করোনাভাইরাসের মহামারির প্রথম ঢেউয়ে বিমান বাংলাদেশের ফ্লাইট বন্ধ, পরে ভ্যাকসিন, বিমান টিকেটের উচ্চমূল্য, হোটেল কোয়ারেন্টাইনসহ নানা ঝক্কিঝামেলার কারণে যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের দেশে যাওয়া কমে গিয়েছিল। সম্প্রতি বাংলাদেশ লাল তালিকা থেকে বাদ পড়ায় প্রবাসীদের অনেকেই দেশে ছুটছেন।
প্রবাসীরা বলছেন, একজনের হোটেল কোয়ারেন্টাইনের যে খরচ নির্ধারণ করা হয়েছিল তা দিয়ে বিমানের আসা যাওয়ার টিকেটের দাম ও এক মাস দেশে ঘুরে আসা যেত। ফ্যামেলি নিয়ে গেলে খরচের পরিমান ও ভোগান্তি আরও বাড়ত। এজন্য প্রবাসীদের দেশা যাওয়া কমে গিয়েছিল।
লুটনের বাসিন্দা চৌধুরী রুমানা বলেন, “শিশুদের নিয়ে হোটেল কোয়ারেন্টেইনে ১০দিন থাকা ছিল চরম ভোগান্তিকর। এজন্য ইচ্ছে থাকা সত্বেও এতদিন দেশে যায়নি। এখন প্রস্তুতি নিচ্ছি দেশে যাবার।”
ব্রাডফোর্ডের বাসিন্দা আবু ছালেহ বলেন, “প্রতি বছর দেশে যেতাম, নিয়ম হয়ে গিয়েছিল। গত দুই বছর ধরে দেশে যেতে পারছি না। সব কিছু উল্টাপাল্টা হয়ে গেছে। হোটেল কোয়ারেন্টাইনের ঝক্কিঝামেলা না থাকায় ও দেশে করোনা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হওয়ায় সিদ্ধান্ত নিয়েছি কিছু দিনের মধ্যেই দেশ যাব।”
মাসুদ আহমদ নামের আরেক প্রবাসী বলেন, “ফেরার সময় যাত্রীদের হোটেল কোয়ারেন্টাইন খরচ তো এখন দিতে হবে না। যুক্তরাজ্যে যাত্রীদেরও যাওয়া-আসা বাড়বে। বিমান বাংলাদেশসহ অন্যান্য এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট সংখ্যা বাড়ানো ও টিকেটের মূল্য কমানোর দাবি আমাদের।
সিলেটে থাকা প্রবাসী শাহ আলী বলেন, “যুক্তরাজ্যের লাল তালিকা থেকে বাংলাদেশের নাম বাদ পড়ায় হোটেল কোয়ারেন্টাইনের ঝামেলা থেকে ফাইনালি মুক্তি পেয়েছি। এখন লন্ডন যাওয়ার সময় এসেছে।”
করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে যুক্তরাজ্য সরকার বাংলাদেশসহ লাল তালিকাভুক্ত দেশগুলোর নাগরিকদের জন্য ১০দিনের হোটেল কোয়ারন্টাইন খরচ ১৭৫০পাউন্ড নির্ধারণ করে। পরে তা আবার বাড়িয়ে ২২৮৫পাউন্ড করা হয়। চলতি মাসের ১৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশকে লাল তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার ঘোষণা দেয় যুক্তরাজ্য। ২২ সেপ্টেম্বর থেকে যা কার্যকর হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের ট্রাভেলস লিংকের স্বত্বাধিকারী সামী সানাউল্লাহ বলেন, “বাংলাদেশ লাল তালিকা থেকে বের হওয়ায় প্রচুর ফোন পাচ্ছি। কাস্টমাররা টিকেটের দরদাম জানতে চাচ্ছেন। বিদেশী এয়ারলাইন্সের টিকিট ঢাকা পর্যন্ত ৫০০পাউন্ড ও সিলেট পর্যন্ত বিমানের টিকিট ৭০০\৮০০ পাউন্ডে পাওয়া যাচ্ছে। সিলেট-লন্ডন রুটে বর্তমানে সপ্তাহে একটি চালু থাকলেও অক্টোবর থেকে বিমান বাংলাদেশ ৪টা ফ্লাইট চালু হবে।”