতি হয়ে উঠেছে নাশকতার মূল কারণ।
পুলিশ, নিহতের পরিবার, স্বজন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দ্বিতীয় ধাপে পাবনার সুজানগর উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলার ভায়না ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত হয় সবুজ হোসেন (৩৫) নামের এক যুবক। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৯ নভেম্বর তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। ভায়না ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আমিন উদ্দিন আর স্বতন্ত্র প্রার্থী ওমর ফারুকের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে গত ৮ নভেম্বর সন্ধ্যায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত হন সবুজ।
গত ১১ ডিসেম্বর সকালে পাবনা সদর উপজেলার ভাড়ারা ইউনিয়নের ভাড়ারা গ্রামের মোজাম্মেল হক খানের ছেলে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ইয়াসিন আলম (৩৫) সংঘর্ষে মারা যান। এ দিন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সুলতান মাহমুদের কর্মী সমর্থকরা প্রচার প্রচারণায় বের হন। তাদের সঙ্গে যুক্ত হন আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী ইয়াসিন আলম। তিনি সুলতান মাহমুদের চাচাতো ভাই। এ সময় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবু সাঈদ খান ও তার কর্মী সমর্থকরাও বের হন। এ সময় উভয়পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কমপক্ষে ১০ জন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ২৫ জন আহত হন। এদের মধ্যে আহত স্বতন্ত্র প্রার্থী ইয়াসিন আলম মারা যান। পরিবারের পক্ষ থেকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবু সাঈদ খানকে প্রধান আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। পুলিশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন মামলার প্রধান আসামি। এদিকে এই ঘটনার কারণেই নির্বাচন কমিশন ভাড়ারা ইউনিয়নের নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করে।
অপরদিকে, গত ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় একই উপজেলার চরতারাপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষের ভিডিও ধারণা করতে গিয়ে ছুরিকাঘাতে নিহত হয় আটঘরিয়াপাড়া গ্রামের নায়েব আলীর ছেলে কলেজ ছাত্র নাছিম আহমেদ (১৭)। এখানে গুলিবিদ্ধসহ আহত হন আরো অন্তত ১০ জন। এ ঘটনায়ও মামলা হয়েছে। পুলিশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
এদিকে পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার দেবোত্তর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের প্রচারণা ও গণসংযোগে নৌকার সমর্থকদের হামলায় সেলিম হোসেন (৩৫) নামের এক যুবক মারা যান। ঘটনার পর শনিবার সন্ধ্যায় নিহত সেলিমের লাশ নিয়ে উপজেলার দেবোত্তর বাজারে বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করেন এলাকাবাসী।
স্থানীয়রা জানান, জনপ্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন যদি ভোট কেন্দ্রে গিয়ে নিরাপদে ভোট প্রদানের ব্যবস্থা করতে ব্যর্থ হয় তাহলে আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভোট কেন্দ্রে যেতে চাই না। তারা বলেন, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শৃঙ্খলার মধ্যে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে আমার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে চাই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রার্থী বলেন, ভোট গণতান্ত্রিক চর্চার একটি জায়গা। যে কেউ প্রার্থী হতে পারেন। কিন্তু দলীয় প্রার্থী থাকায় অনেক স্বতন্ত্র প্রার্থী তাদের রোষানলে পড়েছেন। ভোট চাইতে পারছেন না, ভোটারের কাছে যেতে পারছেন না, নির্বাচনী প্রচার প্রচারণায় বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন।
