বাবা দাদারা বলতেন রোজার মাস। এখন অনেকেই বলেন, মাহে রামাদান। রোজার শুভেচ্ছা বলতে শুনি কম। বলা হয়, রামাদান উল মোবারাক। এখন কোটি কোটি মানুষ সেহরী করা ভুলে গিয়ে সাহরী করে। নামাজ পড়া ছেড়ে সালাত আদায় করে।
সোয়াবের পথ সোজা করে নিয়েছে বাঙালি জাতি। ধারণা বদলে গিয়েছে। বাংলায় যা যা বলার চিরকালীন অভ্যাস ছিল তা বলা অক্ষুণ্ণ রাখলে ধারণা করা হয় আল্লাহ এই ভাষা বুঝবেন না। না বুঝলে বান্দার কপালে নাজাত জুটবে কেমন করে?
যিনি সৃষ্টি করেছেন, তিনি কি কেবল আরব দেশের মানুষদের পোশাক আশাক, আচার আচরণ, ভাষা ভালো করে বুঝতে পারেন, আর এক-আধটু উর্দু জানা আছে তাঁর। বাকি ভাষাগুলো জগতে কিভাবে এলো? কার সৃষ্টি তাহলে!
প্রিয় বান্দা হওয়ার আশায় আমাদের পোশাক, ভাষা, প্রচলিত নানা আচরণ বদলে যাচ্ছে। বিড়াল মনে করে না বাঘ হলে দাম বেড়ে যাবে। মানুষ, আমরা মনে করি, ইহজগত এবং পরলোকে বিশেষ হতে চাইলে আমাদের আদিরূপ বদলাতে হবে।
প্রাণী, পশু, বৃক্ষ লতা, কীট পতঙ্গ—সমগ্র জগতের যিনি সৃষ্টিকর্তা, কোন মুর্খতায় ভাবা হয়, তিনি দূরবীন দিয়ে প্রতিনিয়ত আমাদেরই দেখছেন, আর খাতায় লিখছেন, এইমাত্র আরও একজন পাপী বান্দা পোশাক আর ভাষা বদল করে আমার প্রিয় হয়ে উঠলেন; আমি তার জন্য বেহেস্ত বরাদ্দ করলাম।
ভালো মানুষ হওয়ার চেষ্টা আর ভালো দেখানোর চেষ্টা—এ দুয়ের পার্থক্য আল্লাহতায়ালা বোঝেন। তিনি জগতসংসার সৃষ্টি করেছেন, আমাদের সততা অসততা, স্বাভাবিকতা এবং অস্বাভাবিকতা তিনি ভালো করেই বুঝতে পারেন।
ক্ষুদ্রতা দিয়ে বৃহতের বিচার নিত্য করে চলেছে মানুষ আর তিনি সন্তুষ্ট হচ্ছেন ভেবে খুবই তৃপ্ত হচ্ছে। মনে রাখি, তিনি সর্বশক্তিমান। মানুষকে ছাপিয়ে তিনি মানুষের মন দেখতে পান।