সেই ১৯৪৭ সালে গান্ধী বলেছিলেন, ভারত ভাগ হবে আমার লাশের ওপর দিয়ে। আর জিন্নাহ বলেছিলেন, কীটদুষ্ট পাকিস্তান প্রস্তাব আমি মেনে নেব না। জওহরলাল নেহেরু, মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী এবং সরদার ভল্লভভাই প্যাটেলসহ কংগ্রেস নেতৃত্ব একজাতির দেশ দাবি করেছিলেন। তৎকালীন মুসলিম লীগ নেতা মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ তখন বলেছিলেন, হিন্দু মুসলিমদের একই জাতীয় পরিচয়ে পরিচিত করা একটা স্বপ্ন মাত্র। দেশভাগ হলে ভারত থেকে প্রায় ২০ লাখ মুসলমান তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তানে আসেন। অন্যদিকে, পূর্ববঙ্গ থেকে ৫৮ লাখ হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক ভারতে দেশান্তরী হন। বেসরকারি হিসেবে এ সংখ্যা আরও বেশি। বিশেষ করে তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তান থেকে এই দেশান্তরী হওয়া ছিল বিরামহীন। পাকিস্তান আমলে মুসলিম লীগের উগ্রবাদী ও সাম্প্রদায়িক ভেদবুদ্ধির কুশীলবরা সংখ্যালঘু অনেককেই ভয়-আতঙ্ক দেখিয়ে দেশত্যাগে বাধ্য করেছে। যে সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প থেকে আজও মুক্ত হয়নি এই উপমহাদেশ। মুসলিম লীগ চেনাল মুসলিম, হিন্দু—শ্যামাপ্রাসাদরা।
জিন্নাহ তখন দ্বিজাতি তত্ত্ব দিয়েছিলেন। এর আগে ১৯৪০ সালে তিনি লাহোরে এক বক্তৃতায় ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলমানদের জন্য পৃথক রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছিলেন। জাতি নিয়ে সমস্যার মীমাংসা না হওয়ার বিষয়টি ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাজনের বড় কারণ বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক এবং অ্যামিরেটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, “ব্রিটিশ শাসকেরা আগে থেকেই সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে ভারতের বিভাজন চেয়েছিল। দ্বিতীয়ত, ভারতবর্ষে তখনকার প্রধান দুটি দল কংগ্রেস এবং মুসলিম লীগ জাতি সমস্যার সমাধান করতে চায়নি বা তাদের দৃষ্টিতে এটা ছিল না।” তিনি আরও বলেন, এক জাতির দেশ দাবি করার ভেতরেই লুকিয়ে ছিল ১৯৪৭ এর ধর্মভিত্তিক বিভাজনের বীজ।
সে সময় ভারতে ভাষাভিত্তিক ১৭টি জাতি ছিল। কিন্তু কংগ্রেস ভারতে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীকে এক জাতি বলেছে। আর মুসলিম লীগ বলেছে দুই জাতি। জাতি সমস্যার মীমাংসা করতে না পারার পেছনে বড় কারণ ধর্মীয় সম্প্রদায়কে এক করে ফেলা হয়েছিল। কংগ্রেসে শিল্পপতি-ব্যবসায়ীদের স্বার্থ ছিল। মুসলিম লীগে উঠতি শিল্পপতি-ব্যবসায়ীরাও তাদের স্বার্থে তারাও চাচ্ছিল না যে ভারত একসাথে থাকুক। জিন্নাহর আদর্শই এখনও পাকিস্তানের ভিত্তি। ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ ভাগের আগে দেশটিতে হিন্দু ও মুসলমান সম্প্রদায় একসঙ্গেই বসবাস করেছে। কিন্তু জিন্নাহ বলেছিলেন এই দুই সম্প্রদায় ভিন্ন। জিন্নাহ বলেছিলেন, “হিন্দু ও মুসলিমদের একই জাতীয় পরিচয়ে পরিচিত করা একটা স্বপ্ন মাত্র। হিন্দু ও মুসলমানের ধর্মীয় দর্শন আলাদা, তাদের সামাজিক আচার আচরণ, সাহিত্য ও সংস্কৃতি ভিন্ন। এই দুই ধর্মের মধ্যে বিয়ে হয় না, তারা একত্রে খায় না। তারা আলাদা সভ্যতার অংশ যে সভ্যতার মতাদর্শ ও ধ্যানধারণা ভিন্ন।