মাঠ পর্যায়ে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণায় নিয়োজিত কয়েকজন কর্মীর সঙ্গে আলাপকালে তারা বলেন, সবসময় নিরাপত্তাহীনতা, শঙ্কার আর উৎকণ্ঠার মধ্যে কাজ করছি। কখন জানি ক্ষমতাসীন দলের লোকজন এসে হামলা চালায়। তারা বলেন, নির্বাচন মানেই ক্ষমতাসীনদের। অন্য কেউ নির্বাচন করুক, ভোট চাক আর প্রচারণা করুন এটা তাদের সহ্য হয় না।
একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থীর সঙ্গে আলাপকালে তারা বলেন, বর্তমানও চেয়ারম্যান রয়েছি। আগেও চেয়ারম্যান ছিলাম। ন্যায় নীতি ও সততার সাথেই কাজ করেছি। কিন্তু এবারে মনোনয়ন পাইনি। নির্বাচন থেকে সরে আসতে চাইলেও এলাকার মানুষের চাপে নির্বাচনে থাকতে হয়েছে। কিন্তু যে সকল অযোগ্য, অপ্রিয় মানুষকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। জনগণের কাছে নৌকার মাঝি পছন্দ না হওয়ায় আজ বিদ্রোহী প্রার্থীর খেতাব মিলেছে। তারপরও নির্বাচনী মাঠ থেকে সরিয়ে দিতে একের পর এক অপকৌশল প্রয়োগ করে যাচ্ছেন ক্ষমতাসীনরা।
একাধিক স্বতন্ত্র প্রার্থীর সাথে আলাপকালে তারা বলেন, নির্বাচনে কেন দাঁড়িয়েছি এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে পদে পদে বাধার সম্মুখীন হচ্ছি। অনেক সময়ে ঘর থেকে বের হতে নিষেধ, নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা করতে নিষেধ, হামলা মামলা ও নানা শাসনের মধ্যেই নির্বাচনী মাঠে রয়েছি। শেষ পর্যন্ত কী হয় দেখার অপেক্ষায়। তারা বলেন, ক্ষমতাসীনরা যত বড় হোক, ভয় পাই না। জনগণ যাকে চাইবে, যাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন তিনিই তো হবেন। এতে ভয় ভীতির কী আছে। শেষ পর্যন্ত লড়তে নির্বাচনী মাঠে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন অনেক স্বতন্ত্র প্রার্থী।
সুশাসনের জন্য প্রচারাভিযান (সুপ্র) পাবনার সাধারণ সম্পাদক, উন্নয়ন কর্মী আব্দুস সালাম বলেন, দলীয় প্রতীকে নির্বাচন, মনোনয়ন বাণিজ্য, তৃণমূল উপেক্ষা করে যোগ্য প্রার্থী না দেওয়ায় দলের মধ্যেই বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার আরও কঠোর হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করলে প্রাণহানির শঙ্কা থাকতো না। মাঠ পর্যায়ে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে নির্বাচনী মাঠ ভোট উৎসবের আমেজে রাখা গেলে আইন শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ড অনেকাংশে লোপ পাবে বলে মনে করি।
রাজনৈতিক নেতা ও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি শাহীনুজ্জামান শাহীন বলেন, আওয়ামী লীগ একটি বৃহৎ রাজনৈতিক সংগঠন। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মনোকষ্ট দেখা দিতে পারে। কিন্তু দলের ঊর্ধ্বে ব্যক্তি স্বার্থকে বড় করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। দল করতে হলে দলীয় সিদ্ধান্ত মানতে হবে। যারা দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হয়েছেন, ইতোমধ্যে তারা দল থেকে শাস্তিও পেয়েছেন।
পাবনা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হাসান শাহীন জানান, দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যারা অবস্থান করছেন, তারা নিজেদের বিপদ নিজেরাই এনেছেন। দলকে ভালোবেসে, দলের নীতি আদর্শ ও ঐতিহ্যকে সম্মান জানিয়ে নিজেদের ভুল শুধরে স্বস্থানে ফিরে এসে দলকে গতিশীল করতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার তাগিদ দেন এই নেতা।
পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক প্রিন্স বলেন, “স্থানীয় সরকার নির্বাচন ঘিরে পাবনায় ইতোমধ্যে যে সকল সহিংসতা ঘটেছে, আসলে এগুলো রাজনৈতিক কোনো ইস্যু নয়। বিচ্ছিন্ন ও ব্যক্তি কেন্দ্রিক ঘটনাগুলোই রাজনৈতিক রং দিয়ে একটি শ্রেণি ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে। আমরা রাজনৈতিক ভাবে যথেষ্ট সোচ্চার ও সতর্ক রয়েছি। রাজনৈতিক কোনো সংঘাত কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। যদি কেউ করে থাকে, তাহলে তদন্ত করে প্রমাণ সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
