কফি হাউজে বসে কফির চুমুকে যমুনা নদীর নৈস্বর্গিক দৃশ্য উপভোগ, সন্ধ্যার সমীরন হাওয়ার স্বাদ নিতে কার না মন চাইবে! এমনই সুযোগ করে দিল সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের যমুনাপাড়ের লোহিন্দাকান্দী যমুনা কফি হাউজ এন্ড রেস্টুরেন্ট। ইতোমধ্যে দর্শনার্থীদের নিয়ে জমে উঠছে এই কফি হাউজটি। প্রতিদিন সকাল, দুপুর, বিকেল ও রাতের আলো আঁধারে সেখানে ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা।
যমুনা তীর রক্ষা ও বন্যা নিয়ন্ত্রিত বাঁধের কোলঘেষে গড়ে উঠেছে এই কফি হাউজটি। এখানে বিনোদনপ্রেমীদের ভিড় বাড়ছে। এতে নদী সিকস্তি এলাকার মানুষের আর্থ সামাজিক প্রেক্ষাপট বদলে যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এ বছর ঈদুল আযহার পর এই কফি হাউজের বেশ কিছু ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। এরপর থেকেই কফি হাউজকে ঘিরে শুরু হয়েছে মানুষের উন্মাদনা। দলে দলে পরিবার নিয়ে সেখানে ভিড় করছেন অনেকে।
কর্মব্যস্ত জীবনের ক্লান্তি ঘোচাতে শহরের কোলাহল ছেড়ে প্রিয়জনদের সঙ্গে প্রকৃতির মাঝে ঘুরে বেড়াতে যমুনা পাড়ে অনেকেই ছুটে যাচ্ছেন। খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে স্নিগ্ধ বাতাসে প্রাণভরে নিশ্বাস নিচ্ছেন। ছুটির দিনে প্রকৃতি কন্যা যমুনার পাড়ে হাজারও প্রকৃতি প্রেমীদের মিলনমেলায় পরিণিত হয়েছে।
শুধু কফি হাউজে নয়, সুযোগ পেলেই যমুনায় বন্যা নিয়ন্ত্রিত বাঁধ ও এর আশপাশের বিভিন্ন স্পটে দর্শনার্থীরা প্রতিনিয়তই যাচ্ছেন। দুই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় এই বন্যা নিয়ন্ত্রিত বাঁধ। যা এখন দর্শনার্থীদের প্রিয় স্থানের জায়গা করে নিয়েছে।
যমুনা তীরের প্রতিটি স্পটে বিভিন্ন বয়সের নারী, পুরুষ ও শিশুদের উপস্থিতি রয়েছে। কফি হাউজে ভিড় হয় দুপুরের পর থেকেই। কেউ নৌকা ভাড়া করে, আবার কেউ তীরে দাড়িয়ে নদীর অপরূপ সৌন্দর্য নিচ্ছে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির তোয়াক্কা না করেই স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব ভেঙে বিভিন্ন স্থানে আনন্দে মেতে ওঠেছে সাধারণ মানুষ।
প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরের শাহজাদপুর শহর থেকে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে কফি হাউজে বেড়াতে এসেছেন শিক্ষক রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, "লকডাউনে ঘরবন্দী ছিলাম। পরিবারের সবাই অস্বস্তিতি ছিল। তাই নির্মল বিনোদনের স্বাদ নিতে যমুনা পাড়ে এসেছি। ক্ষনিকের জন্য হলেও স্ত্রী ও শিশুদের নিয়ে ভাল সময় কাটছে।"
যমুনা কফি হাউজ এন্ড রেস্টুরেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্যারিষ্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, "কৃত্রিম নয়, সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক পরিবেশে কফি হাউজটি বানানো হয়েছে। বর্ষায় মনে হবে নদীর মাঝেই কফি পান করা হচ্ছে।"
"সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে, প্রশাসনের আইন মেনে চলার চেষ্টা করছি। দর্শনার্থীদের আনন্দ বাড়িয়ে দিতে আরও সাজসজ্জা করা হবে। শিশুদের জন্য কিছু ইভেন্ট যোগ করা হবে। এখানে পর্যায়ক্রমে পর্যটন এলাকা হিসেব গড়ে তোলা হবে।"