প্লাস্টিক থেকে হীরা বানালেন বিজ্ঞানীরা!

সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২২, ০৯:৪৯ পিএম

পরশ পাথরের কথা তো আমরা সবাই জানি। এই পাথর দিয়ে যা ছোঁয়া হয় তাই স্বর্ণ হয়ে যায়। কত মানুষ কত যুগের পর যুগ কাটিয়ে দিলেন এই পরশ পাথরের সন্ধানে। কত বিজ্ঞানী কত চেষ্টা করলেন একটি পরশ পাথর বানাতে। কিন্তু কেউ সফল হয়েছিলেন কি না সেটি আজও অজানা।

তবে পরশ পাথর বানাতে না পারলেও ফেলনা প্লাস্টিককে হীরা বানাতে শিখে গেছেন একদল বিজ্ঞানী। আর হীরা যে কতটা দামি তা কে না জানে! জীবনের সবকিছুতেই একটা হীরার টুকরার মতো কিছু না কিছু সবাই পেতে চায়।

ইউরোপের একদল বিজ্ঞানী সম্প্রতি এই ঘোষণা দিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে ফেলেছেন। তারা জানিয়েছেন, প্লাস্টিকের কণায় যখন উচ্চ মাত্রার লেজার দিয়ে আঘাত করা হয়, তখন সেটি ন্যানো ডায়মন্ডে পরিণত হয়।

আশার কথা হচ্ছে বিজ্ঞানীরা প্লাস্টিককে হীরায় পরিণত করতে পেরেছেন, আর নিরাশার কথা হচ্ছে এই হীরা ন্যানোমিটার মাপের। অর্থাৎ টুকরা বলার মতো হীরা না। এর থেকেও হয়েক লক্ষ কোটি গুন ছোট। তবে এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র হীরা দিয়েই হাজারটা কাজ করতে পারবেন বলে আশা করছেন তারা।

বিজ্ঞানীরা বলছেন এই হীরাগুলো দিয়ে তাপমাত্রা ও চৌম্বক ক্ষেত্রের জন্য ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কোয়ান্টাম সেন্সর বানানো সম্ভব। আর সেই সেন্সরগুলো দিয়ে করা যাবে বিভিন্ন ধরনের কাজ। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কার্বন-ডাই-অক্সাইডকে অন্য গ্যাসে রুপান্তর। আবার অন্যরা বলছেন এই সেন্সরগুলো দিয়ে শরীরের নির্দিষ্ট স্থানে ওষুধ পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে।

গবেষকরা বলছেন এমন গবেষণা চালিয়ে গেলে খুব দ্রুতই আমরা প্লাস্টিক দূষণের একটি কার্যকর সমাধান খুঁজে বের করতে পারব। কিন্তু প্লাস্টিক হীরায় রুপান্তর হয় কীভাবে?

প্রথমে গবেষকরা সাধারণ প্লাস্টিককে সাড়ে পাঁচ হাজার ডিগ্রী সেলসিয়াসে উত্তপ্ত করেন। এরপর এতে পরিবর্তন আসতে শুরু করে। প্রচণ্ড তাপ ও চাপে প্লাস্টিক অনেক সংকোচিত হয়ে পড়ে। ফলে প্লাস্টিকে থাকা কার্বন পরিণত হয় ডায়মন্ডে। সহজ মনে হলেও, এতোটাও সহজ না ব্যাপারটা।

প্রকৃতিতে হীরা পাওয়ার পর সেটি হয়ে গেল নারীদের জন্য আকর্ষনীয়। জামা, গয়নাসহ কত কিছুতেই না ব্যবহার করা হয় সেগুলো। আর প্লাস্টিকে হীরা পাওয়ার পর সেটি হয়ে গেছে বিজ্ঞানীদের জন্য আকর্ষনীয়! এবার দেখার পালা, তারা কত জায়গায় ব্যবহার করেন এই ন্যানোডায়মন্ডকে।