১৬ দিন আগেই শেষ সাকিবের টেস্ট ক্যারিয়ার

তারিক আল বান্না প্রকাশিত: অক্টোবর ১৭, ২০২৪, ০৭:০০ পিএম
সাকিব আল হাসান। ছবি : সংগৃহীত

সাকিব আল হাসানের টেস্ট ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল ভারতের বিপক্ষে ২০০৭ সালের ১৮ মে চট্টগ্রামে। আর টেস্ট ক্যারিয়ারের শেষ টেস্টও তিনি খেলেছেন ঐ ভারতের বিপক্ষেই (২৭ সেপ্টেম্বর- ১ অক্টোবর, ২০২৪) । যদিও সাকিব চেয়েছিলেন ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট ম্যাচটা ঢাকার মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলতে। যা আগামী ২১ অক্টোবর শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা আর হচ্ছে না। ফলে সাকিবের বর্ণাঢ্য টেস্ট ক্যারিয়ার আসলে শেষ হয়ে গেছে ১ অক্টোবর, যা আমরা জানলাম ১৬ দিন পর অর্থাৎ ১৭ অক্টোবর। 

সাকিব চাইলেও তার পক্ষে দেশের মাটিতে ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলা সম্ভব হলো না। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের এমপি হওয়ার কারণে গণ মামলায় ফেঁসে যান সাকিব। যদিও মামলার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সাকিবের কোনো প্রকার সম্পৃক্ততা নেই। ছাত্র আন্দোলনের সময় সাকিব দেশেই ছিলেন না। তবে আন্দোলনের হতাহতের ঘটনায় কোনো বিবৃতি না দেওয়ায় সমর্থকদের রোষানলে পড়েন বিশ্বের সর্বকালের অন্যতম সেরা ক্রিকেট অলরাউন্ডার সাকিব। মামলার কারণে গ্রেপ্তার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে তার। নিরাপত্তা প্রদানের কথা বলা হলেও আসেলে তার জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা হয়নি। উল্টো সাকিবের বিপক্ষে মিরপুর স্টেডিয়াম সহ বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ও দেওয়াল লিখন হয়েছে। ফলে দেশের পথে রওয়ানা দিয়েও আসতে পারেননি বাংলাদেশের ক্রিকেট মহানায়ক সাকিব। অবশ্য সাকিবের স্বপ্ন ছিল দেশের মাটিতে ক্রিকেটের আদি ফরম্যাট টেস্ট থেকে বিদায় নেবেন। সেটা শেষ পর্যন্ত হয়নি।

সাকিব ২০০৭ সালে ভারতের বিপক্ষে অভিষেক টেস্টে ব্যাট হাতে ২৭ রান করেন। বল হাতে প্রথম ইনিংসে সবচেয়ে মিতব্যয়ী বোলিং (১৩ ওভারে মাত্র ২৯ রান খরচ) করেও কোনো উইকেট লাভ করেননি। দ্বিতীয় ইানিংসে ব্যাট ও বল করার সুযোগ পাননি।

এবার ভারতের বিপক্ষে চেন্নাইয়ে প্রথম টেস্টে ব্যাট হাতে প্রথম ইনিংসে দলেরে পক্ষে সর্বোচ্চ ৩২ রান করেন। আর দ্বিতীয় ইনিংসে করেন চতুর্থ সর্বোচ্চ ২৫ রান। তবে বল হাতে কোনো উইকেট লাভ করেননি। ওই টেস্টে ভারত দুই ইনিংসে ৩৭৬ ও ২৮৭/৪ (ডিক্লেয়ার্ড) এবং বাংলাদেশ ১৪৯ ও ২৩৪ রান করে। ভারত জয়ী হয় ২৮০ রানে।

আর কানপুরে দ্বিতীয় টেস্টে দারুণ বোলিং করেন প্রথম ইনিংসে। ৭৮ রানে একাই নেন ৪টি উইকেট। যেখানে তিনি আউট করেন শুভমান গিল, রিশভ পান্ত, বিরাট কোহলি ও যশস্বী জসওয়ালকে। দ্বিতীয় ইনিংসে কোনো উইকেট পাননি। ব্যাট হাতে প্রথম ইনিংসে ৯ রান করলেও দ্বিতীয় ইনিংসে থাকেন রানশূন্য। ওই টেস্টে ভারত প্রথম ইনিংসে ২৮৫/৯ (ডিক্লেয়ার্ড) ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৯৮/৩ (ডিক্লেয়ার্ড) এবং বাংলাদেশ ২৩৩ ও ১৪৬ রান করে। টেস্টে ভারত ৭ উইকেটে জয়লাভ করে।

ঢাকার মিরপুর টেস্টে খেলা হচ্ছে না সাকিবের। ফলে চট্টগ্রামে যেই বর্ণাঢ্য টেস্ট ক্যারিয়ার শুরু হয় তার, সেটার যবনিকা আসলে কানপুরে ঘটে গেছে ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে। সাকিব দেশে আসার জন্য দুবাই পর্যন্ত আসলেও ঢাকায় আসার ব্যাপারে এখান থেকে তাকে কোনো সবুজ সংকেত দেওয়া হয়নি। ফলে  বলা যায়, তার টেস্ট ক্যারিয়ারটা আসলে কানপুরেই শেষ হয়ে গেছে। যদিও আমরা তা নিশ্চিত হলাম ১৬ দিন পর।