বিজয়ের উল্লাসে ‘বাঘিনী’ মায়ের গর্ব

রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২০, ২০২২, ০৭:০৫ পিএম

দক্ষিণ এশিয়ার সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ। প্রথমবারের মতো টুর্নামেন্টে সেরার মুকুট মাথায় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশের বাঘিনিরা। এই দলে ছিলেন রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি অঞ্চলের ৫ নারী।

তারা হলেন, রাঙামাটির ঋতুপর্ণা চাকমা ও রুপনা চাকমা এবং খাগড়াছড়ির আনুচিং, আনাই ও মনিকা।

সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) কাঠমুন্ডুতে নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশর মেয়েরা। এতে দ্বিতীয়বারের চেষ্টায় বাংলাদেশ ঘরে তুলতে পেরেছে এই শিরোপা। এ জয়ের পর অভিনন্দনের সাগরে ভাসছে বাংলাদেশে নারীরা। সেই টিমে রয়েছে পাহাড়ের ৫ বাঘিনী।

সরেজমিনে রুপনার চাকমার বাড়ি ও এলাকাজুড়ে প্রশংসা ও আনন্দের আমেজ দেখা যায়।

মেয়ের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার অনুভূতি জানিয়ে রুপনার মা কালাসোনা চাকমা বলেন, “আমার মেয়ে আজ দেশ পেরিয়ে বিদেশে খেলতে গেছে, এতে আমি খুব খুশি, ভালো লাগছে। আমার মেয়ে শান্তিময় ও ধীরসেনের  সহযোগিতায় এতো দূর এগিয়ে গেছে। মেয়ের খেলা আমি মোবাইলে দেখেছি। খেলা শেষে মেয়ে ভিডিও কলে আমাকে কাপ দেখিয়ে বলেছে, ‘মা অনেক কষ্টের বিনিময়ে এটা পেয়েছি।’ আমার মেয়ে খেলায় জিতে যাওয়ায় আমি অনেক খুশি, যা বলে বুঝাতে পারব না।”

রুপনার বড় ভাই শান্তি জীবন চাকমা বলেন, “জমিতে কাজ করায় বোনের খেলা দেখতে পারিনি। মা আমাকে ফোন করে বলেছে। আমি শুনে খুব খুশি হয়েছি। আমাদের বোন পুরো বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করেছে।”

স্থানীয় আলো বিকাশ চাকমা বলেন, “রুপনা আমাদের এলাকার মেয়ে। ছোটবেলা থেকে আমরা রুপনাকে ফুটবলের প্রতি আর্কষণ দেখেছি। সে মেয়েদের সঙ্গে না খেলে ছেলেদের সঙ্গে খেলত। গতকাল তার খেলা আমরা দেখেছি। তারা নেপালের  বিপক্ষে খেলে যে গৌরব অর্জন করেছে, আমরা গ্রামবাসীরা সত্যিই খুব আনন্দিত ও গর্বিত।”

ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বার রিপনা চাকমা বলেন, “রুপনাদের পরিবারের অবস্থা তেমন ভালো না। জন্ম থেকে সে বাবার মুখ দেখে নাই। ছোটবেলা থেকে সে ফুটবল খেলত। গতকালকে সে বাংলাদেশের গোলরক্ষক হয়ে  নেপালের বিপক্ষে খেলে জয়ী হয়েছে। তার এই অর্জন আমাদের এলাকার, বাংলাদেশের সকলের।”

মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকালে জেলা প্রশাসক রুপনার বাড়ি ও তার পরিবারে সঙ্গে দেখা করতে যান  এবং রুপনার মায়ের হাতে দেড় লাখ টাকার চেক তুলে দেন।

রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, “আজ  রুপনার মায়ের সঙ্গে দেখা হলো। তাকে সম্মান জানাতে পেরে আমি সম্মানিত বোধ করছি। তাদের পরিবারের জন্য যা করার আমরা করব।”