বাংলাদেশের মানুষ যতটা যেখানে সেখানে ময়লা ফেলে ততটা ডাস্টবিনে ফেলে না। আসলে ডাস্টবিনে ময়লা ফেলতে চাইলেও, রাস্তায় আগে ডাস্টবিনই পাওয়া যেতো না। প্রথম দিকে তো রাস্তায় ডাস্টবিন দেওয়া হলেও সেই ডাস্টবিনই উধাও (চুরি শব্দটা বলতে চাই না) হয়ে গিয়েছিলো রাতের আঁধারে। এটাই বাংলাদেশের বাস্তবতা! ইদানীং রাস্তার ডাস্টবিনগুলো কেউ কেউ ব্যবহার করেন, কিন্তু বেশিরভাগ মানুষই সচেতন নন। আবার ডাস্টবিন ব্যবহার করলেও সব ধরনের ময়লা এখনো আমরা একই জায়গায় ফেলি। এর ফলে অনেক রিইউজ, রিসাইকেল করার জিনিস থাকলেও তা আর করা সম্ভব হয় না।
একটা আইডিয়া শেয়ার করছি—
তিন ধরনের ডাস্টবিন থাকবে, যেগুলো তিন ধরনের রং দিয়ে আলাদা করে চিহ্নিত করা থাকবে। যেন রং দেখে সহজে চেনা যায়, কোন ডাস্টবিনে কী ফেলতে হবে।
১ নম্বর ডাস্টবিন—এতে শুধু পচনশীল দ্রব্য, যেমন রান্নাঘরের তরকারি, ফলমূল, মাছ মাংসের আবর্জনা ফেলা হবে। এগুলো পরে কম্পোস্ট সার বা বায়োগ্যাস তৈরিতে কাজে লাগানো যাবে৷
২ নম্বর ডাস্টবিন—অপচনশীল দ্রব্য, যেমন প্লাস্টিক, কাঁচ এ ধরনের আবর্জনা। যা পরে রিসাইকেল করা যেতে পারে। চাইলে incineration পদ্ধতিতে শক্তিও উৎপাদন করা সম্ভব।
৩ নম্বর ডাস্টবিন—ধাতব আবর্জনা, এগুলোও রিসাইকেল করা সম্ভব। বিভিন্ন ধরনের পিন, ব্লেড, ধারালো জিনিস সাধারণ ডাস্টবিনে ফেলা হলে, সেখানে খাবার খুঁজতে গিয়ে কুকুর বিড়াল আহত হয়।
আমাদের আছে শিল্পকারখানা জাত, হাসপাতালের আবর্জনা, রাসায়নিক বর্জ্য ইত্যাদি নানান ধরনের আবর্জনা। সেগুলো নিয়েও ভাবতে হবে। স্মার্ট বাংলাদেশের পরিবেশও তো সুন্দর ও নিরাপদ হওয়া চাই। এর মধ্যেই বাংলাদেশের প্রথম স্মার্ট ডাস্টবিন চালু হয়ে গেছে, যার দরজা স্বয়ংক্রিয়ভাবে খোলে, বন্ধ হয়, চারপাশে কোন ময়লা বা গন্ধ থাকে না। যদিও জানি না শেষ পর্যন্ত এটি কতখানি কার্যকর হবে। তাছাড়া এই স্মার্ট ডাস্টবিন কি পারবে বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য আলাদা করে সেগুলোকে রিইউজ বা রিসাইকেল করে কাজে লাগাতে?
মঙ্গলবার ছিল স্মার্ট বাংলাদেশ দিবস। স্মার্ট বাংলাদেশ বলতে আমরা যেন শুধু ডিভাইস নির্ভরতা না বুঝি। স্মার্ট আরও ব্যাপক একটি শব্দ।
লেখক : শিক্ষক