টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে আফিফ হোসেনের ফিফটি আর ওপেনার লিটন দাসের ৪৯ রানে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে স্কোরবোর্ডে ১৬৩ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায়। পরে বাংলাদেশি স্পিনাররা ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং লাইনআপকে চেপে ধরার চেষ্টা করলেও নিকোলাস পুরান এবং কাইল মায়ার্সের ঝোড়ো ফিফটিতে ১০ বল আগেই টাইগাররা ৫ উইকেটে হেরে যায়।
ফলে টেস্টে হোয়াইটওয়াশের পর টি-টোয়েন্টিতেও ২-০ ব্যবধানে হেরে গেছে রিয়াদের দল। এর আগে ডোমিনিকায় প্রথম ম্যাচ বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়ে গিয়েছিল । একই ভেন্যুতে পরদিন দ্বিতীয় ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতেছিল ৩৫ রানের ব্যবধানে।
বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) গায়ানার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের টস জিতে ব্যাট করতে বড় সংগ্রহের ইঙ্গিত দিয়েছিল বাংলাদেশের ওপেনাররা। তার মধ্যে বেশি সক্রিয় ছিল লিটন দাস। কিন্তু পাওয়ার প্লের ৫ম ওভারে ৩৫ রানের মাথায় ফেরেন আরেক ওপেনার এনামুল হক বিজয়।
ক্যারিবীয় পেসার ওডেন স্মিথের বলে থার্ড ম্যান অঞ্চলে আকিল হোসেইনের সহজ ক্যাচে পরিনত হওয়ার আগে ১১ বলে ১০ রান করে আউট ডানহাতি এই ব্যাটার। এরপর সাকিব নিজের প্রথম বলেই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে নিজেকে মেলে ধরার ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন। তবে পরের ওভারেই রোমারিও শেফার্ডের শর্ট লেন্থের বলে মিডউইকেটে ওডেন স্মিথের ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন। ৩ বলে ৫ রান করে আউট হন সাকিব।
বিপর্যয়ের মুখে থাকা দলে তখন ত্রাণকর্তা হিসেবে লিটনের সঙ্গে উইকেটে লড়াই করেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। এ দু’জন মিলে গড়েন ৫৭ রানের জুটি। মাঝারিমানের এই জুটিতেই মোটামুটি চ্যালেঞ্জিং স্কোরের ভিত গড়ে বাংলাদেশ দল। দলীয় ৯৯ রানে এসে ভাঙে লিটনের বিদায়ে ভাঙে তাদের জুটি।
এদিন মাত্র এক রানের জন্য হাফ সেঞ্চুরি মিস করেন লিটন। তবে সতীর্থ আফিফ সেই আফসোস পূরণ করেন ধ্রুব। যদিও হাফ সেঞ্চুরিটা করে আর উইকেটে থাকতে পারেননি। হাফ সেঞ্চুরি পূরণের বলেই দ্বিতীয় রান নিতে গিয়ে হলেন রানআউট। ৩৮ বলের ইনিংসে বাউন্ডারির আর ছক্কাও মারেন ২টি করে।
এরপর অধিনায়ক রিয়াদের ২০ বলে ২২, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের শেষ মুহূর্তে ৬ বলে অপরাজিত ১০ রানে বাংলাদেশের স্কোর ৫ উইকেটে দাঁড়ায় ১৬৩ রানে। ক্যারিবীয়রা বোলিংয়ে ২ উইকেট নেন লেগস্পিনার হেইডেন ওয়ালশ। ১টি করে উইকেট নেন ওডেন স্মিথ এবং রোমারিও শেফার্ড।
১৬৪ রানের লক্ষ্যে ক্যারিবীয়দের ইনিংস ওপেন করতে নেমে দলীয় ৯ রানের মাথায় ব্রেন্ডন কিংকে ফেরায় দলে ফেরা স্পিনার নাসুম আহমেদ। মাহমুদউল্লাহর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ৫ বলে ৭ রান করেন কিং।
এরপর ২২ রানের মাথায় মাহদি হাসানের বলে সামারাহ ব্রুকসও বিদায় নেন। ইনিংসের ৭ম ওভারে প্রথমবার বল হাতে তুলে নেন সাকিব আল হাসান। বল করতে এসেই প্রথম বলে উইকেট নিয়ে নিলেন তিনি। এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন ওডেন স্মিথকে।
৪৩ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ক্যারিবীয়দের চেপে ধরার চেষ্টা করেন বাংলাদেশের বোলাররা। কিন্তু কাইল মায়ার্স আর নিকোলাস পুরান মিলে ৮৫ রানের জুটি গড়ে স্বাগতিকদের ভালোভাবেই লড়াইয়ে ফিরিয়ে আনেন। ৩৮ বলে ৫৫ রান করে নাসুম আহমেদের বলে আউট হন মায়ার্স।
এরপর রোভম্যান পাওয়েলকে লিটনের ক্যাচে পরিণত করেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। তবে অধিনায়ক পুরান ৩৯ বলে ৭৪ রানে অপরাজিত থেকে সিরিজ জয় নিশ্চিত করেন। বাঁহাতি এই ব্যাটার ম্যাচ ও সিরিজ উভয় সেরা খেলোয়াড়ের পুরষ্কার পান।