মামলার সাক্ষী শালিক পাখি

মেজবাউর রহমান সুমন প্রকাশিত: আগস্ট ১৯, ২০২২, ০৯:২৬ এএম

পাঁচ বছর আগে আমার ব্যান্ড মেঘদলের জন্য নির্মাণ করেছিলাম ‘এসো আমার শহরে’। সেখানে এই নেক্রপলিস সিটিতে কিছু প্রতীকী বন্য প্রাণীকে দেখিয়েছিলাম। ওদের শহরের ভেতর নানা জায়গায় দেখা গিয়েছিল। কিন্তু এই মৃত নগরে মানুষহীন রাস্তাঘাটে বন্য প্রাণী কেন ঘুরে বেড়াচ্ছে? তার উদ্দেশ্যই-বা কী? আমি মনে করেছিলাম, এই নগর শুধু মানুষের নয়, অন্য প্রাণীর জন্যও আবাসস্থল হওয়ার কথা ছিল।

প্রতিদিন এই শহরে অসংখ্য প্রাণীদের আমরা নিয়ে আসি শুধু ভোগের জন্য। হয়তো মানুষের জীবনধারণের জন্য সেটা আমাদের করতেও হয়। কিন্তু মায়া তো নিঃশেষ হবার নয়। এই সর্বপ্রাণের মায়াই ওই মিউজিক ভিডিওতে দেখাতে চেয়েছিলাম। কিছুদিন আগেও ‘কোথায় পালাবে বলো রূপবান’ নামে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকির জন্য একটি ছোট ছবি নির্মাণ করি। সেখানে চিড়িয়াখানা থেকে একটি বাঘ পালিয়ে যায়। তাকে কর্তৃপক্ষ খাঁচায় বন্দি করতে চায়। পাশাপাশি এক নারীকেও বন্দি করতে চায় সমাজের কিছু চোখ। সে যা-ই হোক, আমার পূর্বের এই দুটি কাজের ভেতর দিয়ে বলতে চেয়েছি, প্রাণ ও প্রকৃতি নিয়ে আমার গল্প বলা নতুন নয়। বরং এই কাজগুলোতে সর্বপ্রাণের দায় সব সময়ই ছিল।

নির্মাতা হিসেবে আমি এটুকুই বলতে চাই, হাওয়ার পাখিটি রূপক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে আর এই নির্মাণের জন্য যে সিনেমাটিক রিয়ালিটি তৈরি করতে হয়েছে, সেটা সত্য নয়। ছবির শুরুতে Disclaimer-এ আমরা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছি। পাখিটির দৃশ্যধারণের পর আমরা তাকে প্রকৃতিতে মুক্ত করে দিয়েছিলাম। আর নৌকায় যে উড়িয়ে দেওয়ার দৃশ্য দেখিয়েছি সেটা কম্পিউটার গ্রাফিকসের মাধ্যমে নির্মাণ করা। আর চান মাঝি যে তার প্রিয় পাখিটিকে খেয়ে ফেলে, সেটা কি শুধু ভোগ? নাকি সমাজের ভেতর জমতে থাকা হিংস্রতা? আর আমি শুধু ওই বোধটাকেই ইঙ্গিত করেছি আর সেটা নির্মাণ করেছি সিনেমার ভাষার ভেতর দিয়ে।

পৃথিবী সর্বপ্রাণের হোক।