পাকিস্তানই প্রথম রাষ্ট্র যেটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ধর্মের ভিত্তিতে, একই জাতিসত্তা ও ভাষার ভিত্তিতে নয়। কিন্তু একইসঙ্গে এটি ধর্মতান্ত্রিক (থিওক্র্যাটিক) রাষ্ট্র নয়। কংগ্রেস পার্টি তার দলের ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধ সম্পর্কে নিশ্চয়তা দিলেও বহু মুসলমান এ ব্যাপারে সন্দিহান ছিলেন এবং তাদের আশঙ্কা ছিল সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুরা তাদের একঘরে করে রাখবে। কংগ্রেসের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে আস্থা হারানোর আগে পর্যন্ত জিন্নাহ নিজে হিন্দু-মুসলিম ঐক্যে বিশ্বাসী ছিলেন বলে তার বিশ্লেষণে লিখছেন বিবিসির সিকান্দার কিরমানি। জিন্নাহ দ্বি-জাতি তত্ত্বের প্রথম প্রবক্তা শুধু ছিলেন না, পাকিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর তিনি এই তত্ত্বকে রাজনৈতিক বাস্তবতায় রূপান্তরিত করেছিলেন। এই তত্ত্ব এখন পাকিস্তানে প্রত্যেক স্কুল শিক্ষার্থীকে পড়ানো হয়। এ কারণেই পাকিস্তানের বহু মানুষ উপমহাদেশের স্বাধীনতাকে দেখেন ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে নয়, বরং ভারতের কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্জন হিসেবে। এরপরেও আসল কথাটি হলো গান্ধি আর জিন্নাহ ভারতকে সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে ভাগ করেছিলেন। এই ভাগে অনেকেই প্রথমে মোহগ্রস্ত ছিলেন, আলাদা সম্প্রদায়ের জন্য রাষ্ট্রের কথা ভেবে। কিন্তু ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন এবং ছাত্র মিছিলে গুলি করে ছাত্র হত্যার পরে মানুষের মোহভঙ্গ হয়।
পাকিস্তানের শাসন-ত্রাসনে অল্প দিনেই বাংলার মানুষ বুঝতে পারে এক সঙ্গে আর থাকা সম্ভব নয়। তারপরে রাজনীতির ইতিহাস সবার জানা। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে জন্ম নিলো বাংলাদেশ নামের স্বাধীন একটি রাষ্ট্র। বিনিময়ে দিতে হলো ৩০ লাখ মানুষের রক্ত ও ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রম। নয় মাসের আতংকিত প্রহর বেষ্টিত রাত্রির বর্ণনা শুনলে শিহরে উঠতে হয়। কি ভয়াবহ নির্যাতন করা হয়েছে বাঙালিদের ওপর। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কাল রাত্রিরে যে গণহত্যা শুরু হয়, তা চলেছে ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী হত্যার পরেও। ১৬ ডিসেম্বর আমাদের বিজয় দিবস। এই বিজয় আনতে যাদের আত্মদানের কাছে আমরা ঋণী তাদের সালাম জানাই। এখনও যেসব মুক্তিযোদ্ধা, ভাষা সংগ্রামী যারা জীবিত আছেন তাদের জন্যও জানাই বিপ্লবী অভিনন্দন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এগিয়ে চলবে দেশ, দেশের মানুষ—এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
কিন্তু সংকটের কথা হলো কোটাবিরোধী আন্দোলন আমাদের দেশে সংঘটিত হয় গত জুলাই থেকে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক দফা দাবির মধ্য দিয়ে দেড় যুগের শাসনের অবসান ঘটে শেখ হাসিনা সরকারের। