কাতার বিশ্বকাপ থেকে বাদ পড়ার শঙ্কা ইকুয়েডরের

সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২২, ০৬:৩৪ পিএম

কাতার বিশ্বকাপ শুরুর আগেই বিতর্ক শুরু হয়ে গেছে এই আসরের মূল পর্বে জায়গা করে নেওয়া ইকুয়েডরকে নিয়ে। নিয়ম ভেঙ্গে অযোগ্য খেলোয়াড় মাঠে নামানোর চরম মূল্য দিতে হতে পারে ইকুয়েডরকে। বিশ্বকাপের মূল আসর থেকে বাদ পড়তে পারে দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের দেশটি।

ইকুয়েডরের খেলোয়াড় বায়রন কাস্তিলোর নাগরিকত্ব নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল বিশ্বকাপে জায়গা পেতে ব্যর্থ হওয়া চিলি। চিলির অভিযোগ ছিল ভুয়া জন্ম সনদ ব্যবহার করেছে কাস্তিয়ো, তার জন্ম ইকুয়েডরে নয় বরং কলম্বিয়ায়। এ বছরের মে মাসে চিলি ফিফার কাছে এ বিষয়ে আবেদন জানায়।  জুনে কাস্তিলোকে ফিফা ইকুয়েডরের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দিলে চিলির আবেদন অকার্যকর হয়ে পড়ে। ফলে বিশ্বকাপ খেলতে ইকুয়েডরের আর কোনো বাধা থাকে না।

বৃহস্পতিবার কাস্তিলো ইস্যুতে রায় দেবে ফিফার আপিল কমিশন। তার আগে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘ ডেইলি মেইল’ বিস্ফোরক তথ্য ফাঁস করেছে কাস্তিলো সম্পর্কে। নতুন তদন্তে বেরিয়ে এসেছে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। এর ফলে বিশ্বকাপ থেকে বাদ পড়ার শঙ্কায় আছে ইকুয়েডর। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটির দাবি, ইকুয়েডর ফুটবল ফেডারেশন কাস্তিলোকে বাছাই পর্বের ম্যাচগুলোতে মাঠে নামানোর জন্য সত্যকে ধামাচাপা দিয়েছে।

তদন্তের মূল বিষয় ছিল- কাস্তিলোর জন্ম ইকুয়েডর নাকি কলম্বিয়ায়। চার বছর আগে তদন্তকারীদের দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জন্মসনদ জালিয়াতির কথা স্বীকার করেন কাস্তিয়ো। এবার সেই সাক্ষাৎকারের অডিও প্রকাশ করেছে মেইল অনলাইন। সাক্ষাতকারে কাস্তিয়ো যেসব বিষয় স্বীকার করেছেন, তাতে ফিফা তো বটেই, বিশ্ব ফুটবলও নড়েচড়ে বসার কথা।  

প্রকাশিত অডিওতে কাস্তিলো জানিয়েছেন, তার জন্ম ১৯৯৫ সালে কিন্তু ইকুয়েডরিয়ান জন্ম সনদে তার জন্মসাল দেওয়া ১৯৯৮। কাস্তিয়োর কলম্বিয়ান জন্মসনদে নাম দেওয়া আছে বায়রন হাভিয়ের কাস্তিয়ো সেগুরা। কিন্তু ইকুয়েডরিয়ান জন্ম সনদে নাম বায়রন ডেভিড কাস্তিলো সেগুরা। কাস্তিয়ো ফুটবল ক্যারিয়ার গড়তে কলম্বিয়ার টুমাকো ছেড়ে ইকুয়েডরের সান লরেঞ্জোয় যাওয়ার বিষয়েও তদন্তকারী কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছেন। ইকুয়েডরের একজন  ব্যবসায়ী কাস্তিয়োর নতুন নাম দিয়েছিলেন, তাকে চেনার কথাও স্বীকার করেন তিনি।

অবশ্য, কাস্তিয়োর নাগরিকত্ব নিয়ে ২০১৫ সালে প্রথম প্রশ্ন উঠেছিল। সে বছরই ইকুয়েডরের ঘরোয়া ফুটবল প্রথম খেলেন তিনি। তার ক্লাব নর্থ আমেরিকাকে জাল সনদ ব্যবহার করে খেলোয়াড় মাঠে নামানোয় নিষিদ্ধ করে এবং কাস্তিয়োর বিষয়টি পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে। সেই তদন্ত কর্মকর্তাদের কাছেই সব স্বীকার করেছিলেন কাস্তিয়ো। সেই অডিওই এখন ফিফার হাতে। এই অডিওর উপর ভিত্তি করেই বৃহস্পতিবার নতুন সিদ্ধান্ত জানাতে পারে ফিফা। সবকিছু বিবেচনা করে ফিফা কাস্তিয়োর ব্যাপারে তাদের আগে সিদ্ধান্ত বদলে নতুন সিদ্ধান্ত দিলে তাদের জন্যই বিব্রতকর হবে। ইকুয়েডরকে শেষ পর্যন্ত কাস্তিয়ো ইস্যুতে বিশ্বকাপ থেকে বাদ দেওয়া হলে লাভ হবে চিলি ও পেরুর। পাঁচে থেকে বাছাই পর্ব শেষ করে প্লে–অফ খেলেছে পেরু।

২০ নভেম্বর কাতার-ইকুয়েডর ম্যাচ দিয়ে কাতার বিশ্বকাপের মুল পর্ব শুরু হবে। ‘এ’ গ্রুপে ইকুয়েডরের প্রতিপক্ষ কাতার, সেনেগাল ও নেদারল্যান্ডস।