স্বচ্ছ পানিতে ভেসে পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য যে জায়টাগা সবচেয়ে উপযুক্ত সেটা হলো রাঙামাটি জেলা। পানি, ঝরনা এবং পাহাড় একসঙ্গে দেখার চমৎকার সুযোগ করে দেয় রাঙামাটি জেলা। আর সেজন্যই সব ঋতুতেই এই জেলা পর্যটকের পদচারণায় মুখরিত।
বৃহৎ এই জেলার বেশ জায়গা আপনি একটু পরিকল্পনা করলে একদিনেই ঘুরে দেখতে পারেন। সেখানকার ঝরনা, কৃত্রিম হ্রদ আপনাকে মুগ্ধ তো করবেই তার সঙ্গে চোখ জুরিয়ে যাবে সেখানকার পানির সঙ্গে সবুজের মিতালী। সবকিছুই দেখা সম্ভব একদিনের ভ্রমণে। তবে তার জন্য চাই সঠিক পরিকল্পনার। চলুন দেখে নেই একদিনের ভ্রমণে রাঙামাটি জেলার কোন কোন জায়গা দেখবেন-
কাপ্তাই হ্রদ
রাঙ্গামাটির কাপ্তাই উপজেলায় অবস্থিত ১১ হাজার বর্গ কিলোমিটার আয়তনের কৃত্রিম হ্রদ কাপ্তাই হ্রদ রাঙ্গামাটির অন্যতম দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে একটি। কৃত্রিম হলেও প্রকৃতি যেন তার সবটুকু রং ও রূপ ঢেলে দিয়েছে কাপ্তাই হ্রদকে। এর সৌন্দর্য মুগ্ধ করবে যেকোনো মানুষকে। হ্রদের চারপাশ জুড়ে ছোট-বড় পাহাড়, পাহাড়ের পাশ দিয়ে বয়ে চলা আঁকাবাঁকা রাস্তা, মাঝেমধ্যে ঝরনার দেখা পাওয়া আপনার চোখ জুরিয়ে যাবে। বছরের যে কোন সময়েই আপনির ইঞ্জিন নৌকায় করে ঘুরে বেড়াতে পারেন কাপ্তাইয়ের তীর ঘেঁষে গড়ে উঠা বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে।
পলওয়েল পার্ক
কাপ্তাই হ্রদের পানিতে নৌকা ভাসিয়ে আপনি যেতে পারেন পলওয়েল পার্কে। জনপ্রতি ৩০ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে যেতে পারেন এই পার্কে। এই পাহাড় থেকে দেখতে পারবেন বিস্তৃত হ্রদের সৌন্দর্য ও পার্কের নানান স্থাপত্য সৌন্দর্য। রয়েছে ঝুলন্ত সেতু। সেতু পার হলেই দেশের প্রথম লাভ পয়েন্টে।
যেখানে ভালবাসা বন্ধনকে চিরস্থায়ী করতে যুগলে গিয়ে লাভ লক পয়েন্টে ভালবাসার তালা ঝুলিয়ে তালার চাবি কাপ্তাই হ্রদের পানিতে ফেলে দেয়।
ঝরনা
পাহাড়ের উপর থেকে গা ভেসে পানি পরার দৃশ্য আবার একই সঙ্গে সেই পানিতে নিজের গা ভেজানো দুটাই সম্ভব রাঙামাটিতে। কাপ্তাই হ্রদে ভাসানো নৌকা দিয়েই আপনি দেখে আসতে পারেন ৩০০ ফুট উঁচু থেকে আছড়ে পড়া শুভলং ঝরনার জলধারা৷দেখতে পারেন ১৫০ ফুট উচুঁ ধুপপানি ঝরনা। ঝরনার মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য আর অপূর্ব সুরের মূর্ছনা পর্যটকদের বিমোহিত করে। তবে ঝরনার পরিপূর্ণ রূপ দেখতে পাবেন কেবল বর্ষাকালেই।
ঝুলন্ত সেতু
কাপ্তাই হ্রদের দুই পাহাড়কে এক সুতোয় নিয়ে এসেছে এই ঝুলন্ত সেতু। সেতুটি ৩৩৫ ফুট দীর্ঘ, ৮ ফুট প্রশস্ত। ১৯৮৬ সালে নির্মিত হয় এই ব্রিজটি এখন `সিম্বল অব রাঙ্গামাটি` হয়ে উঠেছে। শহরের যে কোনো জায়গা থেকে সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে ঝুলন্ত সেতুতে যাওয়া যায়।
আরণ্যক
রাঙামাটি শহরে গিয়ে যদি কৃত্রিমতার মধ্যে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে চান তাহলে যেতে পারেন সেনাবাহিনীর পরিচালনায় গড়ে ওঠা আরণ্যক পার্কে। পরিচ্ছন্ন ও পরিপাটি এই পার্কে গেলে হ্রদের সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়।
চাকমা রাজবাড়ি
রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদ কৃত্রিম ভাবে তৈরি। আর তখন পুরোনো রাঙামাটির সঙ্গে ডুবে যায় পুরোনো রাজবাড়িও। পরে ১৯৬০ সালে পুরোনো রাজবাড়ি ছেড়ে শহরের মধ্যখানে বর্তমান স্থানে চাকমা রাজবাড়ি গড়ে তোলা হয়। শহরের রাজবাড়ি এলাকা থেকে নৌকা দিয়ে পেরিয়ে চাকমা রাজবাড়ি যেতে হয়। যেখানে গেলে চাকমা ঐতিহ্য চোখে পড়বে।