নৌকা প্রতীক দেওয়া আর মনোনয়ন বাণিজ্যও সংঘাতের অন্যতম কারণ বলে মনে করেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) পাবনা জেলা শাখার সভাপতি আব্দুল মতীন খান। তিনি বলেন, “যারা নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছে তারা সবাই আওয়ামী লীগের। এদের সাথে জেলা আওয়ামী লীগের অনেক নেতার গোপন আঁতাত থাকে। নৌকা পেলে প্রকাশ্যে তার পক্ষে কাজ করে। বিদ্রোহী হলে গোপনে করে। আর এসব ক্ষেত্রে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তেমন কোনো ভূমিকা চোখে পড়ছে না। একজন প্রার্থী বিশাল মিছিল বের করলে বা দুই পক্ষ মিছিল বের করলে সেখানে পুলিশ প্রটেকশন থাকলে তো সংঘাত বাধে না। পুলিশের আরো তৎপর হওয়া উচিত।”
পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল রহিম লাল বলেন, “আঞ্চলিক প্রভাব বিস্তারের কারণে ইউপি নির্বাচনে সংঘাতের সৃষ্টি হচ্ছে। জেলার নেতাদের মধ্যে সমন্বয়ের কোনো অভাব নেই। আমরা বারবার সভা করেছি, চিঠি দিয়েছি। বিদ্রোহী হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যারা বিদ্রোহী হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে দলীয় ও সাংগঠনিক ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়েছে। তারপরও কেউ যদি না শুনে সংঘাতে জড়ায় তাহলে কী করার আছে। শুধু পাবনা নয়, সারাদেশে একই চিত্র।“
রেজাউল রহিম লাল আরো বলেন, “ইউপি নির্বাচনে যারা মারা যাচ্ছে তারাও তো আমাদের দলের লোক। এটা এখন থেকেই সমাধানের পথ না খুঁজলে তো আগামী জাতীয় নির্বাচনে তার বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। সংঘাতময় পরিস্থিতির লাগাম টেনে ধরতে এখনই কেন্দ্রীয়ভাবে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।”
এখানে পুলিশ বা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো গাফিলতি নেই দাবি করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মাসুদ আলম বলেন, “আমরা তো চাই না নির্বাচনী সহিংসতায় কারো মৃত্যু হোক। আমরা সর্বোচ্চ সতর্কতা ও নজরদারির সাথে কাজ করছি। প্রতিটি ইউনিয়নে একজন পরিদর্শকের নেতৃত্বে আলাদা টিম করে দেওয়া হয়েছে। তারা সেই ইউনিয়নে ভোটের আগে থেকেই কাজ করছে। এখন এর মাঝে কোনো জায়গায় হঠাৎ করেই সংঘর্ষ বা হত্যার ঘটনা ঘটলে সেটা কীভাবে প্রতিহত করা যাবে বলেন। আগে থেকেই তো আর সবকিছু জানা যায় না।“
জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, “অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্পন্ন করার জন্য সকল ধরণের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। কয়েকটি ধাপে নির্বাচন শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের কোনো ধরণের গাফিলতি বা দায়িত্ব কর্তব্যে অবহেলা নেই। বিচ্ছিন্ন কোনো কারণে কিছু ছোটখাটো ঘটনা ঘটতে পারে। এটা নির্বাচন কমিশনের ওপর বর্তায় না।”
মাহবুবুর রহমান আরও বলেন, “নির্বাচন প্রভাব মুক্ত করতে আমরা কাউকে ছাড় দেই না। যেখানে যেমন অভিযোগ আসছে, সেখানে সেই ভাবেই আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। বেড়া পৌরসভা নির্বাচনে স্থানীয় সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসায় তাকে এলাকা ত্যাগ করানো হয়েছে। চতুর্থ ধাপের নির্বাচনেও সদর আসনের সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে আচরণবিধি ভঙ্গের কথা শুনেছি। অভিযোগ না পেলেও তাকে কিন্তু নিজ এলাকায় না থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।”
আগামী ২৬ ডিসেম্বর চতুর্থ ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে পাবনা সদর, আটঘরিয়া পৌরসভা ও ইউনিয়ন এবং ভাঙ্গুড়া উপজেলার ইউনিয়নগুলোতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।