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তিনি দেশ ত্যাগ করেন ৫ আগস্ট। আন্দোলনের সেই দিন যারা প্রত্যক্ষ করেছেন তাদের মনে থাকবে একটি অভ্যুত্থানের কথা। এই অভ্যুত্থানের তিনদিন পর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয় নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে। ড. ইউনূসের নেতৃত্বে সরকার একমাসের বেশি সময় ধরে সংস্কারের কাজে ব্যাপৃত আছে। এই অভ্যুত্থান পরবর্তী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার কর্মসূচিতে মানুষ বুক বেঁধে আছে। সত্যি সত্যি সংস্কার হচ্ছে। দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাঁধন দৃঢ় হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এগিয়ে যাবে দেশ। ইতিমধ্যে সংস্কারের কাজ এগিয়েছে অনেকদূর। মানুষের আস্থার জায়গাটা ফলবতী হতে শুরু করেছে। কিন্তু এরই মধ্যে জাতীয় সংগীত বদলের দাবি তুলেছেন একজন। এটা নতুন দাবি নয়। এ দাবি ইতিপূর্বেও উঠেছে। ২০০২ সালের ১৯ মার্চ তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী এবং সমাজকল্যাণমন্ত্রী আলী আহসান মুজাহিদ জাতীয় সংগীত পরিবর্তনের লক্ষ্যে একটি যৌথ সুপারিশপত্র প্রধানমন্ত্রীর কাছে জমা দেন। স্বাক্ষরিত ওই চিঠিটি বেগম খালেদা জিয়া সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে পাঠান। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী খুরশীদ জাহান হক বিষয়টি ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ’ বলে সচিবের কাছে পাঠান। জাতীয় সংগীত পরিবর্তন এখতিয়ার বহির্ভূত বিষয় বলে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব তা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠান। একই বছরের ১৯ আগস্ট প্রস্তাবটি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। কিন্তু সেই সরকারের আমলে প্রস্তাবটি হালে পানি পায়নি। হঠাৎ করে জাতীয় সংগীত কেন বদলাতে হবে, আমাদের বোধগম্য নয়। রাষ্ট্র সংস্কার চলা মানে কি জাতীয় সংগীত, সংবিধান বদলে ফেলা? এই বিদ্বেষ কি রবীন্দ্রনাথের ওপর, না তার গানের ওপর। একজন কবির গান কবিতা বা রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে এত রাজনীতি কেন, আমরা জানি না। ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ গানটি হঠাৎ করে জাতীয় সংগীত হয়নি। মুক্তিসংগ্রামের ব্রত নিয়ে সংগঠিত ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ’৭১-এর ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইকবাল হলের ক্যান্টিনে জাতীয় সংগীত সংক্রান্ত আলোচনায় সর্বসম্মতিক্রমে গানটিকে জাতীয় সংগীত হিসেবে নির্ধারণের প্রস্তাব গ্রহণ করে। জাতীয় নেতারা বিষয়টিতে সম্মতি দিলে ঢাকায় ৩ মার্চ অনুষ্ঠিত প্রতিবাদী জনসভায় এবং ৭ মার্চ রেসকোর্সের ঐতিহাসিক জনসভায় গানটি গীত হয়। ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের সূচনা হয় জাতীয় সংগীত বাজিয়ে। সেদিন থেকে গানটি বাঙালির আত্মপরিচয়ের মূলমন্ত্র।
অনেকে দাবি তুলেছেন, এ গানে দেশের কথা নেই। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের জাতীয় সংগীত একটু ঘাঁটলে দেখা যাবে অনেক দেশের জাতীয় সংগীতে দেশের নাম নেই। মালয়েশিয়া, ইরান, সৌদি আরব, ইউএসএ, ইউকেসহ আরও অনেক দেশের জাতীয় সংগীতে দেশের নাম নেই। অতএব নাম না থাকাটা কোনো ব্যতিক্রম কিছু নয়। আমাদের জাতীয় সংগীতে ‘বাংলা’ শব্দটি বিদ্যমান। এ ছাড়াও আবার রবীন্দ্রনাথ যে সময় মারা যান সে সময় আলাদা রাষ্ট্র হিসেবে ভারত, পাকিস্তান বা বাংলাদেশের জন্মই হয়নি। তার গান নিয়ে এত রাজনীতি কেন,
কারা এটা করে সেটাও দেখার বিষয়।
