অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি লেগ স্পিনার শেন ওয়ার্ন ছুটি কাটাতে গিয়ে গত শুক্রবার (৪ মার্চ) থাইল্যান্ডের কো সামুই দ্বীপের একটি প্রাইভেট ভিলায় মারা যান। হার্ট অ্যাটাকে এই স্পিন জাদুকরের আকস্মিক মৃত্যুর খবরে শোকে কাতর পুরো ক্রিকেটবিশ্ব। তবে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার চিকিৎসক পিটার ব্রাকনার ওয়ার্নের বিদায়কে আকস্মিক মৃত্যু বলে মনে করছেন না।
দীর্ঘদিন অস্ট্রেলিয়া জাতীয় দলের সঙ্গে কাজ করা ব্রাকনার তাই ওয়ার্নের অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনকেই তার অকাল মৃত্যুর কারণ মনে করছেন। ব্রাকনারের দাবি- পুরো ব্যাপারটিই প্রত্যাশিত ছিল। ওয়ার্নের মৃত্যু আদৌ আকস্মিক দুর্ঘটনা নয়।
ওয়ার্নের পরিবার জানায়, মৃত্যুর আগের সাত দিন তার হৃদযন্ত্রের সমস্যা ও হাঁপানির কষ্ট ছিল। এজন্য ডাক্তারের কাছেও গিয়েছিলেন ওয়ার্ন। সেই সঙ্গে ওজন কমাতে টানা ১৪ দিন শুধু তরল জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করেছিলেন তিনি।
ব্রাকনার বলেন, ‘ওয়ার্নির যদি হৃদরোগ থেকে থাকে, তা হলে থাইল্যান্ডে রাতারাতি সেটা হয়নি। গত ২০ থেকে ৩০ বছর ধরে ও নিয়মিত ধূমপান করেছে। খাদ্যাভাসেও সমস্যা ছিল। সঙ্গে আরও অনেক অনিয়ম করত। তাই আবার বলছি, ওয়ার্নির ক্ষেত্রে আকস্মিক কিছু হয়েছে বলে আমি অন্তত মনে করি না।’
সম্প্রতি কিংবদন্তি স্পিনার ডায়েট করে নিজের ওজন ১৪ কেজি কমিয়ে ফেলেন। তার পরেও মৃত্যুর মাত্র চারদিন আগে গণমাধ্যমে ওয়ার্ন লেখেন, ওজন আরও কমানোর অভিযান শুরু করতে যাচ্ছেন। এছাড়া ওয়ার্ন মাত্রাতিরিক্ত ধূমপান ও মদ্যপান করতেন। সেইসঙ্গে নিজের ত্বকেরও যথেষ্ট যত্ন নিতেন না।
ব্রাকনার মনে করেন, ‘‘ওয়ার্নের মৃত্যু সবার কাছেই শিক্ষা হয়ে থাকা উচিত। প্রত্যেকেই সে ক্ষেত্রে বুঝতে পারবেন নিয়মিত নিজের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা কত জরুরি। এজন্য তিনি মন্তব্য করেন যে, ‘কেউই এক মিনিটের মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হয় না। মর্মান্তিক পরিণতির দিকে মানুষ পৌঁছায় কার্যত ধীরে ধীরে।’’
উল্লেখ্য, থাইল্যান্ডে হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুর ছয়দিন পর বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) রাতে ওয়ার্নের মরদেহ অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছায়। অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় পতাকা গায়ে জড়ানো তার মরদেহ এক প্রাইভেট বিমানে করে ৮ ঘণ্টার যাত্রা শেষে শেষবার দেশে আনা হয় ওয়ার্নকে। আগামী ৩০ মার্চ ঐতিহাসিক মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এমসিজি) রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ওয়ার্নের শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হবে।