দলীয় প্রচেষ্টাতেই উড়ছে লঙ্কার বিজয় পতাকা

সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১২, ২০২২, ০১:০৬ এএম

আফগানিস্তানের বিপক্ষে এশিয়া কাপ মিশন শুরু করেছিল শ্রীলঙ্কা। সেই হারের পর অসংখ্য ক্রিকেটবোদ্ধার চোখে শ্রীলঙ্কার জন্য গ্রুপ পর্বের বাধা পার করাই ছিল কঠিন। সেই কঠিন কাজকে সহজ করে সুপার ফোরে নাম লেখায়। দ্বিতীয় রাউন্ডের বাধা পেরিয়ে ফাইনালে জিতে তুলে নিয়েছে শিরোপা। ৬ষ্ঠবারের মতো শিরোপা জয়ী লঙ্কানদের ভাষ্য, দলীয় প্রচেষ্টাতেই শিরোপা জেতা সম্ভব হয়েছে।

এশিয়া কাপে আফগানদের বিপক্ষে হারের পর পুরো টুর্নামেন্টে ভালো করার জন্য পরিশ্রমের মাত্রা বাড়িয়ে তুলেছিল শ্রীলঙ্কা। আর বাংলাদেশের বিপক্ষে পাওয়া জয় বাড়িয়ে দিয়েছিল আত্মবিশ্বাসের মাত্রা। এই জয়ই শ্রীলঙ্কাকে এনে দিয়েছে শিরোপা জয়ের আত্মবিশ্বাস। এমনটাই জানিয়েছেন, দলটির ক্রিকেটাররা। এছাড়াও টুর্নামেন্ট জিততে তারা নিজেদের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টাই করেছেন বলেও জানান।

এশিয়া কাপের শিরোপা জিতে ব্রডকাস্টারদের সাথে কথা বলেন লঙ্কান ক্রিকেটাররা। সেখানেই নিজেদের শিরোপা জয়ের কারণগুলো খোলাসা করেছেন তারা।

শিরোপা জয় নিয়ে চামিকা করুণারত্নে বলেন, “আমরা সাত বছর পর এশিয়া কাপ জিতলাম। এটা ভিন্ন একটা দল। দলে সব তরুণ তারকা। আমরা শুধু প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছিলাম। নিজেদের সর্বোচ্চটা দিয়ে সেরা পারফর্মেন্সের চেষ্টা ছিল। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ হেরে সবাই নিজেদের সর্বোচ্চ পারফর্মেন্স করার জন্য মুখিয়ে ছিল।”

পুরো টুর্নামেন্টজুড়ে দারুণ দাপট দেখিয়েছে শ্রীলঙ্কার উদ্বোধনী জুটি। ফাইনালে উদ্বোধনী জুটি ভালো না করলেও মিডল অর্ডারে বেঁচে যায় দলটি। মিডল অর্ডারে হওয়া জুটি ও ওপেনিং ব্যাটারদের রানে ফেরাটা দারুণভাবে দেখছেন ওপেনার কুশল মেন্ডিস।

তিনি বলেন, “রান পেয়ে দারুণ খুশি লাগছে। আমি আর পাথুম (নিশাঙ্কা) জুটি গড়তে পেরেছি। দ্রুত দুই-তিন উইকেট পড়লেও মিডল অর্ডারে দারুণ জুটি হয়েছে।”

স্পিনার ধনঞ্জয়া ডি সিলভার মতে জয়ের প্রধান কারণ দলীয় পরিকল্পনা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা। এছাড়াও নিজে সবসময় দলের হয়ে খেলার জন্য মুখিয়ে ছিলেন বলেও জানান তিনি।

বলেন, “আমি প্রথম ম্যাচে খেলেনি। কিন্তু আমি সব সময় অনুশীলন করে প্রস্তুত ছিলাম। আমরা সব দলের বিপক্ষেই দারুণ পরিকল্পনা করেছি। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পেরেছি।”

এশিয়া কাপের পুরোটা সময় ড্রেসিং রুম থেকে সাংকেতিকভাবে বার্তা দিয়ে আলোচনায় ছিলেন লঙ্কান কোচ ক্রিস সিলভারউড। নিজের পরিকল্পনা নয়, বরং দলের জয়ে শিষ্যদের ভূমিকাই বড় করে দেখছেন এই ইংলিশ।

বলেন, “আমরা নিজেদের জন্য বড় লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি। দারুণ বিষয় আমরা সেটা ছুঁতে পেরেছি। আমরা একটা পরিকল্পনাই করেছিলাম। দলের উপর আমার বিশ্বাস ছিল।”

এশিয়া কাপে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় ছিল শ্রীলঙ্কার অনভিজ্ঞ পেস আক্রমণ। স্কোয়াডে থাকা কোনো পেসারের ছিল না টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা। অভিজ্ঞতাহীন পেস আক্রমণকে সেরা মানেন কোচ সিলভারউড।

বলেন, “অভিজ্ঞতাহীন এক পেস আক্রমণ নিয়ে এসেছি। তারা দারুণ পারফর্ম করেছে। আলাদাভাবে কাউকে কৃতিত্ব দেওয়া যাবে না। পুরোটাই দলের কৃতিত্ব।”

টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছেন স্পিনার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। তার মতেও পুরো টুর্নামেন্টে ভালো খেলায় শিরোপা জিততে পেরেছে শ্রীলঙ্কা। আফগানিস্তান ম্যাচের পরই খোলস ছেড়ে বেড়িয়েছিল শ্রীলঙ্কা।

হাসারাঙ্গা বলেন, “ছেলেরা পুরো টুর্নামেন্টজুড়ে ভালো খেলেছে। বিশেষ করে আফগানিস্তানের বিপক্ষে হারের পর।”

টুর্নামেন্টে নিজের খেলার বিষয়ে করেন, “উপমহাদেশের কন্ডিশনে আমি বোলিং করতে ভালোবাসি। এখানে স্ট্যাম্প বরাবর বল করতে চেয়েছি। এর কারণেই আমি সফল। রান না দিয়ে ডটের দিকেই বেশি মনোযোগী ছিলাম।”

এশিয়া কাপে ৬ষ্ঠবারের মতো শিরোপা জিতলো শ্রীলঙ্কা। তাদের উপরে অবস্থান করছে ভারত। এশিয়া শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট ৭ বার ঘরে তুলেছিল ভারত।