আরেকটি বিষয়ের অবতারণা করতেই হয়। গত ১১ সেপ্টেম্বর বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের তোফাজ্জল হোসেনে মানিক মিয়া হলে পাকিস্তানের জাতির পিতা মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর ৭৬তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়। সেখানে বক্তারা বলেছেন, পাকিস্তানের জাতির পিতা মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ না হলে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের সৃষ্টি হতো না। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের সময় পাকিস্তান রাষ্ট্রের সৃষ্টি পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান ছিল তার। পরবর্তীতে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের একটি অংশ (পূর্ব পাকিস্তান) ভাগ হয়ে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়। যদি জিন্নাহ তখন এই অঞ্চলকে (পূর্ব পাকিস্তান) পশ্চিম পাকিস্তানের সঙ্গে না নিতেন তবে আজ বাংলাদেশ সৃষ্টি হতো না। নওয়াব সলিমুল্লাহ একাডেমি আয়োজিত সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান। সেখানে আরও বলা হয়, ১৯৭১ সালে ভারত এ দেশকে দু-ভাগ করে দিয়েছে। আরেক বক্তা নজরুল ইসলাম বলেন, “যেকোনো ভাবেই হোক আমরা স্বাধীন হয়েছি। আমাদের পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করতে হবে। মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ না থাকলে পাকিস্তান সৃষ্টি হতো না, আর পাকিস্তান না থাকলে বাংলাদেশের সৃষ্টি হতো না। মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ আমাদের জাতির পিতা, কিন্তু সেটা আমরা স্বীকার করি না। কিন্তু আমাদের ভ্রাতৃত্ব রক্ষা করতে হবে। আর আমি আশা করি, মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর জন্মবার্ষিকী ও মৃত্যুবার্ষিকী প্রতিবছর এখানে (বাংলাদেশ) পালিত হবে।”
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ৩০ লক্ষ মানুষের আত্মদান ২ লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে এরা বলছে ভারত ভাগ করে দিয়েছে। পাকিস্তানিদের ৯ মাসের বীভৎসতাকে, মুক্তিযুদ্ধকে পুরো অস্বীকার করা ছাড়া এটা আর কিছু নয়। কারণ ১৯৭১ সালের পরে তাদের কৃতকর্মের জন্য যে জাতি ক্ষমা পর্যন্ত চায়নি তাদের জাতির পিতার মৃত্যুবার্ষিকী কীভাবে জাতীয় প্রেস ক্লাবে পালন করা হয় এটা মোটেও বোধগম্য নয়।
বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত বদল, জিন্নাহর মৃত্যুবার্ষিকী পালন, মাজারে গান নিষিদ্ধ করা ,বাউল শিল্পীদের নির্যাতনকারীরা এক সুতোয় বাঁধা। মানে ধারাবাহিকভাবে স্বাধীনতাবিরোধী একটি গোষ্ঠী ঘোলা জলে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যে পরিবর্তন সূচিত হয়েছে, সেখানে জায়গা করতে চাচ্ছে স্বাধীনতাবিরোধী একটি চিহ্নিত গোষ্ঠী। যারা দেশের মাজারের রীতি রেওয়াজ বন্ধ করতে চায়। এরাই ২০২২ সালের জানুয়ারিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কাওয়ালি সংগীত অনুষ্ঠান পণ্ড করেছিলো। বাউল সংগীতশিল্পী ও আখড়া তাদের হামলার লক্ষবস্তু। এসবের পুনরাবৃত্তি বন্ধ করা জরুরি। বাংলাদেশ আউল, বাউল কবিদের দেশ। সব মত চিন্তা প্রকাশের দেশ। এখানে কাওয়ালি হবে, কীর্তন হবে, গণসংগীত, রবীন্দ্র-নজরুল সংগীত, জারি-সারি, লালন-হাছন রাজার গান সবকিছু চলবে। মুক্তিযুদ্ধের বাংলায় মৌলবাদ রুখে দিতে হবে।
লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট