যেভাবে এলো ‘বিশ্ব বই দিবস’

দেবাশীষ মুখোপাধ্যায় প্রকাশিত: এপ্রিল ২৩, ২০২৩, ০৪:১১ পিএম

২৩ এপ্রিল, আজ বিশ্ব বই দিবস। একই সঙ্গে আজ, কপিরাইট দিবসও। অনেক পোস্টে দেখছি, লোকে বলছেন, আজ শেক্সপিয়রের জন্মদিন বলেই দিনটি ‘বই দিবস’ হিসেবে চিহ্ণিত করেছিল ইউনেসকো। আসলে কিন্তু তা নয়। এই দিনটিকে নির্বাচন করার মূল উৎস ছিল একটি দেশ, ক্যাটালোনিয়া। স্পেনের উত্তর-পূর্ব অংশে অবস্থিত এই দেশটাকে আমরা ভালো করে চিনি না। সত্যি বলতে, নামও শুনিনি। কিন্তু দেশটির রাজধানীর নাম জানি, বার্সিলোনা। এই ক্যাটালোনিয়াতে ২৩ এপ্রিল দিনটি পালিত হয় ‘সেন্ট  জর্জিস ডে’ হিসেবে। ওই দেশের মানুষ বিশ্বাস করেন, ৩০৩ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনটিতে সেন্ট জর্জ মারা গিয়েছিলেন। তাঁকে স্মরণ করে তাঁরা তাঁদের প্রিয়জনকে গোলাপ ফুলের সঙ্গে একটি করে বই উপহার দেন। মধ্যযুগ থেকে এই প্রথা চলে আসছে। মনে হয়, তখন হাতে লেখা পুঁথি বা চিঠি উপহার দেওয়া হতো। বিশ্বের আরও কয়েকটি দেশে খ্রিষ্টানেরা সেন্ট জর্জকে এইভাবে স্মরণ করেন।

১৯২৩ সালে ক্যাটালোনিয়ার পুস্তক ব্যবসায়ীরা একটি ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেন। তাঁরা ঠিক করেন, ওই দিন যাঁরা বই কিনবেন, তাঁদের একটি করে গোলাপ উপহার দেবেন। দু’বছর পর দেখা গেল, অন্যদিনের তুলনায় ওই দিন প্রায় চার লক্ষ বই বেশি বিক্রি হয়েছে। ক্যাটালোনিয়াতে এই প্রথাটি জনপ্রিয়তার তুঙ্গে উঠে যায়। সেই প্রথা এখনও চলছে।

১৯৯৫ সালে প্যারিসে ইউনেস্কোর ২৮ তম সাধারণ সভায়  সারা বিশ্বের গ্রন্থ, গ্রন্থকার ও পাঠকদের সম্মান জানিয়ে ঘোষণা করা হয়, ২৩ এপ্রিল দিনটিকে ‘বিশ্ব বই ও কপিরাইট  দিবস’ হিসেবে উদযাপন করা হবে। বলা হয়, বই হলো সর্বশক্তিমান। জ্ঞানের বিস্তৃতির জন্যে বইয়ের ব্যাপক প্রচার প্রয়োজন। মানবসমাজকে উৎসাহিত করার জন্যে, বিশ্ববাসীকে বই পড়ার আনন্দ উপভোগ করতে বইয়ের গুরুত্ব বোঝানো হোক। একই সঙ্গে মানবতাকে, বিশ্ব মানবসমাজকে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক দিক দিয়ে যে সমস্ত মনীষী সমৃদ্ধ করেছেন তাঁদের স্মরণ করে শ্রদ্ধা জানান। অনুরোধ করেন, জ্ঞানের বিস্তৃতির জন্যে বইয়ের প্রচারে সকলে অংশ নিন।”