বহুল প্রতীক্ষিত বাঘ-ক্যাঙ্গারোর লড়াইয়ে আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা বাকি। রাত পোহালেই শুরু হবে টাইগার-অজিদের ৫ ম্যাচ সিরিজের জমজমাট লড়াই। সিরিজকে ঘিরে রয়েছে ক্রীড়াপ্রেমীদের জল্পনা-কল্পনা। ধুন্ধুমার টি-টোয়েন্টি সিরিজের ট্রফি কার ঘরে যাবে, তা দেখার অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন সবাই।
ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণের র্যাঙ্কিং বিবেচনায় আনলে অস্ট্রেলিয়ার অবস্থান টাইগারদের থেকে ৫ ধাপ এগোনো। স্বাগতিক বাংলাদেশের অবস্থান যেখানে ১০, অজিদের অবস্থান সেখানে ৫। টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ ভালো না করলেও আশা করা যায় হোম কন্ডিশনের সুবিধা নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেবে না মাহমুদউল্লাহর দল। সোমবার (২ আগস্ট) ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে টাইগার অধিনায়ক তো বলেই দিলেন দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা। এখন কথা অনুযায়ী কাজটা মাঠে করে দেখালেই রচিত হবে ইতিহাস।
অজিরা বাংলাদেশ সফরে এসেছে প্রায় চার বছর পর। দুই দল এবারই প্রথম খেলছে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ। যেখানে দুই দলের দেখা হয় কালেভদ্রে, সেখানে মুখোমুখি লড়াই না টেনে আনাই মনে হয় শ্রেয়। তারপরেও খেলা চলে এলে মাথায় ঘুরতে থাকে দুই দলের মুখোমুখি পরিসংখ্যান। এর আগে দ্বিপক্ষীয় সিরিজে দুই দল মাঠে না নামলেও বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে দেখা হয়েছে চারবার। চারবারই অবশ্য বাংলাদেশ মাঠ ছেড়েছে শূন্য হাতে। যেহেতু পাঁচ ম্যাচের সিরিজ তাই মাহমুদউল্লাহ বাহিনী অবশ্যই চাইবে জয়ের খেরো খাতা খুলতে।
তবে দুই দলের বর্তমান পারফরম্যান্স বা সর্বশেষ সিরিজ বিবেচনায় আনলে এগিয়ে থাকবে স্বাগতিকরাই। জিম্বাবুয়েকে ঘরের মাঠে হারিয়ে তিন তিনটি ট্রফি নিয়ে দেশে এসেছে টাইগাররা। টি-টোয়েন্টি সিরিজ যেভাবে জিতেছে তাতে প্রশংসা প্রাপ্য মাহমুদউল্লাহর দলের। তিন ম্যাচ সিরিজের টি-টোয়েন্টি জিতেছে ২-১ ব্যবধানে। দলের গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবাল, লিটন কুমার দাস ও মুশফিকুর রহিমকে ছাড়াই সিরিজ জিতেছে টাইগার বাহিনী। অবশ্য এ সিরিজেও পাচ্ছে না দলের গুরুত্বপূর্ণ এ তিন ক্রিকেটারকে।
অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়ার ভালোমন্দ মিলিয়েই ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর শেষ করেছে। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ অজিরা ২-১-এ জিতলেও ধরাশায়ী হয়েছে টি-টোয়েন্টিতে। পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ৪-১-এর বিশাল ব্যবধানে হেরেছে ক্যারিবীয়দের কাছে। সিরিজজুড়েই ভুগেছে অজি ব্যাটসম্যান ও বোলাররা। এ সিরিজে দলের নিয়মিত অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চকে পাচ্ছে না অজিরা। স্টিভেন স্মিথ, গ্ল্যান মাক্সওয়েল, ডেভিড ওয়ার্নারের মতো তারকা খেলোয়াড় নেই এই সিরিজে।
উপমহাদেশে এসে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানরা স্পিন উইকেটে ধুঁকে, এ ধারণা থেকে স্বাগতিক দল নিশ্চয়ই চাইবে স্পিন উইকেটে খেলতে। এদিকে দুই দলেই রয়েছে প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের ভোগানোর মতো স্পিন বোলার। অস্ট্রেলিয়া যেমন তাইজুল, সাকিব, মেহেদী, মোসাদ্দেক ও আফিফদের দিকে নজর রাখবে, বাংলাদেশেরও তেমন এড়িয়ে যেতে হবে অ্যাস্টন অ্যাগার, অ্যাডাম জাম্পা ও মিশেল সুইপসনকে। ফাস্ট বোলারদের দিকে তাকালে বাংলাদেশ স্কোয়াডে আছে কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, রুবেল হোসেন ও শরীফুল ইসলামের মতো কার্যকর বোলার। বাংলাদেশকেও সামলাতে হবে মিচেল স্টার্ক, জর্জ হ্যাজলওডের মতো গতি তারকাদের।
এ সিরিজটা দুই দলের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, দুই দলই চাইবে আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য সবচেয়ে ভালো খেলোয়াড় নির্বাচন করতে। আর বিশ্বকাপটা যেহেতু এশিয়ান কন্ডিশনে হবে, তাই অজিরাও চাইবে সহজেই কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে। খেলাটার ফলাফল জানার জন্য অবশ্য আপনাকে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে না।
বাঘ-ক্যাঙ্গারুর এ লড়াই মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হবে।