রাশিয়ার পার্লামেন্ট একটি আইন পাস করেছে—কেউ ‘ভুয়া সংবাদ’ ছড়ালে বা রাশিয়ার সামরিক পদক্ষেপের সমালোচনা করলে, তার সর্বোচ্চ ১৫ বছর কারাদণ্ড হবে। সব জেনেও চুপ থাকতে পারলেন না রাশান ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক ইগর ডেনিসভ।
জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক এই অধিনায়ক একটি সাক্ষাৎকারে প্রকাশ্যে বলেছেন যে তিনি ইউক্রেনে তার দেশের হামলার বিরোধী ছিলেন। এমনকি তিনি ভ্লাদিমির পুতিনকে একটি চিঠিও পাঠিয়েছেন। তার এই মন্তব্যের পরিণতি মেনে নিতেও প্রস্তুত তিনি।
ডেনিসভ ২০১২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত রাশিয়ান জাতীয় দলের অধিনায়ক ছিলেন। এই ৩৮ বছর বয়সী তারকা বলেন, “যা হয়েছে তা বিপর্যয়। একেবারে ভয়ংকর । আমি জানি না এর জন্য আমাকে কারাগারে পাঠানো বা খুন করা হবে কি না। তবে যা ঘটেছে আমি তাই বলেছি।”
ডেনিসভ ‘নোবেল’ নামে একটি ইউটিউব চ্যানেলে দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন। অথচ তিনি কখনোই মিডিয়াকে সাক্ষাৎকার দেন না। রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে পাঠানো চিঠিতে ডেনিসভ লিখেছেন, পুতিন সরকার যুদ্ধ বন্ধ করলে তিনি তার প্রেসিডেন্টের সামনে নতজানু হতেও প্রস্তুত থাকবেন।
এই রাশিয়ান তারকা জাতীয় দলের হয়ে ৫৪টি ম্যাচ খেলেছেন। ডেনিসভ ২০১৭-১৮ মৌসুমে তার ফুটবল ক্যারিয়ারের ইতি টানেন।
আরও কয়েকজন রাশিয়ান ক্রীড়াবিদও সম্প্রতি প্রকাশ্যে পুতিনের হামলার প্রতিবাদ করেছেন।
ডায়নামো মস্কোর ফুটবল খেলোয়াড় ফেডর স্মোলভ ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছেন। তিনি লিখেছেন,—কোনো যুদ্ধ নয়!
স্পার্টাক মস্কোর আলেকজান্ডার সোবোলেভ বিষয়টি নিয়ে সোচ্চার থাকলেও কয়েক ঘণ্টা পর তিনি তার সমালোচনামূলক পোস্ট সরিয়ে ফেলেন।
রাশিয়ান ফুটবল খেলোয়াড় নাদেজহদা কারপোভা বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “আমি এই অমানবিকতা দেখে চুপ থাকতে পারি না। এই নিষ্ঠুরতা নিয়ে কথা বলা আমার দায়িত্ব। তবে রাশিয়ান নাগরিক হয়ে আমি লজ্জিত নই। কারণ রাশিয়া মানে সরকার এবং ভ্লাদিমির পুতিন নয়। পুতিন আমাদের কাছ থেকে সবকিছু কেড়ে নিয়েছে। সে আমাদের ভবিষ্যৎ নষ্ট করে নিয়েছে।”