আজ ২৭ নভেম্বর। হৃদয়বিদারক এক ঘটনার দশ বছর পার হলো। তিনি ক্রিকেট খেলতে খুব ভালোবাসতেন। অথচ, সেই খেলাটাই প্রাণ কেড়ে নেবে ভাবতে পারেননি অজি ক্রিকেটার ফিলিপ হিউজ। নিজের জন্মদিনের মাত্র তিনদিন আগেই পৃথিবীর মায়া ছেড়ে তাকে পরপারে চলে যেতে হয়। মাত্র ২৬ বছর বয়সে তার মৃত্যু হয়।
১০ বছর আগে আজকের এই দিনেই ক্রিকেট মাঠ সাক্ষী থেকেছিল এক মর্মান্তিক পরিণতির। অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া আসর শেফিল্ড শিল্ডের এক ম্যাচে ব্যাট করার সময় মাথার পেছনে বলের আঘাত পেয়েছিলেন তারকা ক্রিকেটার ফিলিপ হিউজ। এরপর ২ দিন হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর মৃত্যু হয় তার।
মাথার ভেতরের শিরা ছিড়ে যাওয়ায় রক্তক্ষরণ হচ্ছিল হিউজের। দ্রুত তার জীবন বাঁচানোর জন্য অস্ত্রোপচারও করা হয়েছিল, তবে সব চেষ্টাই ব্যর্থ হয়। ফিলিপের দশম প্রয়াণ বার্ষিকী উপলক্ষ্যে নানা পরিকল্পনা নিয়েছে তার পরিবার। তাকে ‘আমাদের জীবন জ্যোতি’ হিসেবে উল্লেখ করেছে ফিলিপের পরিবার।
এদিকে, ফিলিপকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া এবং তার পরিবার যৌথভাবে একটি ডকুমেন্টরি বানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেটি আসন্ন বোর্ডার-গাভাসকর ট্রফির অ্যাডিলেড টেস্টে ম্যাচ শুরুর আগে দেখানো হবে বলে জানা গেছে। ডকুমেন্টরির নাম দেওয়া হয়েছে, ‘দ্য বয় ফ্রম ম্যাকসভিল।’ অন্যদিকে শেফিল্ড শিল্ডের দলগুলো শনিবার থেকে শুরু হওয়া ম্যাচে হাতে কালো ব্যান্ড পরে খেলতে নেমেছে শোক পালন করতে।
ফিলিপের পরিবারের পক্ষ থেকে এক বার্তায় বলা হয়েছে, ‘আজকে আমাদের মূল্যবান ছেলে ফিলিপ জোল হিউজের মৃত্যুর ১০ বছর পূর্ণ হল। তিনি সর্বদা তার চারপাশের লোকদের হাসাতে ভালোবাসতেন এবং জীবনের ছোট ছোট জিনিসগুলি উপভোগ করার লক্ষ্য রাখতেন। তিনি জীবনের কঠিন সময়েও উজ্জ্বল ছিলেন, যা একজন ব্যক্তি হিসেবে তিনি কে ছিলেন তার প্রমাণ। তিনি ছিলেন আমাদের জীবনের জ্যোতি। ফিলিপের নিজের পরিবারের প্রতি গভীর ভালোবাসা ছিল এবং তিনি তার চারপাশের সকলের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন।’
ফিলিপ ছোট-শহর থেকে উঠে এসেছিলেন। তিনি অস্ট্রেলিয়ান টেস্ট, ওয়ান-ডে এবং টি-টোয়েন্টির নিয়মিত ক্রিকেটার হয়ে ওঠেন।
উল্লেখ্য, ফিলিপ হিউজ ১৯৮৮ সালের ৩০ নভেম্বর অস্ট্রেলিয়ার ম্যাকসভিলে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ২০০৯ সালে তার প্রথম অস্ট্রেলিয়ার হয়ে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল। তিনি মোট ২৬টি টেস্ট খেলেছিলেন। রান করেছিলেন ১৫৩৫। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ২৫টি ওয়ানডে ম্যাচও খেলেছিলেন ফিলিপ।