• ঢাকা
  • সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইউনিয়ন পরিষদ দুধ ও গোলাপ জল দিয়ে পরিষ্কার


পাবনা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জানুয়ারি ১২, ২০২২, ০৯:২৩ পিএম
ইউনিয়ন পরিষদ দুধ ও গোলাপ জল দিয়ে পরিষ্কার

ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দুইবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হয়েছিলেন পাবনার চাটমোহর উপজেলার গুনাইগাছা ইউনিয়নের বাসিন্দা রজব আলী বাবলু। ইউপি কার্যালয়ে অসামাজিক কাজ দেখে মনোকষ্টে ভুগেছেন, কিন্তু কখনও কিছু করতে পারেননি। তাই তৃতীয়বার এসে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে তিনি পরিষদে বসার আগে দুধ ও গোলাপ জল দিয়ে পরিষ্কার করে নিলেন পরিষদ কার্যালয়।

মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) বিকেলে উপজেলার গুনাইগাছা ইউনিয়ন পরিষদে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে কৌতুহলী মানুষ পরিষদে দেখতে আসেন। অনেকে ছবি তুলে কেউবা ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। আর এতেই ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে উপজেলা জুড়ে।

এর আগে রোববার (৯ জানুয়ারি) জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে চাটমোহরের ১১টি ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানদের সঙ্গে শপথ গ্রহণ করেন রজব আলী বাবলু। বুধবার (১২ জানুয়ারি) তিনি মিলাদ পড়িয়ে, ফিতা কেটে পরিষদের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এ সময় সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। পরিষদ সচিবের কাছ থেকে দায়িত্ব বুঝিয়ে নেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান রজব আলী বাবলু বলেন, “এই পরিষদে আগে অনেক অসামাজিক কার্যক্রম পরিচালিত হত। তাই পরিষদকে পবিত্র করতে আমার কর্মী-সমর্থকদের পানি দিয়ে ধুয়ে দিতে বলেছিলাম। তারা উৎসাহী হয়ে আনন্দ করে দুধ ও গোলাপ জল দিয়ে ধুয়ে দিয়েছে।” 

রজব আলী বাবলু আরও বলেন, “বুধবার সকালে প্রথম পরিষদে যাওয়ার আগে আমি সেখানে ক্বারী, মুসুল্লি দিয়ে মিলাদ পড়িয়ে আল্লাহর নাম নিয়ে পরিষদের প্রথম কর্মদিবস শুরু করেছি। যেহেতু আমি মুসলমান, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি। তাই পরিষদকে পবিত্র করে নতুনভাবে শুরু করেছি। আশা করছি, এখন থেকে এই ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে কোনো অনৈতিক বা খারাপ কাজ হবে না।”

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, “দায়িত্ব গ্রহণ করা অনুষ্ঠানে তিনি আমাকে ডাকেন নি। সচিব এসে স্বাক্ষর করে নিয়ে গেছে। শুনলাম, আমি নাকি খারাপ মানুষ ছিলাম, পরিষদে খারাপ কাজ হতো, তাই দুধ আর গোলাপ জল দিয়ে ধুয়ে দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি। দুইবার হেরে, এবার জিতেছেন, তাই আনন্দে গদগদ হয়ে এটা করেছেন তিনি। এটা নিচু মানসিকতার পরিচয়।”

নুরুল ইসলাম বলেন, “দুইবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলাম। কখনও অতীত চেয়ারম্যানদের অসম্মান করিনি। ওই পরিষদের জমি আমার আর সাবেক চেয়ারম্যান আফজাল হোসেনের দেওয়া। নতুন ভবন নির্মাণ, রঙ করা ও ফার্নিচার সব আমার হাতে করা। সেখানে আমি খারাপ কাজ করব এমন প্রশ্নই ওঠে না। বর্তমান চেয়ারম্যানও সারা জীবন থাকবেন না। একদিন যেতে হবে।”

গত ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে রজব আলী বাবলু তার আপন ভায়রা দুইবারের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামকে বিপুল ভোটে পরাজিত করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

Link copied!