সিরাজগঞ্জের তাড়াশে প্রায় আড়াই শ বছরের ঐতিহ্যবাহী দইমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। একই দিনে সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকাতেও দইমেলা অনুষ্ঠিত হয়।
শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তাড়াশ বাজার ও সিরাজগঞ্জ শহরের মুজিব সড়কে এ দইমেলা অনুষ্ঠিত হয়।
হিন্দুধর্মাবলম্বীদের বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজা উপলক্ষে আড়াই শ বছর ধরে এ দইমেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এ মেলায় বাহারি আকার ও স্বাদের দইয়ের পসরা সাজিয়ে বসেন দই বিক্রেতারা। সাজ সাজ রব পড়ে যাওয়া মেলায় ক্ষীরসা দই, শাহী দই, টক দই, শ্রীপুরী দইসহ বাহারি নাম ও স্বাদের দই কিনতে ভিড় করেন বিভিন্ন স্থানের ক্রেতারা।
জানা যায়, চলনবিল-অধ্যুষিত সিরাজগঞ্জের তাড়াশের তৎকালীন জমিদার পরম বৈষ্ণব বনোয়ারী লাল রায় বাহাদুর প্রথম দই মেলার প্রচলন করেছিলেন। এলাকায় জনশ্রুতি আছে, জমিদার রাজা রায়বাহাদুর নিজেও দই ও মিষ্টান্ন পছন্দ করতেন। তাই জমিদার বাড়িতে আসা অতিথিদের আপ্যায়নে এ অঞ্চলে ঘোষদের তৈরি দই পরিবেশন করতেন। আর সে থেকেই জমিদারবাড়ির সামনে রসিক রায় মন্দিরের মাঠে সরস্বতী পূজা উপলক্ষে দিনব্যাপী দইমেলার প্রচলন শুরু করেন। সেই থেকে প্রতি বছর শীত মৌসুমের মাঘ মাসে সরস্বতী পূজার দিন শ্রী পঞ্চমী তিথিতে দই মেলার শুরু হয়। সেই ধারাবাহিকতায় সিরাজগঞ্জ শহরেও বসে দইয়ের মেলা।
মেলায় আসা ক্রেতা পলাশ কর্মকার বলেন, “সিরাজগঞ্জে প্রতিবছর এই দই মেলা অনুষ্ঠিত হয়। আমরা এই দই কিনতে আসি। এই দই খুব সুস্বাদু, তবে দাম একটু বেশি।”
আরেক ক্রেতা সুকুমার রায় বলেন, “সরস্বতী পূজা উপলক্ষে এই দইয়ের মেলা হয় সাধারণত। প্রতিবছরের মতো এবারও দই কিনতে এসেছি। এখানে বিভিন্ন ধরনের দই পাওয়া যায়।”
বিক্রেতা সাধন ঘোষ বলেন, “এই মেলায় দইয়ের চাহিদা বেশি। প্রতিবছরের মতো এবারও ক্রেতাদের চাহিদা রয়েছে। চিনি দুধের দাম বেশি হওয়ায় দাম একটু বেশি। ক্ষীরসা দই, শাহী দই, টক দই, বিভিন্ন ধরনের দই বিক্রয় করছি। তবে আবহাওয়া খারাপের জন্য একটু ক্রেতা কম।”