ইন্টারনেটে প্রায়সই তথ্য আদান প্রদানের সময় আমরা ‘ম্যাসেজ এনক্রিপটেড’ কিংবা ‘এন্ড টু এন্ড এনক্রিপশন’ লেখাটি দেখতে পাই। আমদের স্মার্টফোনে অনেকেই হয়তো এই ফিচারটি ব্যবহার করেছি। তবে এটি ঠিক কীভাবে আমাদের নিরাপত্তা দিচ্ছে – তা কি কখনও ভেবে দেখেছি?
সহজ ভাষায় ‘এনক্রিপশন’ শব্দের অর্থ তথ্যকে সুরক্ষিত করা। সাধারণত এই পদ্ধতিতে কোন অ্যাপ তার অভ্যন্তরে ম্যাসেজ কিংবা অন্য তথ্যগুলো এমনভাবে উলটপালট করে ফেলে - যা ঐ একই অ্যাপ বা তার প্রাপক ছাড়া অন্যদের কাছে দুর্বোধ্য হয়ে যায়। অর্থাৎ এটি প্রেরকের বার্তাকে নতুন এক সাংকেতিক রূপ দেয়। এই সংকেতের অর্থ নির্দিষ্ট প্রাপক ছাড়া অন্য কেউ বের করতে পারবে না।
অনেক সময় আমাদের ইন্টারনেট ব্রাউজারের তালা চিহ্নযুক্ত ওয়েবসাইটটিও একইভাবে এনক্রিপশন সুবিধা দিয়ে থাকে। অর্থাৎ ঐ ওয়েবসাইটে আদান-প্রদান করা তথ্য পুরোটাই সাংকেতিক ভাষায় হচ্ছে। তৃতীয় পক্ষ এইসব তথ্য পেয়েও গেলেও কোন কাজে লাগাতে পারবে না।
ব্যাংকের লেনদেন আর অনেক ক্ষেত্রে ইমেইলের বার্তাও এই একইভাবে কাজ করে। যার গোপন কোড ওয়েবসাইট বা অ্যাপ থেকে আমাদের ব্যবহৃত ডিভাইসটি জেনে আমাদের ভাষান্তর করে দেখায়। হ্যাকারদের কাছ থেকেও আমাদের অ্যাকাউন্টকে সুরক্ষা দেয় এনক্রিপশন ফিচারটি।
অ্যান্ড্রয়েড কিংবা আইফোনের অ্যাপগুলোতেও এই ফিচার রয়েছে। যদিও বিশ্বের অনেক দেশের নিরাপত্তা সংস্থা চাইলে তদন্ত কিংবা অপরাধ দমনের জন্য অ্যাপ কোম্পানির কাছ থেকে এসব সুরক্ষিত তথ্য চাইতে পারে। তবে এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশনের ক্ষেত্রে সেটিও সম্ভব হয় না।
এক্ষেত্রে তথ্যের গোপনীয়তার বা আপনার ব্যক্তিগত সুরক্ষা আরও একধাপ বেশি থাকে। অর্থাৎ যে গোপন কোড বা সংকেতের মাধ্যমে প্রাপকের কাছ বার্তা পৌঁছায় তা প্রেরক ছাড়া ঐ অ্যাপ কোম্পানিও জানতে পারে না। অতএব একমাত্র প্রাপকই তার কাছ পৌছানো বার্তা, ছবি কিংবা ফোন কলের মানে বুঝতে পারে।
এর ফলে কারও আড়ি পাতার কোন সুযোগই থাকে না। হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম আর বিশেষ ক্ষেত্রে ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারও একইভাবে আমাদের ব্যক্তিগত ম্যাসেজের নিরাপত্তা দিয়ে থাকে।
তথ্যসূত্র: বিবিসি ও ইন্টারনেট