দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশি বোলারদের দাপটে স্বাগতিকদের ৩৬৭ রানে অলআউট করছে খালেদ-মিরাজরা। এরপর ব্যাট করতে নেমে দিন শেষ করার আগে ৯৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়েছে মুমিনুল হকের দল। ওপেনিংয়ে নেমে ব্যাট হাতে একপ্রান্তে লড়ছেন মাহমুদুল হাসান জয়।
ডারবানের কিংসমিডে প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিনে ৪ উইকেটে ২৩৩ রানে শুরু করা স্বাগতিকদের ৩৬৭ রানে অলআউট করে বাংলাদেশ। পেসার খালেদ আহমেদ একাই নেন ৪ উইকেট। এছাড়া স্পিনার মেহেদি মিরাজের শিকার ৩ টি।
এদিন দিনের শুরুতে দুই বলে টানা উইকেট তুলে বাংলাদেশকে চালকের আসনে বসান খালেদ আহমেদ। বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলামের চোটের কারণে দলে জায়গা পেয়েই বাজিমাৎ করেছেন তিনি। এদিন নিজের নামের পাশে আর ১ রান যোগ করতেই ভেরাইনিকে এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলে ফেরান তিনি। এরপর উয়ান মুল্ডারকে পরের বলেই ফেরত পাঠান খালেদ। দারুণ ক্যাচ তালুবন্দী করেন মাহমুদুল হাসান জয়।
এরপর কেশভ মহারাজকে সঙ্গে নিয়ে টেম্বা বাভুমা ব্যক্তিগত সেঞ্চুরির দিকেই এগিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে পরপর দুই বলে দুই জনকেই সাজঘরে ফিরিয়েছে মুমিনুল হকের দল। ৯৩ রান করা বাভুমাকে বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান স্পিনার মিরাজ। আর পেসার এবাদত হোসেন শিকার মহারাজ। সপ্তম উইকেট জুটিতে বাভুমা ও মহারাজ মিলে ৫৩ রান যোগ করেন। যেখানে মহারাজের অবদান ১৯ রান।
এদিন প্রথম সেশন শেষে ৮ উইকেটে স্বাগতিকদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩১৪ রান। লিজাড উইলিয়ামস ৬ এবং সিমন হারমার ৮ রান নিয়ে দ্বিতীয় সেশনের খেলা শুরু করে চার ওভার যেতে না যেতেই উইলিয়ামসকে জয়ের ক্যাচে পরিণত করেন পেসার খালেদ। এরপর শেষ উইকেট জুটিতে গুরুত্বপূর্ণ ৩৫ রান যোগ করেন হারমার-ওলিভার জুটি। ইনিংসের শেষ পেরেকটা ঠুকে দেন স্পিনার মিরাজ।
ফলে ১২১ ওভারে সবকয়টি উইকেট হারিয়ে ৩৬৭ রানে থামে স্বাগতিকদের ইনিংস। বোলিংয়ে বাংলাদেশের পক্ষে ৪ উইকেটের দেখা পান পেসার খালেদ আহমেদ। এছাড়া স্পিনার মেহেদি মিরাজ ৩ ও এবাদত হোসেন ২টি উইকেট শিকার করেন।
বাংলাদেশ দ্বিতীয় সেশনে ১১ ওভার ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়ে ওপেনার সাদমানের উইকেট হারিয়ে বসে। সেশনের শেষ ওভারের তৃতীয় বলে স্পিনার সাইমন হার্মারের নিচু হয়ে যাওয়া ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরে যান ৩৩ বলে ৯ রান করা সাদমান। তার উইকেটের সঙ্গে সঙ্গেই দেওয়া হয় চা পানের বিরতি।
বিরতি থেকে ফিরে দিনের শেষ সেশনটা ভালোই করেছিল জয় শান্ত জুটি। তারা দুজনে মিলে স্বাচ্ছন্দে ব্যাটিং করতে থাকেন। দলীয় ৮০ রানের মাথায় সেই হার্মারের বলেই বিদায় নেন শান্ত। বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরে আসার আগে নিজের নামের পাশে ৩৮ রান যোগ করেন এই বাঁহাতি। এরপর অধিনায়ক মুমিনুলও ফিরে যান কোনো রান যোগ করার আগেই। মুহূর্তের মধ্যেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়া বাংলাদেশ আশা করছিল অভিজ্ঞ মুশফিকের কাছ থেকে। তিনিও হতাশ করেন দলীয় ৯৪ রানের মাথায়। বাংলাদেশ তাদের ইনিংসের ৪ ব্যাটারকে হারায় একাই বোলারের হাতেই। কলপ্যাক চুক্তি থেকে প্রায় ৭ বছর পর জাতীয় দলে ফিরে বাংলাদেশের ব্যাটারদের চোখ রাঙাচ্ছেন ৩৩ বছর বয়সী এই স্পিন অলরাউন্ডার।
দিনশেষে ৪ উইকেট হারিয়ে টাইগাররা স্কোর বোর্ডে তুলেছে ৯৮ রান। যেখানে ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় ৪৪ এবং নাইট ওয়াচম্যান তাসকিন আহমেদ ০ রানে অপরাজিত থেকে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করবেন।