ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’-এর কারণে জাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কক্সবাজারের সেন্টমার্টিন দ্বীপে আটকে পড়েছেন একদল চিকিৎসক।
রোববার (৫ ডিসেম্বর) তাদের ফেরার কথা ছিল। দ্বীপবন্দী সময় কাটাচ্ছিলেন তারা। তাই এই সময়টুকু দ্বীপের বাসিন্দাদের চিকিৎসাসেবা দিয়ে কাটালেন তারা।
সোমবার ((৬ ডিসেম্বর) সেন্টমার্টিন ১০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে সকাল ১১টা থেকে দুপুর ৪ টা পর্যন্ত ৩০ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এই সেবা দেন।
ভ্রমণে আসা ওই চিকিৎসক দলের প্রধান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিউরোসার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, “মানুষের কল্যাণে কাজ করা চিকিৎসকদের কাজ। তাই বেড়াতে এসে আটকা পড়ার পর কিছুটা সময় তাদের সঙ্গে ব্যয় করেছি।
তিনি এবং তার দল রোববার রাতে হোটেল ও আজ (সোমবার) বেলা ১১টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত সেন্টমার্টিন ১০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের ডরমিটরিতে এই চিকিৎসাসেবা দেন।”
এসময় তাদের সহযোগিতা করেছেন হাসপাতালে সহকারী চিকিৎসা কর্মকর্তা সৈকত হাসান বলে জানান তিনি।
ওই দলের আরেক চিকিৎসক ডা মিজানুর রহমান বলেন, “পরিবারের সদস্যসহ চিকিৎসকদের ৬৭ জনের দলটি গত শনিবার সেন্টমার্টিন দ্বীপে বেড়াতে আসে। আটকে পড়া সবার মতামতের ভিত্তিতে দ্বীপের বাসিন্দাদের চিকিৎসা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই দলের ৬৭ জনের মধ্যে ৩০ জন চিকিৎসক। তাদের অধিকাংশই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত। এর মধ্যে মেডিসিন, শিশুরোগ, গাইনিসহ বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছিলেন।”
এ বিষয়ে দ্বীপের বাসিন্দা জয়নাল আবেদীন বলেন, “বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়ার খবরে প্রচুর নারী–পুরুষ ভিড় করেছেন সেন্টমার্টিন হাসপাতালে। নারী-পুরুষের পাশাপাশি শিশুদের উপস্থিতিও ছিল বেশ চোখে পড়ার মতো।
সেন্টমার্টিন ইউপির চেয়ারম্যান নূর আহমদ বলেন, “৮ বর্গ কিলোমিটারের দ্বীপটিতে ৬ হাজার ৭২৯ জন মানুষের জন্য ও দ্বীপের বেড়াতে আসা পর্যটকদের কথা চিন্তা করে ২০০৯ সালে ছয় কোটি টাকা ব্যয়ে একটি আন্তর্জাতিক মানের ১০ শয্যা বিশিষ্ট একটি হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়। তবে পর্যাপ্ত পরিমাণে জনবল নিয়োগ না হওয়ায় এখন পর্যন্ত আউটডোর চালু রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একদল চিকিৎসকের স্থানীয় বাসিন্দাদের চিকিৎসা দেওয়ায় জনগণের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পড়েছে।”
এদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’-এর কারণে জাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শনিবার (৩ ডিসেম্বর) প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনে বেড়াতে আসা দেড় হাজার পর্যটক আটকা পড়েছেন। আজও আবহাওয়া অধিদপ্তরের ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত বলবৎ থাকায় কোনো ধরনের জাহাজ সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফ, কক্সবাজার কিংবা চট্টগ্রামের পথে চলাচল করেনি।