যুদ্ধ-বিধ্বস্ত আফগানিস্তানে ক্ষমতা দখল করেছে তালেবান। আফগানিস্তানে রাজনীতির ব্যাপক পরিবর্তন হলেও দেশের ক্রিকেটে এর প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছেন দেশটির ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাহী হামিদ শিনওয়ারি। তিনি বলেন, তালেবানরা খেলাকে ভালোবাসে এবং সমর্থন করে।
সংবাদ মাধ্যম পিটিআইকে শিনওয়ারি আশ্বস্ত করেন যে, তালেবানরা দেশের শাসনভার দখল করার পরেও জাতীয় ক্রিকেট দলের সদস্য এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা নিরাপদ থাকবে।
শিনওয়ারি বলেন, "তালেবানরা ক্রিকেট পছন্দ করে। তারা শুরু থেকেই আমাদের সমর্থন করেছে। তারা আমাদের কাজে কোন হস্তক্ষেপ করেনি।"
আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের শীর্ষ এই কর্মকর্তা আরও বলেন, "আমি কোনো হস্তক্ষেপ দেখছি না এবং সমর্থনের আশা করছি যাতে আমাদের ক্রিকেট এগিয়ে যেতে পারে। আমরা একজন ভালো চেয়ারম্যান পেয়েছি, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত আমি সিইও থাকব।"
আফগানিস্তানে ক্রিকেটের উত্থান ঘটে ১৯৯৬ এবং ২০০১ এর মধ্যে। যা তালেবান শাসনের সাথে মিলে যায়। প্রতিবেশী পাকিস্তানেও অনেক আফগান শরণার্থী ক্রিকেট খেলা শুরু করে।
শিনওয়ারি বলেন, "এটা বলা যেতে পারে যে তালেবান যুগে ক্রিকেটের বিকাশ ঘটেছিল। এটাও সত্য যে আমাদের অনেক খেলোয়াড় পেশোয়ারে অনুশীলন করেছিল এবং তারা আফগানিস্তানে খেলাধুলাকে মূলধারায় পরিণত করেছিল।"
কয়েকদিনের মধ্য আবার কাজ শুরু করবেন জানিয়ে শিনওয়ারি বলেন, "ভাল কথা হল আমরা স্বাভাবিকতার দিকে যাচ্ছি। মানুষ কাজ শুরু করেছে। আমরা আগামীকাল থেকে আমাদের অফিস আবার শুরু করব এবং শ্রীলঙ্কায় পাকিস্তান সিরিজের আগে যে জাতীয় ক্যাম্প চলছিল তাও দুই দিনের বিরতির পর আবার শুরু হবে।"
খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা নিয়ে তিনি বলেন, "চার-পাঁচজন খেলোয়াড় ছাড়া যারা বিদেশে খেলছে বাকিরা সবাই কাবুলে। আমি যেমন বলেছি, তারা নিরাপদে আছে এবং ভালো করছে।"
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) আমাদের উন্নয়নের দিকে নজর রাখছে এবং ইন্ডিয়া প্রিমিয়ার লিগে(আইপিএল) আফগান খেলোয়াড়দের অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিচ্ছে।
বিসিসিআই -এর একটি সূত্র পিটিআইকে জানিয়েছে, "তারা জানানোর পর আমরা নজর রাখছি। আমরা তাদের সাহায্য করবো এবং আশা করি রশিদ এবং অন্যান্য আফগান খেলোয়াড়রা আইপিএলে অংশগ্রহণ করবে।"
১ সেপ্টেম্বর থেকে কলম্বোতে পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলবে আফগানিস্তান।
শিনওয়ারি বলেন, "তাদের সমস্ত নির্ধারিত দ্বিপাক্ষিক সিরিজ সঠিক পথেই আছে এবং আইপিএল-এর তিনজন খেলোয়াড়-রশিদ, নবী এবং মুজিব-টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আগে একটি ইভেন্টে অংশ নিতে বোর্ড থেকে এনওসি পেয়েছে।"
যুক্তরাজ্যের 'হান্ড্রেড' ইভেন্টের সঙ্গে জড়িত ইংল্যান্ডের সাবেক ব্যাটসম্যান কেভিন পিটারসেন বলেন, রশিদ দেশে ফিরে পরিস্থিতি নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই চিন্তিত।
কেভিন পিটারসেন স্কাই স্পোর্টসকে বলেন "আমরা এখানে দেশ নিয়ে দীর্ঘ আড্ডা দিয়েছিলাম এবং সে চিন্তিত ছিল। সে তার পরিবারকে আফগানিস্তান থেকে বের করতে পারছে না।"
আসাদুল্লাহ খান, যিনি এই মাসের শুরুতে আফগানিস্তানের প্রধান নির্বাচক পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। তিনিও মনে করেন যে তালেবান শাসনের অধীনে ক্রিকেটে কোন সমস্যা হবে না।
"আমি ব্যক্তিগতভাবে তালেবান শাসিত এলাকায় গিয়েছি। তারা খেলাটি সত্যিই পছন্দ করেছে। সুতরাং, সেই দৃষ্টিকোণ থেকে এটির কোন সমস্যা হওয়া উচিত নয়।"
বোর্ডে এবং জাতীয় দলের নেতৃত্বের ঘন ঘন প্রশাসনিক পরিবর্তনের কথা উল্লেখ করে খান বলেন, "ক্রিকেটে অত্যধিক রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ গত ২৪ মাসে খেলাটিকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করেছে এবং এটি পরিবর্তন করা দরকার।"