ঢাকার সাভারে রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের নিখোঁজ অধ্যক্ষ মিন্টু চন্দ্র বর্মণের ছয় খণ্ড লাশ তার গ্রামের বাড়ি লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা উপজেলার বাড়াইপাড়া এলাকায় দাহ করা হয়েছে। বুধবার (১১ আগস্ট) সকালে লাশ দাহ করা হয়।
এর আগে গত মঙ্গলবার গভীর রাতে মরদেহ ওই এলাকায় পৌঁছালে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। স্বজনদের কান্নায় আকাশ বাতাস ভারি হয়ে আসে।
এসময় দেখা যায়, নিহত মিন্টু চন্দ্রের মা ত্রিবিনি বালা বাবা বাবা বলে আত্মচিৎকার করছেন। ‘মোর বাবা কি অপরাধ করেছিল, উমরাগুলা মোর বাবাক ক্যানে কাটিল’ এমনভাবে নানা প্রলাপ বোক ছিলেন বৃদ্ধা মা। আর তার বাবা শরৎচন্দ্র বর্মন কথা বলা বন্ধ করে নির্বাক তাকিয়ে আছেন। এদিকে সোসাল মিডিয়া ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে নিহত মিন্টু চন্দ্র হত্যার ন্যায় বিচারের দাবি।
বুধবার (১১ আগস্ট) দুপুরে হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে হাতীবান্ধা উপজেলার মেডিক্যাল মোড় গোল চত্বরে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মানববন্ধনে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান আতি, সহকারী শিক্ষক মঞ্জুর হোসেন মজনু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এতে সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করে অপরাধীদের শাস্তির দাবি তোলেন।
নিহত মিন্টু পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে বড়। তিনি হাতীবান্ধা এসএস সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০০০ সালে এসএসসি, এরপর আলিমুদ্দিন সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি এবং রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে অনার্স শেষ করে চাকরির সন্ধানে ঢাকা যান।
নিহত মিন্টু চন্দ্র বর্মণ লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার বড়াইপাড়া গ্রামের শরৎচন্দ্রের বড় ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায় বসবাস করতেন। এছাড়া সে সাভার রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ। গত ১৩ জুলাই আশুলিয়ার জামগড়া সংলগ্ন বেরন এলাকার রূপায়ণ মাঠের নিজ বাসা স্বপ্ন নিবাস থেকেই নিখোঁজ হয়। সাতদিন বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করে অবশেষে ২২ জুলাই আশুলিয়া থানায় নিখোঁজের জিডি করেন মিন্টুর ছোট ভাই দীপক চন্দ্র বর্মণ। পরে (৯ আগস্ট) সোমবার দুপুরে সাভার উপজেলার বেরন এলাকায় অধ্যক্ষ মিন্টু চন্দ্রের নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাটির নিচে পুঁতে রাখা অবস্থায় ৬ খণ্ড লাশ উদ্ধার করে র্যাব-৪। এ খবর পাওয়ায় মিন্টু চন্দ্রের গ্রাম জুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে।